নতুন কমিটি ঘোষণা, একপক্ষের নির্বাচন বর্জন
প্রেসিডেন্ট ওলী খান এমবিই,সেক্রেটারী জেনারেল মিঠু চৌধুরী,চীফ ট্রেজারার টিপু রহমান
পত্রিকা ডেস্ক:
লন্ডন, ১৬ অক্টোবর: বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশন (বিসিএ)-এর বিলম্বিত নির্বাচনে ২০২৩-২৫ ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটির প্রেসিডেন্ট হিশেবে ওলী খান এমবিই, সেক্রেটারী জেনারেল মিঠু চৌধুরী, চীফ ট্রেজারার টিপু রহমান, অর্গানাইজিং সেক্রেটারী ফরহাদ হোসেন টিপু, মেম্বারশীপ সেক্রেটারী ইয়ামীম দিদার ও প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারী হিশেবে নাজ ইসলামের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর রোববার সংগঠনের এজিএম পরবর্তী নির্বাচনে এই ঘোষণা দেয়া হয়। একই সাথে ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটির সর্বমোট ১২৯ জনকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে সরাসরি নির্বাচিত হয়েছেন ১১৭ জন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে নির্বাচন কমিশন বিসিএ ২০২৩-২৫ নির্বাচনে সাফরণ প্যানেলকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী ঘোষণা করে।
তবে নির্বাচনকে ঘিরে সদস্যপদ নিয়ে নানা অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করেছে প্রতিদ্বন্ধী পক্ষ। জানা গেছে, এদিন এজিএম-এ উপস্থিত হয়ে অনিয়মগুলো তুলে ধরে প্রতিবাদ জানিয়ে এজিএম ও নির্বাচন বয়কট করে বেরিয়ে যান প্রতিদ্ব›দ্বী প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী সাইদুর রহমান বিপুল।
তিনি সংগঠনটির বার্ষিক সাধারণ সভার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠা সত্ত্বেও এক তরফাভাবে এজিএম সম্পন্ন করার অভিযোগ করেছেন। সদস্যপদ নিয়ে গুরুতর অভিযোগ এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ মাথায় নিয়ে একতরফাভাবে বিতর্কিত এক নির্বাচনে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করা হয়েছে বলে দাবী করেছেন বিদায়ী কমিটির প্রধান কোষাধ্যক্ষ সাইদুর রহমান বিপুল।
এদিকে, বিসিএর প্রেসিডেন্ট এম এ মুনিম ওবিইর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী জেনারেল মিটু চৌধুরী ও ডেপুটি সেক্রেটারী জেনারেল মুজিবুর রহমান ঝুনুর সঞ্চালনায় মাগদাদ খানের পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ওই এজিএম শুরু হয়।
এজিএম-এ স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিএর প্রেসিডেন্ট এম এ মুনিম ওবিই। বিসিএর বিগত বছরের কার্যক্রমের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন বিসিএর এর সেক্রেটারী জেনারেল মিঠু চৌধুরী।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিসিএর সাবেক প্রেসিডেন্ট পাশা খন্দকার এমবিই ও এম এ কামাল ইয়াকুব, এনইসি মেম্বার আ. স. ম বাবলা, মেম্বারশীপ সেক্রেটারী ইয়ামিন দিদার, প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারী ফরহাদ হোসেন টিপু, ভাইস প্রেসিডেন্ট যথাক্রমে ফজল উদ্দিন,ফায়জুল হক, সৈয়দ হাসান, কামরুজ্জামান জুয়েল, মানিক মিয়া, কাউন্সিলার পারভেজ আহমদ, নাজ ইসলাম, শহিদুল হক চৌধুরী, শেলু মিয়া, আব্দুল হাই, জয়েন্ট চিফ ট্রেজারার আবজল হোসেন প্রমুখ।
বিসিএ ২০২৩-২৫ নির্বাচনে নিবাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ হাসান এমবিই, নির্বাচন কমিশনার ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন ও মো. আজিজ চৌধুরী।
উল্লেখ্য, ৫ অক্টোবর ছিল বিসিএর নির্বাচনের অংশগ্রহণের জন্য নমিনেশন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। নির্বাচনের জন্য ৫ অক্টোবর সাফরণ প্যানেল তাদের নমিনেশন জমা দেয়। নির্বাচন কমিশনে শুধু একটি প্যানেল জমা পড়ে। বিসিএর সাংবিধানিক নিয়মে ১৫ অক্টোবর রবিবার লন্ডনের ইম্প্রেশন ইভেন্টস হলে শুধুমাত্র একটি প্যানেল (সাফরণ) জমা পড়ায় নির্বাচন কমিশনারবৃন্দ সাফরণ প্যানেলকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
লন্ডনের ইম্প্রেশন ইভেন্টস হলে অনুষ্ঠিত এই এজিএম এবং নির্বাচনে দায়িত্বশীল কমিটি সাড়ে চার শতাধিক বিসিএ সদস্যের উপস্থিতি দাবি করলেও অনিয়মের অভিযোগকারীরা দাবী করছেন দুইশরও কম সদস্য ওই এজিএম-এ উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগকারীরা বলছেন, এজিএম-এর কোনো নিয়মেরই তোয়াক্কা করা হয়নি।
বিদায়ী কমিটির প্রধান কোষাধ্যক্ষ সাইদুর রহমান বিপুল সাপ্তাহিক পত্রিকাকে বলেছেন, বিসিএ-এর সংবিধানের ধারা ২৮ ও ২৯ মতে, এজিএম-এ কোরাম পূর্ণ করতে হলে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ সাধারণ সদস্যের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। সভা শুরু হওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে এই কোরাম পূর্ণ হতে হবে। কোরামপূর্ণ না হলে এজিএম স্থগিত করে নতুন করে এজিএম-এর তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কিন্তু ১৫ অক্টোবর যে এজিএম হয়েছে সেখানে বিসিএ-এর কোরাম কোনোভাবেই পূর্ণ হয়নি। অতিথিসহ সেখানে উপস্থিতি ছিলো ২শরও কম। কোরাম পূর্ণ হতে কমপক্ষে ৩৮০ জন সদস্যের উপস্থিতি প্রয়োজন ছিলো। এজিএম-এ সাধারণ সদস্য ছাড়া অন্য কেউ উপস্থিত থাকার কথা নয়। কিন্তু বহিরাগতদের উপস্থিতি এবং অতিথি ও নির্বাচন কমিশনারদের মঞ্চে নিয়ে বিতর্কিত এই এজিএম করা হয়েছে। এজিএম-এ কোনো আর্থিক প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়নি, যা যে কোনো এজিএম-এর প্রধান আলোচ্য বিষয়।
কোষাধ্যক্ষ সাইদুর রহমান বিপুল বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে সদস্যপদ নিয়ে নানা অভিযোগে আমরা নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেই। ওইদিন এজিএম-এ উপস্থিত থেকে আমি ব্যক্তিগতভাবে সকল অনিয়মগুলো তুলে ধরে প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং এজিএম ও নির্বাচন বয়কট করে বেরিয়ে আসি। কিন্তু তারা প্রতিদ্ব›িদ্বতাহীন একতরফা কমিটি ঘোষণা করেছেন। এটা কোনোভাবেই উচিত কাজ হয়নি। আমরা আশাকরি তারা দ্রæত গ্রহণযোগ্য ও বৈধ এজিএম এবং নির্বাচনের আয়োজন করবেন। শীঘ্রই সাংবাদিক সম্মেলন করে এসব অনিয়মের কথা তুলে ধরবেন বলে জানান তিনি।