১০ এপ্রিল: অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমের আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে তাণ্ডব চালিয়েছে উগ্রপন্থী ইসরাইলি (ইহুদি) বসতি স্থাপনকারীরা। গত রোববার ভোরে তারা ওই মসজিদে হামলা চালায়। তাণ্ডব চালানোর সময় ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের পাহারা দিচ্ছিল ইসরাইলি পুলিশ। তখন আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণের চার পাশে পুলিশ মোতায়েন করে ইসরাইল। এ সময় তারা ভেতরে থাকা ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের বাইরে বের হতে দেয়নি। পরে ইসরাইলি পুলিশ কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের আল আকসা মসজিদে নিয়ে যেতে শুরু করে। এর আগে জায়নবাদী দেশটির পুলিশ তরুণ ফিলিস্তিনিদের ফজর নামাজের জন্য আল-আকসা মসজিদ কমপ্লেক্সে প্রবেশ করতে দেয়নি।
বাধার সম্মুখিন মুসুল্লিরা তখন ওই মসজিদের চার পাশে ফজরের নামাজ আদায় করেছিলেন। এর আগে মঙ্গল ও বুধবার ইসরাইলি বাহিনী পূর্ব জেরুসালেমের আল আকসা মসজিদ কমপ্লেক্সে হামলা চালিয়ে জোরপূর্বক মুসল্লিদের সরিয়ে দেয়ার পর ফিলিস্তিনি অঞ্চলজুড়ে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ওই মসজিদে ইসরাইলি হামলার পর গাজা উপত্যকা ও লেবানন থেকে দেশটিতে রকেট নিক্ষেপ করা হয়। জবাবে ইসরাইলি সেনারা বিমান হামলা করে প্রতিশোধ নেয়। এ দিকে আল আকসায় ফের হামলা চালালে ‘বিপর্যয়কর পরিণতি’ হবে বলে সতর্ক করেছে জর্দান। জর্দানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সিনান আল-মাজালি শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ইসরাইলি পুলিশ আমাদের মসজিদ খালি করা এবং ফের হামলা চালালে পরিস্থিতিকে আরো সহিংসতার দিকে ঠেলে দেবে। যার জন্য সবাইকে মূল্য দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং পবিত্র আল আকসা মসজিদে অনুপ্রবেশের কারণে পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে দায় ইসরাইলি সরকারের। অন্য দিকে আল আকসা মসজিদ শুধু মুসলমানদের ইবাদতের স্থান বলে জানিয়েছে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা-ওআইসি। আল আকসা মসজিদে রাতের অন্ধকারে ইসরাইলি সেনাদের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ওআইসি। সংস্থাটি বলেছে, এই মসজিদ শুধু মুসলিম মুসল্লিদের ইবাদতের স্থান।শনিবার ওআইসির মহাসচিব হুসেইন ইব্রাহিম তাহা এ সংস্থার কার্যনির্বাহী কমিটির একটি জরুরি বৈঠকে এমন মন্তব্য করেন। আল আকসা মসজিদে অব্যাহতভাবে ইসরাইলি সেনাদের বর্বরোচিত হামলার ব্যাপারে করণীয় ঠিক করতে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই বৈঠকে তাহা বলেন, ‘জেরুসালেম হচ্ছে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখন্ডের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী। এই শহরে অবস্থিত আল আকসা মসজিদও ফিলিস্তিনের অংশ এবং এটা শুধু মুসলমানদের ইবাদতের স্থান।’ ইসরাইলি সৈন্যদের আবারো আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ ইসরাইলি সৈন্যরা বুধবার রাতে আবারো অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমের আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ করেছে। এর আগে রোজার মধ্যেই মুসুল্লিদের ওপর নৃশংসভাবে চড়াও মসজিদে প্রবেশ করেছিল তারা। বুধবার প্রায় দুই হাজার মুসল্লি তারাবির নামাজ পড়ার সময় ইসরাইলি সৈন্যরা মসজিদের আঙিনায় ঢুকে পড়ে। মুসুল্লিদের নামাজ ত্যাগ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার জন্য ইসরাইলি বাহিনী রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ফিরাস আল-দিবস মিডল ইস্ট আইকে বলেন। তিনি জানান, সৈন্যরা লোকজনকে ধাওয়া করে, তাদের প্রহার করে। তিনি বলেন, তারা একটি নতুন বাস্তবতা তৈরী করতে চায়। তারা আল-আকসা মসজিদকে ফিলিস্তিনি শূন্য করতে চায়। বিশেষ করে গতকাল যা হয়েছে, তা বিপর্যয়কর। সহিংসতার মাত্রা ভয়াবহ। পরিচয় প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক এক স্বেচ্ছাসেবী মিডল ইস্ট আইকে বলেন, এক ঘণ্টার মধ্যে মসজিদটি প্রায় ফিলিস্তিনি-শূন্য করে ফেলা হয়। আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ৩৫০ জনেরও বেশি গ্রেফতার জেরুসালেমের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র আল-আকসা মসজিদে সংঘর্ষের পর ইসরাইলি পুলিশ বুধবার ভোরে ৩৫০ জনেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করেছে। বুধবার পুলিশের একজন মুখপাত্র এ কথা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে পুলিশ বলেছে, তারা অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমের ও? সিটির আল-আকসা মসজিদের ভিতরে অবস্থান করা ৩৫০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়েছে। এসব লোক সেখানে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছিল। আল-আকসায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে হাত গুটিয়ে বসে থাকব না: হামাসপ্রধান ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়া বলেছেন, জেরুজালেমে পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে তাঁরা হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না। গতকাল বৃহস্পতিবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বসে এ কথা বলেন হানিয়া। গতকালই লেবানন থেকে ইসরায়েলের দিকে ৩০টির বেশি রকেট ছোড়া হয় বলে দাবি তেল আবিবের। রকেট হামলার জন্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে দায়ী করেছে ইসরায়েল। তারা এ রকেট হামলার জবাব সামরিক উপায়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এরপরই হামাসপ্রধানের কাছ থেকে এমন মন্তব্য এল। পবিত্র আল-আকসা মসজিদটি পূর্ব জেরুজালেমের ইসরায়েল অধিকৃত ওল্ড সিটিতে অবস্থিত। পবিত্র রমজান মাসে গত বুধবার দুই দফায় মসজিদ প্রাঙ্গণে অভিযান চালায় ইসরায়েলি পুলিশ। অভিযানকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের সংঘর্ষ হয়। আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি আগ্রাসনের জেরে অন্য ফিলিস্তিনি সংগঠনগুলোর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করতে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে যান হামাস নেতা হানিয়া। গতকাল এ বৈঠক হয়। বৈঠকের পর একটি বিবৃতি দেন তিনি। হানিয়া তাঁর বিবৃবিতে বলেন, পবিত্র আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের মুখে ফিলিস্তিনি জনগণ ও প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো চুপ করে বসে থাকবে না। ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলেন হানিয়া।মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তখন বেশ কিছু পদক্ষেপ সতর্কতার সঙ্গে গ্রহণ করা হয়। প্রথমত একটি স্থান নির্ধারণ করা হয়। লোকচক্ষুর আড়ালের একটি স্থান বেছে নেয়া হয়, যাতে কোনো সম্ভাব্য সাক্ষী না থাকে। ঢাকায় এমন এক জায়গা হচ্ছে শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া দূষিত তুরাগ নদীর তীর। আরেকটি হচ্ছে কক্সবাজার এবং টেকনাফের মধ্যকার ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভের কিনারা। এরপর, সাধারণত গভীর রাতে, যখন রাস্তা জনমানবশূন্য থাকে এবং দোকানপাটও বন্ধ হয়ে যায়, কোনো কিছু বুঝতে না দিয়ে টার্গেটকে আটকে চোখ বেঁধে একটি বেসামরিক গাড়িতে তুলে নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর টার্গেটকে গুলি করে তার রক্তক্ষরণে মৃত্যু হওয়া অবধি অপেক্ষা করা হয়। যখন তাদের নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়, তাদের চোখের কাপড় খুলে ফেলা হয়। কোনো চি? না রাখার জন্য চোখ বাঁধা হয় নরম কাপড় দিয়ে। এরপর তাদের হাতের বাঁধনও খুলে ফেলা হয়। এরপর দৃশ্যপট সাজানো হয়। কী গল্প বলা হবে, তার ওপর নির্ভর করে নিহতের শরীরে নানা প্রমাণ সাজিয়ে রাখা হয়।