আমরাও স্যাংশন দেয়ার ক্ষমতা রাখি
সভাস্থলের কাছে বিএনপির বিক্ষোভ
লণ্ডন, ০২ অক্টোবর: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখন একটা কথা শুনি স্যাংশন। কে কাকে স্যাংশন দেয়, আমরাও স্যাংশন দেয়ার ক্ষমতা রাখি। ১০ ডিসেম্বর গ্যাস বেলুনের মতো সব চুপসে যাবে।
গত ২ অক্টোবর সোমবার লণ্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার মেথডিস্ট সেন্ট্রাল হলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিতএক সমাবেশে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের এই মেয়াদকালে শেখ হাসিনার লণ্ডনে শেষ সফর ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও প্রবাসীদের আগ্রহ ছিলো ব্যাপক।
লণ্ডন সময় বিকাল ৪টা ৫১ মিনিটে শুরু করে প্রায় দেড় ঘন্টারও বেশী সময় ধরে রাখা তাঁর বক্তব্যের বড় এতটা অংশ জুড়েই ছিলো বিরোধী দল এবং শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সমালোচনা। প্রধানমন্ত্রী সভায়?যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলীয়?নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন। সভাস্থলে প্রায় দেড় হাজার অতিথি ছিলেন বলে জানা গেছে। এদিকে, বিরোধী দল বিএনপি হাইড পার্ক কর্নার থেকে মিছিল সহকারে সভাস্থলের কাছাকাছি উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। দু পক্ষকে সামলাতে সভাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিলো। বক্তৃতায়?বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার বোনের কান্নাকাটিতে আমি তাকে বাসায় রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এখন সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে নিয়ে বিদেশে চিকিৎসা করাতে চায়। পৃথিবীতে কোন দেশে সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর নজীর নেই। আমাকে বলে সহানুভূতিশীল হতে। অথচ আমার বাবা, পরিবার হত্যার দিন ১৫ আগস্ট ভূয়া জন্মদিন তৈরি করে সেই জন্মদিন উদযাপন করে। আর আমার কাছে সহানুভূতি চায়!
শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন উল্লেখ করে বলেন, খালেদা জিয়া প্রহসনের নির্বাচন করে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের সাথে নিয়ে ক্ষমতায় গেলেও মার্চ মাসে মাত্র দেড় মাসের মাথায় জনরোষে পড়ে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়।
এরপর ১৯৯৬ সালের জুন মাসে জনগণের রায়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। তিনি আরো বলেন, ২০০৮ সালে বিএনপি জামায়াতসহ ২০ দলীয় ঐক্যজোট পেলো ৩০ আসন। আর বাকি সব পেলো আমাদের মহাজোট। একই ধারাবাহিকতায় ২০১৪, ২০১৮ সালের নির্বাচন হয়েছে। শেখ হাসিনা বর্তমান সরকারের উন্নয়ন নিয়ে বলেন, ২০০৬ সালে জামায়াত বিএনপি ক্ষমতায় তখন প্রবৃদ্ধি তলানীতে রেখে যায়।
বর্তমানে আমাদের ৭.২৫ প্রবৃদ্ধি। কোভিডের আগে ছিলো ৮ শতাংশের উপরে। মাথাপিছু আয় ২০০৬ সালে ছিলো ৫ শত মার্কিন ডলার, এখন ২৬০০ মার্কিন ডলার। বিএনপির সর্বশেষ বাজে ৬২ হাজার কোটি টাকার। এবারের বাজেট ৭ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছি। তাদের আমলে জিডিপি ছিলো ৪ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা এখন ১২ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের সময়ে রেমিটেন্স ৪.৮ বিলিয়ন ডলার, বর্তমানে ২১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স আসে। তিনি বলেন, স্যানিটারি ব্যবহার তাদের আমলে ছিলো ৪৭ শতাংশ, এখন ৯৭ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করে। আমরা মাতৃত্বকালীন ভাতা দিই, মাকে পুষ্টি ভাতা দিই। মাতৃমৃত্যু অর্ধেকে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে কতো অপবাদ, চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলো। আমরা বলেছিলাম নিজের টাকা দিয়েই করবো। সেটা করেছি। সারাদেশকে একটি নেটওয়ার্কের মধ্যে আনতে আরো বেশকিছু কাজ শেষ হওয়ার পথে। তিনি বলেন, সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আওয়ামী লীগ সরকার করেছে। আমাদের আমলে ৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে সড়ক যোগাযোগ। আমরা ডিজিটালাইজড ভূমি ব্যবস্থাপনা করে দিয়েছি। প্রবাসীরা এখানে বসেই খাজনাসহ সকল তথ্য দেখতে পারবেন। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক। সভায় দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং?নুতন কমিটি না হওয়ার উপস্থিত নেতা-কর্মীদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে শোনা গেছে। (তথ্য সহযোগিতা আ স ম মাসুম)