বরিস জনসনের ইসলামোফোবিয়া বিষয়ক উপদেষ্টাকে বহিষ্কার
পত্রিকা প্রতিবেদন লণ্ডন, ১৩ জুন: দ্য লেডি অব হেভেন চলচ্চিত্র নিয়ে যুক্তরাজ্যজুড়ে ব্যাপক বিতর্ক চলছে। বিক্ষোভে নেমেছেন মুসলিমরা। চলচ্চিত্রটিতে ইসলামের নবী হযরত মোহাম্মদ (স.) এবং তাঁর কন্যা ফাতেমা (রা.) কে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিক্ষোভের মুখে ইতিমধ্যে সিনেমা চেইন সিনেওয়ালর্ড চলচ্চিত্রটির প্রদর্শণী বন্ধ করেছে। তবে অন্যানয় সিনেমা চেইতে চলচ্চিত্রটি এখনও চলছে। এনিয়ে বিক্ষোভও অব্যাহত রয়েছে। সিনেমাটি যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ করার আহবনান জানিয়ে চালু হওয়া অনলাইন ক্যাম্পেইনে ইতিমধ্যে লাখ লাখ মানুষ সাক্ষর করেছে। এদিকে দ্য লেডি অব হেভেন চলচ্চিত্র নিয়ে মন্তব্য করার জের ধরে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ইসলামোফোবিয়া বিষয়ক উপদেষ্টাকে পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে আরেক বিতর্ক। স্বাধীন মত প্রকাশকে সীমিত করার প্রচারাভিযানকে সমর্থন করার অভিযোগে জনসনের ইসলামোফোবিয়া বিষয়ক উপদেষ্টাকে বহিস্কার করা হয়। দ্য লেডি অফ হেভেন চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বক্তব্য দেন ৪৪ বছর বয়সী ক্বারি আসিম। তিনি বলেন, মতপ্রকাশের সীমা ইসলামোফোবিয়ার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বর্ণবাদ, লিঙ্গ সমতা সহ বিভিন্ন বিষয়ে যেমন মত প্রকাশের সীমা লঙ্ঘণ করা যায় না, ধর্মীয় বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বিষয়টি সমানভাবে প্রযোজ্য হওয়া উচিত। এমন মন্তব্যের কারণে ক্বারি আসিমকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ইসলামোফোবিয়া পরামর্শদাতার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। তাকে দায়িত্ব থেকে অপসারণের পর সরকার বলেছে, “স্বাধীন মত প্রকাশকে সীমিত করার” প্রচারাভিযানকে সমর্থন করায় তাকে দায়িত্ব থেকে সরানো হলো। তাকে অপসারণের চিঠিতে বলা হয়েছে: “মুক্ত মতপ্রকাশ সীমিত করার জন্য একটি প্রচারাভিযানের জন্য আপনার সাম্প্রতিক সমর্থন- একটি প্রচারাভিযান যা নিজেই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাকে উত্সাহিত করেছে। এর অর্থ হল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে উন্নীত করার জন্য সরকারের সাথে কাজ চালিয়ে যাওয়া আপনার পক্ষে আর উপযুক্ত নয়।” সরকারের চিঠিটি আরো ছিল: “পরিস্থিতির সমাধান করা, স্ক্রীনিং বাতিল করা ইত্যাদি যেমন আপনার বক্তব্যে ছিলো তেমনি আপনি লিখেছেন যে “কিছু জায়গায় আমরা সফল হয়েছি এবং সেই সিনেমাগুলি আর সিনেমা দেখানো হবে না।” জনাব অসিম লিডসে একটি প্রতিবাদের ঘোষণা দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে । ক্বারি আসিম লিডসে “সম্প্রীতি” গড়ে তোলার জন্য ২০১২ সালে এমবিই খেতাব পান। একই সময়ে তিনি সরকারের ইসলামোফোবিয়া উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। গত বুধবার, সিনেমা চেইন সিনেওয়ালর্ড বেশ কয়েকটি হলের বাইরে বিক্ষোভের পরে ছবিটির সমস্ত ইউকে স্ক্রিনিং বাতিল করেছে। টেলিভিশন টক শো সহ সামাজিক যোগাযোগম মাধ্যমে এই চলচ্চিত্র নিয়ে তুমুল বিতর্ক অব্যাহত আছে। এলবিসি রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ইমাম আজমল মাশরুর বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবার আছে। তবে মত প্রকাশের স্বাধীনতার একটা সীমাও নির্ধারিত রয়েছে। যেমন আমি চাইলে অন্যের সম্পর্কে যা খুশি বলতে পারবো না। বর্ণবাদ, নারী বিদ্বেষ বা উগ্রবাদ উস্কে যে এমন বক্তব্য দেয়া যায় না। তাহলে ইসলামী মূল্যবোধকে আঘাত করার ক্ষেত্রে কেন সেই সীমারেখা মানা হবে না। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে মুসলমানরা কোনো বিশেষ সুযোগ চাচ্ছে না। কেবল মত প্রকাশের স্বাধীনতার সীমা রক্ষার কথা বলছে।