পত্রিকা ডেস্ক, লণ্ডন, ২৬ সেপ্টেম্বর: বিভিন্ন জরিপে আগেই ধারণা দেয়া হয়েছিলো ইতালির এবারের নির্বাচনে ডানপন্থীরা অভাবনীয় ভালো ফলাফল করতে যাচ্ছে। এখন প্রকাশিত আংশিক ফলাফলে জরিপের মিল পাওয়া গেছে। দেখা যাচ্ছে, ডানপন্থী জোট পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে পোক্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে। এর মধ্যদিয়ে ইতালি প্রথমবারের মত নারী প্রধানমন্ত্রী পেতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনের ফলাফল দেশটিতে গত কয়েক বছরের রাজনৈতিক ুু ১৪ অস্থিরতার অবসান ঘটাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে ডানপন্থীদের জয় ইউরোপিয় ইউনিয়ন এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই নির্বাচনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। কারণ, জনমত জরিপ অনুযায়ী এই নির্বাচনে জয় পেতে পারে ডানপন্থীরা। তাঁদের বিজয়ে দেশটি রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়বে। ভøাদিমির পুতিন ২০১৮ সালে চতুর্থ মেয়াদে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ওই সময় পুতিনকে অভিনন্দন জানাতে ইতালির কয়েকজন ডানপন্থী নেতাকে রীতিমতো তাড়াহুড়া করতে দেখা যায়। ব্রাদার্স অব ইতালি দলের প্রধান জর্জিয়া মেলোনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘রাশিয়ার এই নির্বাচন জনগণের ইচ্ছার দ্ব্যর্থহীন প্রতিফলন।’ মেলোনির সেই মন্তব্য সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ফের সামনে এসেছে। কারণ, মারিও দ্রাঘির সরকার ভেঙে যাওয়ার পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মেলোনি প্রভাবশালী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। এখন এই নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে মেলোনি ইতালির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। এই নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেতে পারে মেলোনির নেতৃত্বাধীন ব্রাদার্স অব ইতালি। মাত্তেও সালভিনির লিগ এবং সিলভিও বেরলুসকোনির ফোরজা ইতালিয়াকে নিয়ে ডানপন্থী সরকার গঠন করতে পারে দলটি। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা বন্ধে সামর্থ্যের সবকিছুই করে যাচ্ছে ইউরোপ। ঠিক সেই সময়ে রাশিয?ার সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এমন দলগুলোর সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা রোম মস্কোর ঘনিষ্ঠ হতে পারে এমন আশঙ্কা বাড়িয়েছে। ২৬ সেপ্টেম্বর সোমবার লণ্ডন সময় দুপুর নাগাদ অর্ধেক ভোট গণনার পর দেখা যায়, মেলোনির ব্রাদার্স অব ইতালি প্রায় ২৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে। দলটি ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে মাত্র ৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। দেশের বহু সমস্যার সমাধানে নতুন একজনকে বেছে নিয়েছেন ভোটাররা। অবশ্য মেলোনির মিত্র মাত্তেও সালভিনির লিগ নির্বাচনে বাজে ফলাফল করেছে। দলটি প্রায় ৯ শতাংশ ভোট পেয়েছে। চার বছর আগের নির্বাচনে দলটি ভোট পেয়েছিল ১৯ শতাংশের মতো। সালভিনির উত্তরের প্রথাগত ভোটব্যাংক বাগিয়ে নিয়েছেন মেলোনি। অন্য গুরুত্বপূর্ণ রক্ষণশীল দলগুলোর মধ্যে সিলভিও বেরলুসকোনির ফোরজা ইতালিয়া পেয়েছে ৮ শতাংশ ভোট। এতে শরিক হিসেবে জোটে অবস্থান পোক্ত হয়েছে ব্রাদার্স অব ইতালির। অন্যদিকে ক্ষমতা থেকে সদ্যবিদায়ী মধ্য-বাম ডেমোক্রেটিক পার্টি পেয়েছে প্রায় ১৯ শতাংশ ভোট। নিরপেক্ষ ফাইভ স্টার মুভমেন্ট পেয়েছে ১৬ শতাংশ ভোট। মধ্যপন্থী অ্যাকশন গ্রুপ ৭ শতাংশের কিছুটা বেশি ভোট পেয়েছে। মেলোনির জোট পার্লামেন্টের উচ্চ ও নিম্নকক্ষ দুটিতেই পর্যাপ্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে বলে আভাস মিলছে। তবে কয়েকটি ইস্যুতে জোটের শরিকদের ভিন্ন অবস্থানের কারণে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা কঠিন হবে। মেলোনি ও তাঁর জোটকে চ্যালেঞ্জের এক জটিল তালিকার মুখোমুখি হতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে জ্বালানি মূল্যের উল্লম্ফন, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইউরো জোনের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে নতুন করে দেখা দেওয়া মন্দা। স্থানীয় সময় সোমবার সকালে দলের উচ্ছ্সিত সমর্থকদের উদ্দেশে ৪৫ বছর বয়সী মেলোনি বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে যে আমরা শেষ বিন্দুতে নেই, আমরা সূচনা বিন্দুতে আছি। আগামীকাল থেকে আমাদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে।’ পরাজিত ডেমোক্রেটিক পার্টির জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা দেবোরা সেরাচিয়ানি বলেন, এটি দেশের জন্য একটি দুঃখজনক সন্ধ্যা। অবশ্য ডানপন্থীদের সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও দেশে কিন্তু নেই।
আমাদের রাজনৈতিক আন্দোলনে ভাসানী এখনো প্রাসঙ্গিক
গাজীউল হাসান খান ♦ সামন্তবাদী কিংবা পুঁজিবাদী, আধিপত্যবাদী কিংবা উপনিবেশবাদী— যেখানেই যেকোনো ধরনের অপশাসন ও শোষণ দেখেছেন, সেখানেই প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে গর্জে উঠেছেন আজন্ম সংগ্রামী মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। খোলা তরবারির মতো ঝলসে উঠেছে তাঁর দুটি হাত। কণ্ঠে উচ্চারিত...