পত্রিকা ডেস্ক লণ্ডন, ০৮ মে: আওয়ামী লীগ কখনো জনগণের ভোট কারচুপি করে ক্ষমতায় আসেনি বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় দেশ ও দেশের মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ। গত ৭ মে রোববার লণ্ডন ম্যারিয়ট হোটেলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিএনপি-জামায়াতকে ভোটচোর হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের ভোট না দেওয়ার আহŸান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রয়োজনে সব সময় জনগণের পাশে থাকায় আগামী সাধারণ নির্বাচনে তাঁর দল আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে। সভায় শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘তারা (বিএনপি-জামায়াত) বাংলাদেশকে ধ্বংস করবে। তাই সতর্ক থাকুন, যাতে বিএনপি-জামায়াত চক্র আবার ক্ষমতায় না আসে।’ আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ, জনগণ আমাদের তাদের সেবা করার সুযোগ দেবে। সকলকে (নেতা-কর্মী) আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করতে হবে। কারণ, নির্বাচনে আমরা বিজয়ী হব।’
এদিকে, এবারও আমন্ত্রণপত্র থাকা সত্তে¡ও কোনো কোনো ব্যক্তিকে সমাবেশে প্রবেশে বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। সাপ্তাহিক জনমতের বার্তা সম্পাদক মুসলেহ উদ্দিন ফেইসবুক লাইভে এসে বলেন, আমন্ত্রিত হয়ে টিকিট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভায় যোগ দেয়ার উদ্দেশে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে সমাবেশে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। ধারণ ক্ষমতার চাইতে লোক বেশি এমন কথা বলে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। তখন বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেও তিনি কোনো সহায়তা পাননি। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ধারণক্ষমতা বুঝেই তো আমন্ত্রণপত্র বিলি করা হয়েছে। ফলে আমন্ত্রিতদের জায়গা দিতে তো কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তাহলে কি নেতা-কর্মীদের মাঝে ধারণ ক্ষমতার চাইতে বেশি টিকিট বিক্রি করা হয়েছে- প্রশ্ন তুলেন তিনি। এছাড়া, আওয়ামী লীগের আনুগত্য করে এমন সাংবাদিকদের বেছে বেছে দাওয়াত দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, গুটিকয়েক সাংবাদিক বাদে লণ্ডনের অনেক সাংবাদিক ও সম্পাদক এবং সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জনগণ বিএনপি-জামায়াতের ওপর আস্থা রাখবে না। তারা (বিএনপি-জামায়াত) দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এভাবে দেশকে ধ্বংস করেছে। জনগণ কীভাবে তাদের প্রতি আস্থা রাখবে? প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জনগণ জেনে গেছে যে তারা (বিএনপি-জামায়াত) চোর, দুর্নীতিবাজ, খুনি, গ্রেনেড হামলাকারী ও লুটেরা। তারা খুনিদের পৃষ্ঠপোষক। বিএনপি-জামায়াত জোট অর্থ আত্মসাৎ করে দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে। তারেক রহমানকে তাঁর দুর্নীতির দায়ে সাজা দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে কোকোর পাচার করা প্রায় ৪০ কোটি টাকা সরকার দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারেক জিয়া ভোটচোর ছিলেন, তাঁর মা ভোটচোর। আমাদের ভোটচোর বলার সাহস হয় কী করে?’ বিএনপি নেতাদের কাছে শেখ হাসিনা জানতে চান, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারির নির্বাচনে কয়টি দল অংশ নিয়েছিল, কতটি ভোট পড়েছিল? আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের জনগণ তাদের ভোটের অধিকার সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কারও কিছু বলার নেই। সেই নির্বাচনের ফলাফল কী? বিএনপির ২০-দলীয় জোট কতটি আসন পেয়েছিল? ২০-দলীয় জোট নির্বাচনে ২৯টি আসন পায়। পরে উপনির্বাচনে একটিসহ মোট ৩০টি আসন জিতেছিল তারা। আর বাকি আসন ছিল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের। জনগণের কাছে তাদের অবস্থান কোথায় যে তারা এত লাফালাফি করে? প্রধানমন্ত্রী অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ। তাঁরা ‘ডেলটা ২১০০’ পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দেশে আর কোনো গৃহহীন, ভূমিহীন মানুষ থাকবে না। আওয়ামী লীগ মানুষের কল্যাণে কাজ করে। বাংলাদেশের কোনো মানুষ অন্নহীন থাকবে না।