আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

“শুরুর দিকে কোনো সিভিডির লক্ষণ সবসময় না-ও থাকতে পারে। আর বয়স বাড়ার সাথে সাথে সিভিডি-আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় এবং জাতিগতভাবে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে এটি বেশি হতে পারে। তাই আমাদের ঝুঁকি কমানোর জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা করা উচিত ।”

আখতার নাসিম
কনসালট্যান্ট ভাসকুলার সার্জন ও ক্লিনিক্যাল ডিরেক্টর, শেফিল্ড

আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

“আপনি যদি কৃষ্ণাঙ্গ বা এশীয় জাতিগত সম্প্রদায়ের সদস্য হন তবে আপনার উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেশি এবং এটি তুলনামূলক কম বয়সে হতে পারে। জিপি সার্জারি ও বেশিরভাগ ফার্মেসিতে গিয়ে রক্তচাপ জেনে নিতে পারেন অথবা ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মেশিন কিনে নিজেই রক্তচাপ পরীক্ষা করতে পারেন।”

ডা. ক্রিস অলুকান্নি
জিপি এবং কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, এসেক্স

আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

“আপনি যদি কৃষ্ণাঙ্গ বা এশীয় জাতিগত সম্প্রদায়ের সদস্য হন তবে আপনার উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেশি এবং এটি তুলনামূলক কম বয়সে হতে পারে। জিপি সার্জারি ও বেশিরভাগ ফার্মেসিতে গিয়ে রক্তচাপ জেনে নিতে পারেন অথবা ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মেশিন কিনে নিজেই রক্তচাপ পরীক্ষা করতে পারেন।”

রণজিৎ সিং
‘ট্রিপল বাইপাস সার্জারি’র পর এখন সুস্থ জীবনযাপন করছেন
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

খোলা প্রান্তর

প্রসঙ্গ: জলবায়ু পরিবর্তন 

১০ নভেম্বর ২০২২ ৭:৫০ অপরাহ্ণ | খোলা প্রান্তর

সাগর রহমান 

মেয়েটির নাম লুইস হ্যারিস। বয়স উনত্রিশ বছর। বাড়ি ইংল্যাণ্ডের ব্রাডফোর্ডশায়ারে। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট। নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে লুইস নিজেকে একজন পপ গায়িকা ও গীতিকার হিসেবে উল্লেখ করে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের পোস্ট করা একটি ভিডিওতে লুইস কাঁদতে কাঁদতে বলছিল, “ওরা (সরকার) আমার মতো তরুণ-তরুণীদের সাথে প্রতারণা করছে। আমাদের তো ভবিষ্যত বলে কিছু নেই। কেন আমার মতো তরুণ-তরুণীদের এম-২৫-এর পথে বাধা হয়ে তবে সরকারকে কথা শোনাতে হবে?” লুইস একজন পরিবেশবাদী কর্মী, জাস্ট স্টপ ওয়েল সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। গত সোমবার, ৭ নভেম্বর, সে তার সংগঠনের আরো অন্যান্য কর্মীদের সাথে সংঘবদ্ধ হয়ে ইংল্যাণ্ডের অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়ক এম-২৫-এর নেমে পড়ে। সড়কের মাঝখানে বিভিন্ন সংযোগের উঁচু পোস্টে উঠে শ্লোগান দিতে শুরু করে, এবং রাস্তা আটকে প্রতিবাদ জানাতে থাকে। এর ফলে পুরো সড়কের যান চলাচল বেশ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। দুইপাশে শত শত গাড়ি জ্যামে আটকা পড়ে। এমনিতেই সবসময় প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকা এই মহাসড়কটি সোমবার কাজের দিন সকালে আরো ব্যস্ততর হয়ে ওঠে। এর প্রভাব পড়ে আশেপাশের অন্যান্য সড়কেও। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে যায়। কিন্তু উঁচু পোস্টের সাথে নিজেকে আষ্টে-পৃষ্ঠে আটকে রাখা এই প্রতিবাদী মানুষগুলোকে সরাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় তাদের। রীতিমত টানা-হেঁচড়া করে, কোলে তুলে, ধরাধরি করে শেষপর্যন্ত পুলিশ ওদেরকে রাস্তা থেকে সরিয়ে নিজেদের ভ্যানে উঠায়। এবং চারপাশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তবেই সড়কটি যান চলাচলের জন্য পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় পুলিশ মোট তেইশজনকে আটক করে। লুইস হ্যারিস ছিল তাদের একজন। ‘জাস্ট স্টপ ওয়েল’ সংগঠনটির এই ব্যতিক্রমী প্রতিবাদকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘সুস্পষ্ট ক্রাইম’ বলে চি?িত করেছে। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ ধরনের প্রতিবাদকারীদেরকে কঠোর হাতে দমন করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। গত কিছুদিন ধরে চলতে থাকা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য মেট পুলিশ এ পর্যন্ত (গত বত্রিশ দিনে) সাতশত জন পরিবেশবাদী কর্মীকে আটক করেছে, যাদের মধ্যে অন্তত একশত এগারোজনের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ এনে চার্জশীট দেওয়া হয়েছে। সোমবারের ব্যস্ততম সকালে নানান কাজে ছুটতে থাকা মানুষজনের সময় নষ্ট করার জন্য পরবর্তীতে লুইস সোশ্যাল মিডিয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে যে ভিডিও পোস্ট করে, তাতে সে আরো বলে, “আমার কর্মকাণ্ডের জন্য, আমি জানি, আপনারা হয়তো আমাকে ঘৃণা করছেন। এবং স্বীকার করি, ঘৃণা করার সম্পূর্ণ অধিকার আছে আপনাদের। তবে আমার প্রার্থনা, আপনাদের এই ঘৃণা এবং রাগগুলো আমাদের ক্ষমতাশীল সরকারের প্রতি পরিচালিত করে দিন।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জাস্ট স্টপ ওয়েল সংগঠনটি একটি পরিবেশবাদী সংগঠন। এ সংগঠনটি বহুদিন ধরেই সরকারের কাছে দাবী জানিয়ে আসছে যাতে নতুন করে জীবাশ্ম জ্বালানি উত্তোলন করার জন্য সরকার আর কাউকে কোনপ্রকার লাইসেন্স প্রদান করা থেকে বিরত থাকে। কিন্তু তাদের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ ও প্রতিবাদের স্বপক্ষে কোন সরকারি আশ্বাস না পেয়ে সংগঠনটি গত মাস কয়েক ধরে নানা ধরনের কর্মকাণ্ড করে নিজেদের বক্তব্যকে সরকার ও সাধারণ জনগণের চোখের সামনে আনার পথ বেছে নিয়েছে। গত মাসে, তেরো অক্টোবরে, লণ্ডনের ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারিতে ঢুকে, গ্যালারির তেতাল্লিশ নম্বর কক্ষে রাখা অন্যতম বিখ্যাত চিত্র – ভিনসেন্ট ভ্যান গঁগের ছবিতে (সানফ্লাওয়ার) টমেটোর স্যুপ ছুঁড়ে মেরেছিল। এই কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল জাস্ট স্টপ ওয়েল সংগঠনের দুজন কর্মী, একজন ছেলে এবং একজন মেয়ে। দুইজনই বয়সে অত্যন্ত তরুণ (বয়স বিশ ও বাইশ বছর)। ভ্যান গঁগের ছবিতে স্যুপ ছুঁড়ে মেরে ওরা পালিয়ে যায়নি। বরং ছবির পাশেই, দেয়ালের সাথে দাঁড়িয়ে থেকে, নিজেদের জ্যাকেট খুলে ভেতরে পরিহিত সংগঠনের টি-শার্টটি সবাইকে দেখায়, এবং চিৎকার করে বলতে থাকে, “জীবন না শিল্প – কোনটার মূল্য বেশি? খাবারের চেয়েও কি ছবির মূল্য বেশি? ন্যায়বিচারের চেয়েও? পৃথিবী এবং পৃথিবীর মানুষের নিরাপত্তার চেয়েও কি একটি ছবিকে রক্ষা করার দিকে তোমাদের মনোযোগ বেশি?” ছুঁড়ে মারার বস্তু হিসেবে স্যুপ বেছে নেবার কারণটিও উঠে আসে ওদের কথায়: “জীবনধারণের জন্য যে উচ্চমূল্য, তা আসলে জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্যেরই একটি অংশ। লক্ষ লক্ষ পরিবারের জন্য জ্বালানি ক্রয় করা সক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এ পরিবারগুলো এমনকি এক টিন স্যুপ গরম করে খাবে – সেটুকু সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে।” পুলিশ এবং নিরাপত্তকর্মীরা এসে তাদেরকে আটক করে নিয়ে যাবার আগ পর্যন্ত দুই পরিবেশকর্মী চিৎকার করে এসব কথা বলেই যাচ্ছিল। এমন ধরনের প্রতিবাদের ঘটনা ইদানীং যুক্তরাজ্যে প্রতিদিনই ঘটছে। জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের বিপদ সম্পর্কে, এর অবশ্যম্ভাবী ফলাফল হিসেবে পৃথিবীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে যাওয়া ভয়াবহতা সম্পর্কে জনগণ এবং সরকারকে অবহিত করার জন্য প্রায় দিনই তারা কোনো না কোনো অভিনব উপায় বেছে নিচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডে জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা খানিকটা ব্যাহত হলেও, আসলে একটু ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করলে যে কোনো চিন্তাশীল মানুষই এ সংগঠনটির দাবীগুলোকে সমর্থন না করে পারবে না। বর্তমান পৃথিবীর সামনে সবচেয়ে ভয়াবহ যে দুশ্চিন্তা এবং চ্যালেঞ্জ, তা নিঃসন্দেহে পরিবেশ দূষণ। গত কয়েক দশক ধরেই পরিবেশ বিজ্ঞানীরা যেসব বিপদের সতর্কবার্তা দিয়ে আসছিলেন, তা এখন চোখের সামনে দেখা দিতে শুরু করেছে। একটু চোখ-কান খোলা রাখলে, বর্তমান পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশে আর্বিভূত হওয়া বিরূপ আবহাওয়ার একটু খোঁজখবর রাখলে যে কেউই একমত হবেন যে, পুরো পৃথিবীটা খুব দ্রুত গতিতে একটি ভয়াবহ পরিবেশগত বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হওয়া জাতিসংঘের আয়োজিত সাতাশতম জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিশ্বনেতাদের বৈঠকে (কপ-২৭) জাতিসংঘের মহাসচিব এন্টনিও গুতারেসের বাণীটি বিশেষ প্রণিধানযোগ্য: “… আমাদের গ্রহটি জলবায়ু বিপর্যয়ের নরকের দিকে সাঁই সাঁই করে এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা সবাই এর এক্সিলাটরে পা দাবিয়ে দিয়ে বসে আছি…”। কয়েকটা পরিসংখ্যান দেয়া যাক। মাত্র দুইশ বছর আগেও পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল এক বিলিয়ন। এই এক বিলিয়নে পৌঁছতে মানবজাতির সময় লেগেছে প্রায় দুইশ হাজার বছর। অথচ এর পরের দুইশ বছরে এই সংখ্যাটি বেড়ে বর্তমান জনসংখ্যা – ৭.৮ বিলিয়নে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। জনসংখ্যার এই যে ভয়াবহ উলম্ফন, এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে পৃথিবী নামক গ্রহের সবকিছুর উপরে। বর্তমান পৃথিবীতে প্রতিটি মিনিটে অন্তত দুই হাজার গাছ কাটা হয়, অর্থাৎ প্রতি মিনিটে মোটামুটি একটি ফুটবল স্টেডিয়ামের সমান বন স্রেফ উজাড় হয়ে যাচ্ছে। এই বন কেটে ফেলার অন্তত আশি শতাংশ করা হয় খাবারের জন্য লালনপালন করা প্রাণীদের জন্য। পৃথিবীর ৭.৮ বিলিয়ন মানুষের বিপরীতে, খাবার হিসেবে মাংসের চাহিদা মেটানোর জন্য লালন-পালন করা হচ্ছে প্রায় ২০ বিলিয়ন প্রাণী (গরু, ছাগল, ভেড়া, শূকর ইত্=A6াদি) যাদের লালন-পালনের জন্য পৃথিবীর ২৩% খাবারযোগ্য পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে, যদিও প্রায় ৭০০ মিলিয়ন মানুষ ভুগছে পানির অভাবে। প্রতি গ্যালন জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে আবহাওয়ায় যোগ হচ্ছে ১৯.৬ পাউণ্ড কার্বন-ডাই-অক্সাইড। বিজ্ঞানীরা হিসেব করে দেখিয়েছেন, যে হারে বিশ্বজুড়ে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার হচ্ছে, তাতে করে আগামী ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর বর্তমানের তুলনায় চার ডিগ্রি উষ্ণতর হয়ে উঠবে যার বিধ্বংসী প্রভাব থেকে এ গ্রহের কোন কিছুই রক্ষা পাবে না। রেইনফরেস্ট ধ্বংসের কারণে প্রতিদিন অন্তত একশত সাঁইত্রিশ রকমের উদ্ভিদ, প্রাণী এবং পোকা-মাকড়ের প্রজাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অনেককেই মনে করেন, এতবড় পৃথিবী, কবে কী জলবায়ু পরিবর্তন হবে, আমার মতো ক্ষুদ্র একজনের এ নিয়ে এত ভাববারই বা কী আছে, করবারই বা কী আছে! তবে সত্যিটা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের যে অবশ্যম্ভাবী ভয়ংকর প্রভাব, আমরা ইতিমধ্যে তার ভেতরে ঢুকে পড়েছি। এর প্রভাব পড়ছে বর্তমান পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের উপর, সে আপনি মানচিত্রের যে দ্রাঘিমাতেই থাকেন না কেন। এ ব্যাপারে ধনী দেশের বাসিন্দা কিংবা গরীব দেশের বাসিন্দাদের মধ্যে কোন প্রভেদ নেই। বেশ প্রত্যক্ষভাবেই আমরা ভোগ করতে শুরু করেছি মানবজাতি হিসেবে আমাদের পৃথিবীকে যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলাফল। ইতিমধ্যে, কেবল জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অন্তত ৬০ মিলিয়ন মানুষ নিজেদের বাড়িঘর হারিয়ে উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে বিশ্বজুড়ে। কোন দেশই রেহাই পাচ্ছে না এর অবশ্যম্ভাবী দূর্ভোগ হতে। ভয়ের কথাটা হচ্ছে, এখনও পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনকে বিশেষ সমস্যাই মনে করছে না। ইউ-সার্ভে কয়েকদিন আগে একটি জরিপ চালিয়েছিল। বিষয় ছিল: আপনি কি আপনার জীবদ্দশায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন? উত্তরে দেখা যাচ্ছে, ২৬.৯% মানুষ মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তনে আদৌ কোন সমস্যা হবে না তাদের জীবনকালে। ৬.৯% মানুষ মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তন বলে আসলে কিছুই নেই। এটা স্রেফ গুজব। ৩২.১% মানুষ বলছেন, কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। মাত্র ৩৪.২% মানুষ মনে করেন জলবায়ু পরিবর্তনে প্রভাব পড়বে তাদের জীবদ্দশাতেই। আচ্ছা, এ প্রসঙ্গে আমাদের দেশের মানুষ কী ভাবছে? আমি নেট ঘেঁটে বাংলাদেশের বনভূমি ধ্বংসের কিছু তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু, সত্যি বলতে, তেমন নির্ভরযোগ্য কিছু পেলাম না। পরে ভেবে দেখলাম, বাংলাদেশের বনধ্বংসের কোন তথ্য নেটে পাওয়ার দরকারই নেই আদৌ। একটু ‘কমনসেন্স’ খাটালেই এ সংক্রান্ত উত্তর পাওয়া সম্ভব। আমরা যারা কিছুদিন পর পর বাংলাদেশে বেড়াতে যাই, খুব সম্ভবত আমাদের চোখেই বাংলাদেশের প্রকৃতি পরিবর্তনের চিত্রটি খুব সুনির্দিষ্টভাবে ধরা পড়ে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, মাত্র দেড়-দুই বছরের মাথায় দেশে বেড়াতে গেলেও চারপাশটা সহজে চেনা যায় না। নিজের গ্রাম রাতারাতি বদলে যায়। মাঠ-ঘাট-জঙ্গল সব লাপাত্তা। খোলা মাঠ বলে কিছু নেই, চাষের জমি সংকুচিত হতে হতে হাতের তালুর আয়তনে এসে পৌঁছাচ্ছে। চারদিকে কেবলি বসত ভিটা, ইমারত, দোকানপাট। রাস্তাঘাট সব পাকা হয়ে উঠতে না উঠতেই সবচেয়ে দূরতর গ্রামটিও ট্যাক্সি, বাস, মোটরসাইকেলের কালো ধোঁয়ার দৌরাতে”্য ছেয়ে যাচ্ছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগে পড়বে, তাদের তালিকায় বাংলাদেশ একদম প্রথম দিকে রয়েছে। এ সত্যিটি জেনে, এর ভয়াবহ প্রভাব বছর বছর প্রত্যক্ষ করে, আমরা কবে থেকে সচেতন পদক্ষেপ ফেলতে শুরু করবো? রামপাল কয়লা বিদুৎকেন্দ্রসহ আরো কিছু পদক্ষেপ অবশ্য ভিন্ন বার্তা দেয়। দেশে-শুনে মনে হয়, আমরা হয় জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি বুঝতে পারছি না, কিংবা আমলে নিচ্ছি না।  জরুরী কথাটা হলো, আমাদের প্রতি মুহূর্তের প্রতিটি কর্মকাণ্ড, প্রতিটি পদক্ষেপের প্রভাব রয়েছে এই পৃথিবীর জলবায়ুতে এবং আমাদের প্রতিটি ভুল কর্মকাণ্ড এবং ভুল পদক্ষেপ ত্বরান্বিত করতে পারে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের। কথাটি যত কষ্ট-কল্পিতই মনে হোক না, যতদিন না এ কথাটি মানবজাতির প্রতিটি সদস্যের মননে ও মগজে গেঁথে যাবে, ততদিন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে নেমে আসা জলবায়ু বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাবার আশা নিশ্চিতভাবে সুদূর পরাহত।

লেখক: কথাসাহিত্যিক   

সবচেয়ে বেশি পঠিত

ড. ইউনূসের আরো স্থায়িত্বের প্রশ্নে কিছু কথা

ড. ইউনূসের আরো স্থায়িত্বের প্রশ্নে কিছু কথা

গাজীউল হাসান খান ♦ আজকাল কোনো রাজনৈতিক কথা বলা কিংবা লেখার ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে বলে মনে হয়। কোনো ব্যাপারে বক্তা কিংবা লেখকের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গেই একটি পক্ষ নির্ধারণের প্রবৃত্তি দেখা দিয়েছে। অর্থাৎ বক্তা বা লেখক রাজনীতিগতভাবে কোন পক্ষের...

দেশ কারো একার নয়, দেশ সবার

গাজীউল হাসান খান ♦ বাংলাদেশের স্বাধীনতা আমাদের পূর্বপুরুষদের অর্থাৎ এই অঞ্চলের মানুষের হাজার বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় পর্যায়ক্রমে অবিভক্ত বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলিম হিসেবে আবির্ভূত হলেও এই ভূখণ্ডে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যে...

আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

আমাদের হৃদযন্ত্রের কাজ হলো শরীরে রক্ত সঞ্চালন (পাম্প) করা। কার্ডিওভাসকুলার রোগ (সিভিডি) হৃদযন্ত্রের বা রক্তনালীগুলোর উপর প্রভাব ফেলে এবং এই রোগ বিশ্বব্যাপী অকাল মৃত্যু ও মানুষের অসক্ষম (ডিসএবল) হয়ে পড়ার প্রধান কারণ। তাই আমাদের বোঝা প্রয়োজন- কীভাবে আমাদের...

বাংলাদেশ-চীন সুদৃঢ় বন্ধনে জড়ানো আবশ্যক

গাজীউল হাসান খান ♦ চীনের একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতা সম্প্রতি বলেছেন, বাংলাদেশের উচিত তার নিজ জাতীয় স্বার্থে কাজ করা, কোনো তৃতীয় পক্ষের জন্য নয়। কিন্তু পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব কাজ দেশের স্বার্থে করেননি,...

শীতকালীন সর্দি-জ্বর নয় – রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) থেকে নিজেকে সুরক্ষিত করুন

শীতকালীন সর্দি-জ্বর নয় – রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) থেকে নিজেকে সুরক্ষিত করুন

রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস সংক্ষেপে আরএসভি দ্বারা সৃষ্ট ফুসফুসের গুরুতর সংক্রমণ নিয়ে প্রতি বছর আমাদের হাজার হাজার বয়স্ক মানুষ এবং শিশু হাসপাতালে ভর্তি হন। এক্ষেত্রে আপনার কী জানা দরকার সে বিষয়ে জিপি ডাঃ মোহিত মন্দিরাদত্তা এবং ডা. ওজি ইলোজু ব্যাখ্যা করছেন। ডাঃ...

আরও পড়ুন »

 

ড. ইউনূসের আরো স্থায়িত্বের প্রশ্নে কিছু কথা

ড. ইউনূসের আরো স্থায়িত্বের প্রশ্নে কিছু কথা

গাজীউল হাসান খান ♦ আজকাল কোনো রাজনৈতিক কথা বলা কিংবা লেখার ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে বলে মনে হয়। কোনো ব্যাপারে বক্তা কিংবা লেখকের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গেই একটি পক্ষ নির্ধারণের প্রবৃত্তি দেখা দিয়েছে। অর্থাৎ বক্তা বা লেখক রাজনীতিগতভাবে কোন পক্ষের...

দেশ কারো একার নয়, দেশ সবার

গাজীউল হাসান খান ♦ বাংলাদেশের স্বাধীনতা আমাদের পূর্বপুরুষদের অর্থাৎ এই অঞ্চলের মানুষের হাজার বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় পর্যায়ক্রমে অবিভক্ত বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলিম হিসেবে আবির্ভূত হলেও এই ভূখণ্ডে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যে...

আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

আমাদের হৃদযন্ত্রের কাজ হলো শরীরে রক্ত সঞ্চালন (পাম্প) করা। কার্ডিওভাসকুলার রোগ (সিভিডি) হৃদযন্ত্রের বা রক্তনালীগুলোর উপর প্রভাব ফেলে এবং এই রোগ বিশ্বব্যাপী অকাল মৃত্যু ও মানুষের অসক্ষম (ডিসএবল) হয়ে পড়ার প্রধান কারণ। তাই আমাদের বোঝা প্রয়োজন- কীভাবে আমাদের...

বাংলাদেশ-চীন সুদৃঢ় বন্ধনে জড়ানো আবশ্যক

গাজীউল হাসান খান ♦ চীনের একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতা সম্প্রতি বলেছেন, বাংলাদেশের উচিত তার নিজ জাতীয় স্বার্থে কাজ করা, কোনো তৃতীয় পক্ষের জন্য নয়। কিন্তু পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব কাজ দেশের স্বার্থে করেননি,...

শীতকালীন সর্দি-জ্বর নয় – রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) থেকে নিজেকে সুরক্ষিত করুন

শীতকালীন সর্দি-জ্বর নয় – রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) থেকে নিজেকে সুরক্ষিত করুন

রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস সংক্ষেপে আরএসভি দ্বারা সৃষ্ট ফুসফুসের গুরুতর সংক্রমণ নিয়ে প্রতি বছর আমাদের হাজার হাজার বয়স্ক মানুষ এবং শিশু হাসপাতালে ভর্তি হন। এক্ষেত্রে আপনার কী জানা দরকার সে বিষয়ে জিপি ডাঃ মোহিত মন্দিরাদত্তা এবং ডা. ওজি ইলোজু ব্যাখ্যা করছেন। ডাঃ...

নতুন দল গণজাগরণের নয়া অধ্যায় রচনা করুক

গাজীউল হাসান খান ♦ ছাত্র-জনতার বিপ্লব বা অভ্যুত্থানের অগ্নিগর্ভে যাদের জন্ম, তাদের কাছে রাজনীতিগতভাবে নির্যাতিত কিংবা শোষিত-বঞ্চিত মানুষের প্রত্যাশাটা একটু বেশি থাকাই স্বাভাবিক। গণ-আন্দোলন কিংবা বৃহত্তর অর্থে গণ-অভ্যুত্থানের আপসহীন প্রক্রিয়ায়, চরম আত্মত্যাগের মধ্য...