১৬ এপ্রিল: সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ মাঠে নামাজে জানাজা শেষে নিজ প্রতিষ্ঠানের চত্বরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর ২টা ৩০ মিনিটে পিএইচএ মাঠে তার পঞ্চম নামাজে জানাজা শেষে ২টা ৫৫ মিনিটে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সূচনা ভবনের সামনে তাকে দাফন করা হয়।
এ সময় নামাজে জানাজায় অংশ নেন ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পরিবারের সদস্য, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় বাসিন্দাসহ প্রায় ১০ হাজার মানুষ। জানাজার আগে ডা: জাফরুল্লার একমাত্র ছেলে বারিস চৌধুরী বলেন, আমার বাবার কাছে কেউ যদি কোনো দেনাপাওনা থাকেন আমার সাথে যোগাযোগ করবেন এবং কারো সাথে যদি কোনো মনোমালিন্য থাকে তাকে আপনারা ক্ষমা করে দেবেন। এ ছাড়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ যেভাবে আমার বাবা সারা জীবন এই প্রতিষ্ঠানটিকে আগলে ধরে রেখেছিলেন মানুষের সেবা প্রদানের মাধ্যমে আপনারা তার সেই আশা আকাঙক্ষাকে ধারণ করে আরো ভালো করে প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ মানুষের সেবার জন্য তৈরি করবেন। এ দিকে ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নামাজে জানাজায় অংশ নিতে আসা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী গরিব মানুষের ডাক্তার ছিলেন। আমরা যদি তাকে সম্মান দেখাতে পারি, তার চিন্তাচেতনা, তিনি যা করতে চেয়েছেন, যা করতে পারেননি, সেটির পাশে যদি দাঁড়াতে পারি, সেটিই হবে জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে সবচেয়ে বেশি মনে করা। কাদের সিদ্দিকী বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরী দল-মতের ঊর্ধ্বে থেকে সত্যিকারের একজন ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি যা ভাবতেন, তাই বলার চেষ্টা করতেন। তবে কোনো স্থানই শূন্য থাকে না, এটাও হয়তো থাকবে না। কিন্তু অনেক সময় লাগবে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের একজন চলে গেলেন। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফ্রিজিং ভ্যানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর লাশ পৌঁছে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ মাঠে সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাকে শ্রদ্ধা জানায় সর্বস্তরের জনসাধারণ। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জুমার নামাজের পর বেলা ২টা ৩০ মিনিটে পিএইচএ মাঠে তার পঞ্চম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সূচনা ভবনের সামনে দাফন করা হয়। দাফন শেষে ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর রূহের মাগফিরাত কামনায় দীর্ঘ মুনাজাত করা হয়। ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে মারা যান ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী। খ্যাতিমান এই বুদ্ধিজীবী ও চিকিৎসক দীর্ঘ দিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। করোনার পর কিডনি সমস্যার পাশাপাশি তার লিভারের সমস্যাও দেখা দেয়।