লণ্ডন, ১২ আগস্ট: লণ্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ৪৯তম জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি বাতিল এবং এর কার্যালয় থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি অপসারণের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে গভীর হতাশা প্রকাশ করে এর নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংগঠন ৭ই মার্চ ফাউণ্ডেশন। পাশাপাশি পৃথক একটি বিবৃতিতে সংগঠনটি বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে এই সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, “আমরা এই পদক্ষেপকে প্রতিহিংসাপরায়ণ এবং বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের সম্পূর্ণ পরিপন্থী হিসেবে দেখি। এতে আরো বলা হয়, জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি বাতিল করা এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতি অপসারণ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে জানার সুযোগ থেকে বাঙালিদের প্রজন্মকে বঞ্চিত করার একটি ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা।
এই পদক্ষেপকে বিভেদমূলক আখ্যা দিয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, আমরা বিশ্বাস করি যে এই কর্মগুলি মৌলিকভাবে জাতীয় ঐক্য এবং পুনর্মিলনের চেতনার বিরোধিতা করে যখন আমাদের জাতির এটি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, “বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশী দূতাবাস ও হাইকমিশনসহ সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি যথাযথভাবে ও সম্মানের সাথে প্রদর্শন করা নিশ্চিত করুন। রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি উভয় পর্যায়েই ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস অব্যাহতভাবে পালনের নিশ্চয়তা দিন। ৭ই মার্চ ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার সংরক্ষণ এবং জাতীয় ঐক্যের উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকে সম্মান জানাতে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই।”
এ বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের বক্তব্য জানতে চেয়ে পত্রিকার পক্ষ থেকে ইমেইল করা হলেও সোমবার রাত পর্যন্ত কোন জবাব পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলার প্রতিবাদ
অন্য এক বিবৃতিতে ৭ মার্চ ফাউণ্ডেশন বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, জাদুঘরে রূপান্তরিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাবেক বাসভবনটি আমাদের ইতিহাস ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে। বাড়িটি কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলের নয়। এটি এখন বাংলাদেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীর একটি জাতীয় সম্পত্তি। ২০০৯ সালে, রাজউক (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) জাদুঘরটিকে জাতীয় ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে ঘোষণা করে। সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, এসব জাতীয় ঐক্য ও সমঝোতার চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। আমরা এই প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ডের কঠোরতম ভাষায় নিন্দা জানাই। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এই ঘৃণ্য অপরাধের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনুন, অবিলম্বে যাদুঘর সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধার শুরু করুন এবং টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসহ দেশের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত সকল স্থান ও জাদুঘরের পূর্ণ সুরক্ষা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করুন।