লণ্ডন, ১৭ এপ্রিল: লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট, সিলেটের বিশ্বনাথ প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রহমত আলীকে নিয়ে বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মহিবুর রহমানের অশালীন ও অগ্রহণযোগ্য মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তাঁর এই ঘৃণ্য আচরণের নিন্দা জানিয়েছেন লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ। এক বিবৃতিতে ক্লাব সভাপতি মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ ও ট্রেজারার সালেহ আহমদ বলেন, একজন জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এ ধরনের শালীনতাবিবর্জিত বক্তব্য সম্পূর্ণ অনাকাঙিক্ষত ও অগ্রহণযোগ্য।
তাঁর এমন অশালীন বক্তব্য দেশে-বিদেশে সাংবাদিক সমাজকে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ করেছে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, মেয়র মহিবুর রহমান বিশ্বনাথের স্থানীয় সাংবাদিকদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে আরো যে বক্তব্য রেখেছেন তা-ও চরম অশালীন। তিনি মাঠ পর্যায়ের সংবাদকর্মীদের সাংবাদিক না বলে সংবাদ সংগ্রাহক বলে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা করেছেন। মুহিবুর রহমান আরো বলেছেন, স্থানীয় সাংবাদিকরা যেসব দৈনিক পত্রিকায় কাজ করেন সেসব পত্রিকার সম্পাদকদের সাথে কথা বলে তাদেরকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বলবেন। যদি তাদেরকে সরিয়ে দেয়া না হয়, তাহলে তিনি তাঁর এলাকায় ওইসব সংবাদপত্র পুড়িয়ে ফেলবেন। লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ বলেন, এটা স্বাধীন সাংবাদিকতা পেশার বিরুদ্ধে বড় ধরনের হুমকি। মিডিয়া ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তাঁর এধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। একজন পৌর মেয়র পৌরসভার নাগরিকদের ভোটে নির্বাচিত হন। স্থানীয় সংবাদকর্মীরাও নিশ্চয়ই তাঁর নির্বাচনী এলাকার নাগরিক। সুতরাং একজন নাগরিকের সম্মানহানী হয় এমন অশিষ্ট বক্তব্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত মেয়রের কাছ থেকে মানুষ প্রত্যাশা করেনা। তাঁর কোনো অভিযোগ থাকলে তিনি পৌর অভিভাবক হিসেবে স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে বসে এ বিষয়ে কথা বলতে পারতেন। কিন্তু তা না করে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করে তিনি তাদেরকে শুধু হেয় প্রতিপন্নই করেননি; পেশাগতভাবেও হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছেন। এ ধরণের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ একজন জনপ্রতিনিধির কার্যকলাপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারেনা। এছাড়া স্থানীয় সাংবাদকর্মীদের তিনি ঢালাওভাবে অপসাংবাদিক, টাউট-বাটপার বলে মন্তব্য করেছেন। এর নিন্দা জানিয়ে লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ বলেন, ঢালাওভাবে সাংবাদিকদের অপসাংবাদিক আর টাউট-বাটপার বলে করে তিনি গোটা সাংবাদিক সমাজকেই অপমান করেছেন। উল্লেখ্য, গত ১১ এপ্রিল বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান মেয়রের চেয়ারে বসে ‘সিলেট ডাইরেক্ট নামক একটি ফেইসবুক পেইজে লাইভ বক্তব্য রখেন। এসময় তিনি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে জনাব রহমত আলীকে ‘তথাকথিত’ এবং ‘নামধারী’ সাংবাদিক উল্লেখ করে বলেন, ওই রহমত আলী একটি ম্যাগাজিনে লিখে বসলো যে, বিশ্বনাথে প্রবাসীদের উদ্যোগে একটা কলেজ স্থাপিত হয়েছে, আমার নামটাও সেখানে দিলো না। আমি যে এতো কষ্ট করে কলেজটি করলাম অন্তত আমার নামটা সেখানে থাকা উচিত ছিলো। এ প্রসঙ্গে বলা আবশ্যক, বহু বছর আগের একটি প্রকাশনাকে কেন্দ্র করে এখন মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর এমন বিষোদগার বোধগম্য নয়। ক্লাব নেতৃবৃন্দ তাঁর এসব অশিষ্ট এবং অগ্রহণযোগ্য বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করে লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি জনাব রহমত আলীসহ বিশ্বনাথের স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশের আহবান জানান। পাশাপাশি তিনি ভবিষ্যতে এধরণের আক্রমণাত্মক কথাবার্তা পরিহার করে সাংবাদিকসহ সকলের সাথে জনপ্রতিনিধিসুলভ আচরণ করবেন বলেও ক্লাব নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি