৩২ হাজারেরও বেশি মণ্ডপে দুর্গাপূজা
২৫ সেপ্টেম্বর: মহালয়ার মধ্য দিয়ে রোববার থেকে শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। করোনা মহামারীর কারণে গত দুই বছর সাত্ত্বিক পূর্জা-অর্চনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল দুর্গাপূজা। তবে এবার সেই সীমাবদ্ধতা কেটেছে। এবার উৎসবমুখর পরিবেশে সারা দেশে ৩২ হাজার ১৬৮টি পূজামণ্ডপে উদযাপন করা হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। গত বছরের চেয়ে এবার ৫০টি মণ্ডপ বেশি। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সব মণ্ডপেই নিরাপত্তা নিয়ে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। শনিবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক বলেন, ‘গত বছরের সহিংসতার কথা মাথায় রেখে এ বছর সরকার চাচ্ছে কোনো অবস্থাতেই যেন কোনো অঘটন না ঘটে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক বেশি সক্রিয়। আমরা মনে করি, আমাদের ৩২ হাজার ১৬৮টি মন্দির সুরক্ষা দেয়া খুব কঠিন। তাই আমরা এ বছর প্রত্যেক মন্দিরে ুু ১০ স্বচ্ছাসেবক নিয়োগ করছি, যারা রাতেও পাহারা দেবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ এ কথা বলা যাবে না। নাশকতার ঘটনা ঘটতে পারে, তবে আমরা এবার খুব সচেতন। সর্বোচ্চ সিসিটিভির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গ্রামে বিভিন্ন বার্তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে সেই মন্দিরগুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ যেগুলো অস্থায়ী মন্দির।’ জে এল ভৌমিক বলেন, ‘গত বছর পূজার সময়ের হামলাগুলোর কোনো বিচার হয়নি। আমাদের দাবি, এসব ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হোক। আমরা সরকারের ওপর আস্থা রাখতে চাই। এ বছরের পূজাও সম্পূর্ণরূপে শঙ্কামুক্ত নয়। তবে আমরা সচেতন রয়েছি।’ বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জানায়, আজ মহালয়ার মধ্য দিয়ে পিতৃপক্ষের সমাপ্তিতে দেবীপক্ষের শুভ সূচনায় ধ্বনিত হবে আনন্দময়ীর আগমনী বার্তা। ১ অক্টোবর শনিবার ষষ্ঠী তিথিতে দেবীর আমন্ত্রণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে ৫ অক্টোবর বুধবার দশমী তিথিতে প্রতিমা নিরঞ্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মানা হয়নি অনেক মণ্ডপে : দুর্গাপূজা ঘিরে মণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে নির্দেশনা ছিল, তা বাস্তবায়ন করা হয়নি বলে জানানো হয়েছে একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে। সম্প্রতি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বিষয়টি জানানো হয়েছে পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও অনেক পূজামণ্ডপেই এখন পর্যন্ত স্থাপন করা হয়নি সিসি ক্যামেরা, গঠন করা হয়নি স্বেচ্ছাসেবক দল এবং অনিরাপদ স্থানে স্থাপন করা হচ্ছে অস্থায়ী পূজামণ্ডপ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসরণ না করে মণ্ডপের নিরাপত্তাব্যবস্থা বিঘ্নিত করলে যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনার দায়ভার সংশ্লিষ্ট পূজা উদযাপন কমিটিকেই নিতে হবে, যে বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রেস ব্রিফিংয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে।’