লণ্ডন, ৩১ জুলাই: ইস্ট লণ্ডন মসজিদের ১২জন ট্রাস্টি, কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীকে সম্মাননা দিয়েছে চ্যারিটি সংস্থা ব্রিটিশ বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট। মসজিদের দৈনন্দিন কার্যক্রমসহ প্রতিবছর রমজানে ৬ শতাধিক মানুষের জন্য ইফতার আয়োজনসহ মুসল্লিদের সেবায় বিশেষ ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ তাদেরকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।
গত ১৪ জুলাই শুক্রবার সন্ধ্যায় লণ্ডন মুসলিম সেন্টারের সেমিনার রুমে আয়োজিত ‘এপ্রিসিয়েশন সিরিমনি’ অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা জানিয়ে সম্মাননা সনদ তুলে দেওয়া হয়। ট্রাস্টের সভাপতি খসরুজ্জামান খসরুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাপ্তাহিক দেশ সম্পাদক সাংবাদিক তাইসির মাহমুদ। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পীকার জাহেদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইস্ট হ্যাণ্ডস চ্যারিটির চেয়ারম্যান ও লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি নবাব উদ্দিন, ব্রিটিশ বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের প্রধান উপদেষ্টা মোঃ কামাল উদ্দিন ও ট্রাস্টের উপদেষ্টা সাংবাদিক আসম মাসুম। শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ইস্ট লণ্ডন মসজিদের এডমিন কর্মকর্তা কয়েস আহমদ।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ট্রাস্টের উপদেষ্টা গোলাম রব্বানী সোহেল, আসাদুজ্জামান আহমদ ও নাসির আহমদ শাহীন উপস্থিত ছিলেন। সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন- ইস্ট লণ্ডন মসজিদের বোর্ড অব ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান আইয়ুব খান, সদস্য দেলওয়ার খান, লীড স্টাফ আসাদ জামান, মারিয়াম সেন্টারের প্রধান সুফিয়া আলম, মসজিদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জামেয়াতুল মুসলিমীন-এর সভাপতি আব্দুর রহিম কামালী, সহ-সভাপতি আজাদ মিয়া, জেনারেল সেক্রেটারি আজাদ আলী, নির্বাহী সদস্য আলাউদ্দিন আহমদ, মোহাম্মদ আব্দুল মালিক, আকরম মিয়া, আখনু হোসাইন ও ফরিদ মিয়া।
সার্টিফিকেট গ্রহণ শেষে অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন দেলওয়ার খান, আসাদ জামান ও আজাদ আলী। দেলওয়ার খান বলেন, ব্রিটিশ বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের উদ্যোগে আজকের আয়োজনটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী। কারণ এই প্রথম কোনো চ্যারিটি সংগঠন ইস্ট লণ্ডন মসজিদের সেবামূলক কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে ট্রাস্টি, কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীদেরকে এককভাবে সম্মাননা জানালো। তিনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ব্রিটিশ বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের কার্যক্রম প্রশংসনীয়। ভবিষ্যতে তাদের কার্যপরিধি আরো সম্প্রসারিত হবে বলে আমি আশাবাদী। ব্রিটিশ বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের সভাপতি খসরুজ্জমান খসরু বলেন, গত বছর রমজানে আমাদের চ্যারিটিকে ইস্ট লণ্ডন মসজিদে ফাণ্ডরেইজ করার সুযোগ দেওয়া হয়। আমরা সাড়ে ৩ হাজার পাউণ্ডের বেশি সংগ্রহ করেছিলাম। মসজিদ আমাদেরকে যে সহযোগিতা করেছে এই জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, আমরা রমজানে যখন ফাণ্ডরেইজ করতে আসি তখন আমাদেরকে মসজিদের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেন। তাদের নিবেদিতপ্রাণ কার্যক্রম দেখে আমরা খুব অনুপ্রাণিত হই এবং এই জন্য সম্মাননা জানানোর আগ্রহ প্রকাশ করি। মসজিদ কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে এই সুযোগ দেয়ায় আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আজকের দিনটি আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে ব্রিটিশ বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করছে। বিশেষকরে বাংলাদেশের বাঘেরহাট জেলায় বাঘের আক্রমণে আহত মানুষদেরকে তাঁরা সাহায্য করে থাকেন। কারণ ওই এলাকায় একটি কুসংস্কার রয়েছে, কোনো মানুষ বাঘের আক্রমণে জখম হলে তাকে অপয়া (অকল্যাণকর) বলে কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসে না। খসরুজ্জামান খসরু বলেন, এই খবরটি তাঁর কাছে আসার পর থেকে তিনি নিয়মিত ওই এলাকায় বাঘের আক্রমণে জখম হওয়া মানুষকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছেন। কাউন্সিল অব মস্ক টাওয়ার হ্যামলেটসের ট্রেজারার সাংবাদিক লেখক আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারলের মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি