নজিরবিহীন যাত্রী হয়রানীর অভিযোগে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা প্রত্যাহার
গত তিন মাসে অন্তত ১০ জন বৈধ যাত্রীকে আটকে দেন ওই কর্মকর্তা
মুহাম্মদ তাজ উদ্দিন, সিলেট থেকে
লণ্ডন, ১৩ ডিসেম্বর: অবশেষে ‘হাসানমুক্ত’ হয়েছে সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দর। দীর্ঘদিন ধরে এই বিমান বন্দরে কর্মরতদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও সম্প্রতি তা চরমে উঠেছিলো। বিদেশগামী, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যগামী যাত্রীদের বৈধ ভিসা থাকার পরও দাবীকৃত ‘ঘুষ না পাওয়ায় ’ভ্রমণ আটকে দেয়া এবং ভিসা বাতিল করে দেয়ার মত গুরুতর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নির্বিচারে চালিয়ে?আসছিলেন বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশনে কর্মরত হাসান নামের পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টর। নজিরবিহীন যাত্রী হয়রানীর এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হাসানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তাকে সিলেট থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। তবে, স্পেশাল ব্রাঞ্চ বা ইমিগ্রেশন পুলিশের কোন দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করতে অপারগতা জানিয়েছে। অবশ্য বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ ইলিয়াস হোসেইন পত্রিকার সাথে আলাপে নিশ্চিত করেছেন যে, হাসান নামের কেউ বর্তমানে এখানে কর্মরত নেই।
এদিকে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জািনয়েছে, একাধিক গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহের সোমবার এসআই হাসানকে জরুরীভিত্তিতে সিলেটে থেকে ঢাকায়?স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদর দফতরে ডেকে নিয়ে?কয়েক ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরদিনই তাকে বিমানবন্দরের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অধীনে ওসমানী বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে কর্মরত সাব ইন্সপেক্টর হাসান নামের ওই কর্মকর্তা গত তিন মাসে অন্তত ১০ জন বৈধ বিদেশযাত্রীকে আটকে দিয়েছেন। যাত্রীদের অভিযোগ, ঘুষ না দেয়ার কারণে ওই কর্মকর্তা চরম অমানবিক আচরণ করেছেন। তাদের বিদেশ যাওয়া আটকে দিয়েছেন।
সাপ্তাহিক পত্রিকার অনুসন্ধানে অন্তত চার জন যাত্রীর সাথে কথা বলে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। ভূক্তভোগীদের একজন মোহাম্মদ ইয়াহদি সারওয়ার লিমনকে হয়রানীর ঘটনা ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
ভূক্তভোগী মোহাম্মদ ইয়াহদি সারওয়ার লিমনকে ভিজিট ভিসার জন্য স্পন্সর করেছিলেন যুক্তরাজ্যে বসবাসরত তার ভাতিজি তানিয়া সীমা মিয়া।
তিনি সিলেট ভিএফএস অফিসের (ব্রিটিশ ভিসা সেন্টার) মাধ্যমে আবেদন করে যথা-নিয়মে ৬ মাসের মাল্টিপল ভিজিট ভিসা পান। এরপর টিকেট বুকিং দিয়ে গত ২৩ অক্টোবর রোববার লণ্ডনে আসার জন্য সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান লিমন। বিমানের বোর্ডিং কার্ড নিয়ে ইমিগ্রেশন সেকশনে গেলে ইমিগ্রেশনে কর্মরত পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) হাসান তাঁর পাসপোর্টটি হাতে নিয়েই বলেন, ‘এই ভিসা জাল। তিনি প্রশ্ন করেন, আপনি কি কন্ট্রাক্টে (দালালের সাথে চুক্তি করে) লণ্ডন যাচ্ছেন?’ জবাবে লিমন ওই কর্মকর্তাকে জানান, তিনি নিজে যথাযথ নিয়মে আবেদন করে ভিসা পেয়েছেন। নিজের দাবীর স্বপক্ষে তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও প্রদর্শন করেন। কিন্তু এস আই হাসান কিছুতেই তা মানতে রাজি হননি। তিনি তাকে একপাশে বসিয়ে রাখেন। এরপর তার মোবাইল ফোনে অন্য একজন কর্মকর্তা কল করেন, যিনি ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে কথা বলছেন বলে দাবী করেন। তিনি তার ভিসার সত্যতা নিরূপণ করতে অনেক প্রশ্ন করেন। তাঁর স্পন্সরের নাম, যুক্তরাজ্যের ঠিকানাসহ নানা তথ্য জানতে চান। এরপর তার (লিমনের) বাড়ির ঠিকানা, দাদা ও দাদার বাবার নাম জানতে চান।
তিনি সবগুলো প্রশ্নের উত্তর যথাযথভাবে দেন। কিন্তু এরপরও ঐ কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনি যেতে পারবেন না।’ এ রকম ঘটনায় হতবিহ্বল হয়ে বিমান বন্দরে বসে থাকা লিমনের কাছে আসেন ইমিগ্রেশন বিভাগেরই এক লোক। তিনি কানে কানে বলেন, ‘আপনি বসে আছেন কেন? ১৫ হাজার টাকা দিয়ে দেন, তাহলে আপনাকে ছেড়ে দেয়া হবে।’ তখন লিমন বলেন, এই মুহূর্তে আমি ১৫ হাজার টাকা কোথা থেকে ব্যবস্থা করবো ?’ এদিকে ফ্লাইট ছেড়ে দেয়ার সময় ঘনিয়ে আসায় লিমন বারবার এস.আই হাসানকে অনুরোধ করেন তাঁকে ছেড়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু এস.আই হাসান কিছুতেই তাকে ছেড়ে দিতে রাজি হননি।
এ সময় অন্য একজন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা হাসানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তার ভিসা ঠিক আছে। তাকে আপনি ছেড়ে দিন।’ তখন হাসান রেগে গিয়ে ওই ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাকে বলেন, ‘আপনি কথা বলবেন না। আমি ভালো জানি।’ এরপর ফ্লাইট উড়ে যায়। কিন্তু লিমন আর যেতে পারেননি ঐ ফ্লাইটে। এস.আই হাসান তার পাসপোর্টের শেষ পেইজে একটি সাংকেতিক নাম্বার বসিয়ে দেন। যাতে এই পাসপোর্ট দিয়ে তিনি আর ভ্রমণ করতে না পারেন। এভাবেই শেষ হয়ে যাবার উপক্রম হয় লিমনের যুক্তরাজ্য যাবার স্বপ্ন। তবে, আটকে থাকেননি লিমন। বিমান বন্দর থেকে বেরিয়ে তিনি সিলেট ভিএফএস অফিসে যান। কিন্তু, সেখান থেকে কোন সহযোগিতা না পেয়ে তিনি দেখা করেন পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজির সাথে। ডিআইজি সবকিছু শুনে ওসমানী বিমানবন্দরের প্রধান ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
সিলেটের পুলিশ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সুফল না পেয়ে লিমন ঢাকায় গিয়ে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের উর্ধ্বতন এক কর্মকতার সাথে সাক্ষাৎ করেন। লিমনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এস.আই হাসানকেও ডেকে নেয়া হয় ঢাকাস্থ এস.বি কার্যালয়ে। লিমনের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে এস.বি থেকে লিমনকে যুক্তরাজ্য যাওয়ার ওপর অনাপত্তি ইস্যু করা হয়।
সে অনুযায়ী পরদিন অর্থাৎ ২৪ অক্টোবর লণ্ডনে যান লিমন। কিন্তু সেখানে যাবার পর আবারো বাধে বিপত্তি। সিলেট ইমিগ্রেশন থেকে লিমনের ভিসার ব্যাপারে আপত্তিটি ইমেইলে ইউকেবিএ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছিলেন এস.আই হাসান। ফলে, হিথ্রো বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ আটকে দেয় লিমনকে। হিথ্রো বিমান বন্দরে প্রায় ৪৮ ঘন্টা আটক থাকার পর লিমনের স্পন্সরের জিম্মায় মাত্র ২ দিনের জন্য লণ্ডনে থাকার অনুমতি দেয়া হয়। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন লিমন।
ছাতকের ধারনের বাসিন্দা আবু বকর (৪৫)। দীর্ঘ ১০/১২ বছর ছিলেন সৌদী আরবে। সেখান থেকে দেশে ফিরে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত আত্মীয় স্বজনকে দেখার জন্য ভিজিট ভিসার আবেদন করেন। ভিএফএস সিলেট অফিসে যথাযথ কাগজপত্র দাখিল করে তিনি ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাই কমিশনে ৬ মাসের ভিজিট ভিসা পান।
লিমনের যে ফ্লাইটে যাবার কথা ছিল। সেই একই ফ্লাইটের যাত্রী ছিলেন আবু বকর। লিমনকে আটকানোর পর আবু বকরকেও আটক করেন এস.আই হাসান।
আবু বকরকে তিনি জিজ্ঞেস করেন, কত টাকার কন্ট্রাক্টে ভিসা নিয়েছেন। আবু বকর জানান, তিনি কোন দালালের মাধ্যমে ভিসা নেননি। নিজে সব কাগজ দাখিল করে ভিসা নিয়েছেন। কিন্তু, এস.আই হাসান বলেন, আপনার ভিসাটি জাল বলে আমার সন্দেহ হচ্ছে। তাই আপনাকে যেতে দেয়া যাবেনা।
তখন আবু বকর অনেক অনুনয়-বিনয় করেন। বলেন, প্রয়োজনে আপনি লণ্ডনে আমার স্পন্সরের সাথে কথা বলুন। প্রয়োজনে ব্রিটিশ হাই কমিশনে আপনার ভিসা যাচাই করুন। তখন ইঙ্গিতে টাকা চান এস.আই হাসান। কিন্তু, টাকা দিতে রাজী হননি আবু বকর। অগত্যা ফ্লাইট ছেড়ে গেলেও ওসমানী বিমান বন্দরেই আটকে থাকতে হয় আবু বকরকে।
এদিকে, এস.আই হাসান আবু বকরের ভিসার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ইমেইল করেন ব্রিটিশ হাই কমিশনে। ফলে, তার যুক্তরাজ্য যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। অনুরূপ ঘটনা ঘটেছে কানাইঘাটের এক ব্যক্তির ক্ষেত্রে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ ব্যক্তি ছিলেন কাতার প্রবাসী। বাংলাদেশে ফিরে যথারীতি লণ্ডন সফরের উদ্দেশ্যে ৬ মাসের ভিজিট ভিসা সংগ্রহ করেন তিনি। ফ্লাইটের দিন ওসমানী বিমান বন্দরে গিয়ে তিনিও অসাধু এক পুলিশ কর্মকর্তার কবলে পড়েন।
ইমিগ্রেশন পুলিশের ঐ কর্মকর্তা জানতে চান, আপনি যুক্তরাজ্য গেলে থাকবেন কোথায়? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ বিদেশ যাত্রী বলেন, আমার ২ সপ্তাহের হোটেল বুকিং আছে। এরপর ঐ কর্মকর্তা বলেন, স্পন্সরের নাম, স্ত্রীর নাম, স্পন্সরের ছেলে মেয়ের নাম সব কিছু বলেন।
কিন্তু, এরপরও ঐ ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা বলেন, আপনার ভিসার ব্যাপারে আমার সন্দেহ হচ্ছে। আপনি যুক্তরাজ্যে যেতে পারবেন না। আপনাকে ছাড়তে হলে হাইয়ার অথরিটির অনুমোদন লাগবে। এ কথা বলে ঐ ভ্রমণপ্রত্যাশীকে বসিয়ে রাখা হয় ইমিগ্রেশন কাউন্টারের পাশে। কিছুক্ষণ পর এক ব্যক্তি এসে বলেন, স্যারকে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে দেন। তাহলে তিনি আপনাকে ছেড়ে দেবেন।
কিন্তু, ঐ বিদেশযাত্রী বলেন, এতটাকা আমার সাথে নেই। আমি দিতে পারবোনা। ওই ব্যক্তির অভিযোগ- ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার এই উৎকোচের দাবী মেটাতে না পারায় শেষ পর্যন্ত তাঁর যুক্তরাজ্যে যাওয়া হয়ে উঠেনি। ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা ইমেইলে তার ভিসার ব্যাপারে সন্দেহ করে ব্রিটিশ হাই কমিশনে ইমেইল দেওয়ায় কিছুদিন পর তার ভিসাটিও বাতিল করে দেয়া হয়।
ছাতকের দশঘর গ্রামের বাসিন্দা এক তরুণের ঘটনা আরো হৃদয়বিদারক। ২০ বছরের ঐ তরুণ ইইউ সেটেলমেন্ট ক্যাটাগরিতে যুক্তরাজ্যের ভিসা পেয়েছিলেন। সে অনুযায়ী ভিসা পাবার পর যথারীতি টিকেট কেটে উপস্থিত হন ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে।
দুর্ভাগ্যক্রমে তিনিও পড়েন সেই এস.আই হাসানের খপ্পরে। ইমিগ্রেশন কাউন্টারে হাসান বলেন, আপনি ভিসা কোথা থেকে লাগিয়েছেন? তরুণ বলেন, তিনি আইনানুগভাবে আবেদন করে ভিসা পেয়েছেন। আপনি যার কাছে যাবেন তার নাম কি? তার বাবার নাম কি? তার জন্ম তারিখ কবে? ঐ তরুণ সকল প্রশ্নের উত্তর দেবার পরও এস.আই হাসান বলেন, আপনাকে এন্ট্রি ক্লিয়ারেন্স দেয়া যাবেনা। আপনার ভিসার ব্যাপারে আমার সন্দেহ হচ্ছে। আপনি এক পাশে বসুন।
এরপর ঐ তরুণ বসেই থাকেন। এক সময় এক লোক এসে বলে, আপনাকে ছাড়তে হলে স্যারকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিতে হবে।
দু’ঘন্টার ব্যবধানে ঐ তরুণ এস.আই হাসানের দাবীকৃত ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ম্যানেজ করেন। তুলে দেন হাসানের হাতে। কিন্তু, টাকা গ্রহণের পর হাসান বলেন, আজ নয়। আপনি কাল-পরশুর মধ্যে ক্লিয়ারেন্স পাবেন। তখন নতুন টিকেট কেটে যুক্তরাজ্যে যাবেন।
তখন হাসান তার টাকা ফেরত চাইলে এস.আই হাসান বলেন, টাকা নিয়েছি। আপনার ভিসা ঠিক করে দেব। আজ চলে যান। ঐ তরুণ হাতে-পায়ে ধরেও টাকা আদায় করতে ব্যর্থ হয়ে ওসমানী বিমান বন্দর থেকে ফিরে আসেন। প্রায় এক মাস অপেক্ষা করে আছেন, এখনো যুক্তরাজ্যে যেতে পারেননি ঐ তরুণ।
ভূক্তভোগী ঐ লোকজনের পক্ষে ইউকেবিএ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছেন লণ্ডনের মরগান হিল সলিসিটরের আইনজীবী সলিসিটির মাহবুবুর রহমান সুমন। তিনি জানান, ঘটনাগুলো অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং অমানবিক। একজন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার অন্যায্য-অন্যায় দাবী পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এই লোকগুলো। তাদের ভিসাগুলো যাতে পুনরায় ইস্যু করা হয় সেজন্য ইউকেবিএ এবং ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাই কমিশনে তারা যোগাযোগ করেছেন। আশা করছেন শিগগিরই ভুক্তভোগীদের বিষয়ে কর্র্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত পাবেন।
সলিসিটর মাহবুবুর রহমান সুমন বলেন, যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের সবাই ব্রিটিশ হাই কমিশন থেকে বৈধ ভিসা পেয়েছিলেন। কিন্তু, ওসমানী বিমান বন্দরের ঐ কর্মকর্তা তাদের কাছ থেকে উৎকোচ না পাওয়ায় ভিসার ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করে ভিসা ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষকে ইমেইল করায় এদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে, যা দুঃখজনক। তিনি ঘুষ দাবীকারী ঐ ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।
বিভিন্ন সূত্রের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপরোক্ত ৪ জন শুধু নন। সিলেট ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের এ ধরনের হয়রানীর ঘটনায় ভূক্তভোগী হয়েছেন আরো অনেকে। এস.আই হাসানের এ ধরনের হয়রানীর বিষয়ে বাংলাদেশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন মাধ্যমে অবগত করা হয়। স্পেশাল ব্রাঞ্চ কর্তৃপক্ষ কথা বলেছেন, ভূক্তভোগী লিমনের সাথেও।
এর প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে সাব ইন্সপেক্টর হাসানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে, এ বিষয়ে কথা বলার জন্য গত ৯ ডিসেম্বর ও ১০ ডিসেম্বর কয়েক দফা যোগাযোগ করা হয় ওসমানী বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ইলিয়াস হোসেইনের সাথে। ইলিয়াস হোসেইন বলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্বে এসেছি। হাসান নামের কেউ বর্তমানে এখানে কর্মরত নেই। আগে কেউ ছিলেন কি না, তা আমি জানিনা। তার বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তাও আমার জানা নেই।’