শিহাবুজ্জামান কামাল
লণ্ডন, ০৮ অক্টোবর: সদ্যপ্রয়াত বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও বুজুর্গ ড. ইউসুফ-আল কারযাভীর স্মরণে গত ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার পুর্ব লণ্ডনের দারুল উম্মাহ্ মসজিদে দাওয়াতুল ইসলামের উদ্যোগে এক দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় আমীর হাফিজ মাওলানা আবু সায়ীদের সভাপতিত্বে এবং মাওলানা শেখ ফরুক হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলের শুরুতে পবিত্র কালামে পাক থেকে তেলাওয়াত করেন দারুল উম্মাহ্ মসজিদের খতিব শেখ আশিকুর রহমান। দোয়া মাহফিলে ড. ইউসুফ আল কারযাভীর বর্ণাঢ্য জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনা পেশ করেন বিশিষ্ট আলেম ড: আব্দুস সালাম আজাদী, শেখ মাওলানা আব্দুর রহমান মাদানী ও মাওলানা মোহাম্মদ রেজাউল করিম। বক্তারা বলেন, ড. ইউসুফ আল কারযাভী ছিলেন মুসলিম বিশ্বের একজন প্রভাবশালী ধর্মীয় ইসলামি স্কলার। ড. কারযাভী মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা এবং আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কলার নামের সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন। ড. কারযাভী ২০১৩ সালে ব্রাদারহুডের নেতা মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিশরের ক্ষমতা দখল করেন। তৎকালীন সেনা প্রধান ছিলেন আব্দুল ফাতাহ্ সিসি এবং তিনি আব্দুল ফাতাহের একজন কঠোর সমালোচক ছিলেন। সভাপতির বক্তব্যে হাফিজ মাওলানা আবু সায়ীদ বলেন; ড: ইউসুফ-আল কারযাভী কোরআন হাদীসের উপর তিনি বিশাল জ্ঞানের অধিকারী এবং মুসলিম বিশ্বের একজন শ্রেষ্ঠ আলেম ছিলেন। তিনি ছোট বড় প্রায় দুশতাধিক মূল্যবান বই পুস্তক রচনা করেন। বিশেষ করে জাকাতের উপর বিশাল দুই খণ্ডের গ্রন্থ রচনা করেন এবং মিশরের আল আজহার থেকে তাঁকে ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করা হয়। ড: কারযাভী ইসলামী জ্ঞানের বিকাশে যে পরম্পরা রেখে গেছেন সেটা আগামী কয়েক শতাব্দী পযর্ন্ত বিদ্যমান থাকবে। ইসলামের সুমহান বাণী প্রচারের জন্য তাঁকে জেলে-জুলুম সইতে হয়েছে, নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়েছে। ইউসুফ আল কারযাভী একজন বড় মনের মানুষ ছিলেন। তিনি মুসলিম, অমুসলিম, দলমত নির্বিশেষে সবার সাথে ঐক্যমতের ভিত্তিতে কাজ করতেন। মাওলানা আবু সায়ীদ আরও বলেন, ইউসুফ আল কারযাভীকে দুর ও কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। তিনি ’ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ ইসলামিক স্কলার’ নামক সংগঠন গঠন করেন এবং এই সংগঠনের একজন সদস্য আমি। তাছাড়া ড: কারযাভী পশ্চিমা বিশ্বের মুসলমানদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ’ইউরোপীয়ান ফতোয়া কাউন্সিল’ গঠন করেন। ইসলামের জন্য তাঁর সব লেখনি, কোরবানি এবং ইসলামী আন্দোলনের জন্য তাঁর গাইডেন্স এবং নিদের্শনাগুলো মুসলিম বিশ্বের জন্য অনুসরণীয় থাকবে। মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে হাফিজ মাওলানা আবু সায়ীদের দোয়ার মাধ্যমে মাহফিলের কাজ শেষ হয়।