পত্রিকা প্রতিবেদন লণ্ডন, ০৮ মে: গত ৪ মে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অনেকটা ধরাশায়ী হয়েছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভরা। দলটি ১ হাজার ৬১ জন কাউন্সিলার হারিয়েছে। বিপরীতে লেবার পার্টি, লিবারেল ডেমোক্র্যাট এবং গ্রিন পার্টি বড় ধরণের জয় পেয়েছে। নির্বাচনের এই ফলাফলকে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের জন্য অশনিসংকেত বলে আখ্যায়িত করছেন বিশ্লেষকরা। আর বিরোধী দল লেবার পার্টি এই নির্বাচনকে আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় ফেরার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছে। তাঁরা বলছে, এই ফলাফল প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নেতৃত্বের সরকারকে জনগণের পক্ষ থেকে প্রত্যাখান করার স্পষ্ট বার্তা। এবারও বিভিন্ন কাউন্সিলে কনজারভেটিভ, লেবার, লিবারেল ডোমোক্র্যাটসহ বিভিন্ন দল থেকে বাংলাদেশি বংশোদ্ভ‚ত অনেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকেই বিজয়ী হয়েছেন। লুটন কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ২১ প্রার্থী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। এরমধ্যে ৭জন বিজয়ী হয়েছেন। গত ৪ মে ইংল্যাণ্ডের মোট ২৩০টি কাউন্সিলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৮ হাজারের বেশি কাউন্সিল পদের জন্য লড়াই হয়। পাশাপাশি বেডফোর্ড, লেস্টার, ম্যান্সফি? এবং মিডলসবারা কাউন্সিলে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাহী মেয়র নির্বাচিত হন।
চ‚ড়ান্ত ফলাফলে দেখা গেছে, ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি মোট ১ হাজার ৬১ জন কাউন্সিলার হারিয়েছে। ফলে তাদের কাউন্সিলারের সংখ্যা কমে হয়েছে ২ হাজার ২৯৬ জন। তারা ৪০টি কাউন্সিলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। বিপরীতে লেবার দলের ৫৩৬ বাড়তি কাউন্সিলার বিজয়ী হয়েছে। এতে তাদের মোট কাউন্সিলারের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৬৭৪ জন। লিবারেল ডেমোক্র্যাট এবং গ্রিন পার্টিও বড় ধরনের জয় পেয়েছে। লিবারেল ডোমোক্র্যাট দলের ৪০৭ জন কাউন্সিলার বেড়ে হয়েছে মোট ১ হাজার ৬২৮ জন। দলটি ১২টি কাউন্সিলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। গ্রিন পার্টির কাউন্সিলারের সংখ্যা ২৪১ জন বেড়ে হয়েছে ৪৮১ জন। প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের জন্য এটি ছিলো প্রথম কোনো নির্বাচনী পরীক্ষা। ফলাফলের প্রতিক্রিয়ায় ঋষি সুনাক স্বীকার করেন যে, নির্বাচনের ফলাফল হতাশাজনক। কিন্তু ভোটাররা ব্যাপকভাবে লেবারের দিকে ঝুঁকছে বা লেবারের এজেণ্ডা নিয়ে রব উঠেছে এমন কিছু তিনি এই ফলাফলে দেখছেন না। তবে লেবার নেতা কিয়ার স্টারমার বলেছেন, স্থানীয় নির্বাচনের চমৎকার ফলাফল প্রমাণ করে যে, কনজারভেটিভকে ক্ষমতা থেকে হটাতে প্রস্তুত লেবার পার্টি। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে লেবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পথে রয়েছে। ২০০২ সালের পর স্থানীয় নির্বাচনে লেবার পার্টি কনজারভেটিভকে ছাড়িয়ে যাওয়ার এটি প্রথম ঘটনা। স্থানীয় নির্বাচনের এমন ফলাফল পরবর্তী বিবিসির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জাতীয়ভাবে লেবার পার্টি এখন বৃহত্তম দল। তাদের ভোট শেয়ার ৩৫ শতাংশ। কনজারভেটিভ দলের ভোট শেয়ার ২৬ শতাংশ। আর লিবারেল ডেমোক্র্যাট দলের ভোট শেয়ার ২০ শতাংশ। এবারই প্রথম ইংল্যাণ্ডের কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে ভোটারদের পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হয়েছে। এই নির্বাচনের মধ্যদিয়ে ইংল্যাণ্ডে ভোটারদের বাধ্যতামূলক পরিচয়পত্র প্রদর্শণের নিয়ম চালু হয়।