লণ্ডন, ৪ এপ্রিল: রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, কুটনীতিক, পুলিশ ও ধর্মীয় নেতাসহ বিভিন্ন কমিউনিটির নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের
সম্মানে বিশেষ ইফতার মাহফিল আয়োজনের মধ্যদিয়ে ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীও উদযাপন করেছে লণ্ডন মুসলিম সেন্টার। গত ২৭ মার্চ বুধবার বিকেলে লণ্ডন মুসলিম সেন্টারের দ্বিতীয়তলায় অনুষ্ঠিত “ব্রিটিশ মুসলিম কমিউনিটি: ফেইথ ইন অ্যাকশন” শীর্ষক এই আয়োজনে প্রায় আড়াইশ অতিথি অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে ইস্ট লণ্ডন মসজিদের সিইও জুনাইদ আহমেদ আগত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে ইফতার মাহফিলে তাদের অংশগ্রহণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বিশেষ করে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ওসমান কোরে এরতাস এবং মালয়েশিয়ান রাষ্ট্রদূত দাতো জাকরি জাফরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
আটটি মুসলিম দূতাবাসের কূটনীতিগণ ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন- বসনিয়া-হার্জেগোভিনার রাষ্ট্রদূত ওসমান টপকাজিক, সুদানী দূতাবাসের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স মোহাম্মদ সালাহ হাসান এবং আলজেরিয়া, সোমালিয়া, পাকিস্তান এবং সোমালিল্যান্ডের দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ। মাহফিলে তারাবীহ ইমাম শায়খ মুহতাজ আল-ঘান্নাম পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন।
ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে পুলিশ, ফায়ার ব্রিগেডের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন কমিউনিটির ধর্মবিশ্বাসী নেতারা একত্রিত হয়েছিলেন। বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সম্প্রীতি রক্ষায় সংলাপ এবং কমিউনিটিতে সংহতি বৃদ্ধিতে মসজিদের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হয়।
জুনায়েদ আহমদ বলেন, আমাদের ধর্মবিশ্বাস নিছক কিছু বিশ্বাসের সমষ্টি নয়, বরং একটি জীবন ব্যবস্থা যা আমাদের কমিউনিটির সেবা করতে এবং দেশ ও বিশ্বে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। তিনি অতিথিদের উদ্দেশে বলেন, “আমরা আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচী যেমন ইন্টারফেইথ সংলাপ, উদ্বাস্তুদের জন্য সহযোগিতা, ফুড ব্যাঙ্ক এবং শিক্ষামূলক কর্মসূচী ইত্যাদির মাধ্যমে সমগ্র সমাজকে উপকৃত করার চেষ্টা করে থাকি।
অনুষ্ঠানে মসজিদের ১১৪ বছরের ইতিহাস প্রদর্শন করে একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। এই মসজিদ একটি মাল্টি-মিলিয়ন পাউণ্ডের কমপ্লেক্স যেখানে ১০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে জামাতে নামাজ পড়তে পারেন। এখানে কমিউনিটির জন্য প্রায় ৩০টি প্রকল্প পরিচালিত হয়। ইস্ট লণ্ডন মসজিদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডক্টর আব্দুল হাই মুর্শেদ কমিউনিটিতে মসজিদের ভূমিকার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, “লণ্ডন মুসলিম সেন্টার গত দুই দশক ধরে কমিউনিটির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। লণ্ডনের কেন্দ্রস্থলে সহাবস্থান, সংলাপ এবং কমিউনিটির সেবার একটি কেন্দ্র। এই প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে ওঠবে বলে আমার বিশ্বাস।
তুরস্কের রাষ্ট্রদূত কোরে এরতাস, কমিউনিটিতে অনন্য অবস্থানের জন্য ইস্ট লণ্ডন মসজিদের প্রশংসা করে বলেন, এই স্থানটি সত্যিকারের কমিউনিটির স্থান”।
মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার দাতো জাকরি জাফর মালয়েশিয়ার সাথে মসজিদের দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক উল্লেখ করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ আহমেদ বাদাউই এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমসহ মালয়েশিয়ার নেতাদের মসজিদে আমন্ত্রণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র লুৎফুর রহমান স্থানীয় কাউন্সিলের অমূল্য অংশীদার হিসেবে ইস্ট লণ্ডন মসজিদ এবং লণ্ডন মুসলিম সেন্টারের প্রশংসা করেন। টাওয়ার হ্যামলেটসের বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ইস্ট লণ্ডন মসজিদের একটি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, আমার মনে আছে অনেকদিন আগে, “আমাদের বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়াতে আপনারা আমাদেরকে সাহায্য করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেনের সেক্রেটারি জেনারেল জারা মোহাম্মদ যুক্তরাজ্যের মুসলমানদের একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আশা প্রকাশ করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি