সহকর্মীদের আবেগঘন স্মৃতিচারণ
সারওয়ার-ই আলম ♦
লণ্ডন, ১২ এপ্রিল: সহকর্মীদের ভালবাসায় ও কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত হয়ে ১৩ই এপ্রিল শনিবার ইস্ট লণ্ডনের গার্ডেন্স অব পিসে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও শিক্ষক, ব্রিটিশ-বাংলাদেশী কমিউনিটির প্রিয়মুখ সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই। দীর্ঘ নয় বছর বোন ম্যারো (মাল্টিপল মাইলোমা) ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে গত ১২ই এপ্রিল শুক্রবার রাত আড়াইটায় লণ্ডনের গাই’স হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর।
শনিবার বেলা পৌনে চারটায় সমাহিত হওয়ার আগে ইস্ট লণ্ডন মসজিদে বাদ জোহর তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তাঁর পরিবারের সদস্যবৃন্দ, টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুতফুর রহমান এবং লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের তাঁর দীর্ঘদিনের সহকর্মীবৃন্দ ছাড়াও কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এর আগে সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত তাঁর মরদেহ ব্রিকলেন মসজিদে সর্বসাধারণের দেখার জন্য রাখা হয়। প্রিয় মানুষটিকে শেষবারের মত দেখতে এসে শোকাহত সহকর্মীদের অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ব্রিকলেন মসজিদে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উদয় শংকর দাশ, আবু মুসা হাসান, সৈয়দ নাহাস পাশা, মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, মাহী ফেরদৌস জলিল, মুহাম্মদ জুবায়ের, দিলু নাসের, মোস্তফা কামাল মিলন, কামাল মেহেদী, উর্মি মাযহার, মিল্টন রহমান, তৌহিদ শাকিল, সৈয়দ আনাস পাশা, মিজানুর রহমান মিজান, কাইয়ুম আবদুল্লাহ, রেজাউল করিম মৃধা, বুলবুল হাসান, রূপি আমিন, মোস্তাক আলী বাবুল, তানভির আহমদ, আলাউর রহমান শাহিন, আজিজুল হক কায়েস প্রমুখ।
এ সময় মরহুমের বড়ছেলে সাবাব তাঁর পিতার জন্য এবং ছোট ভাই পিণ্টু তাঁর বড় ভাইয়ের জন্য দর্শনার্থীদের কাছে দোয়া কামনা করেন।
বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের বিভিন্ন সময়ে সৈয়দ আফসার উদ্দিন বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস রেডিওর বাংলা বিভাগে এবং ভয়েস অব আমেরিকা রেডিওর লণ্ডন প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন।
১৯৯৯ সালে তিনি ব্রিটেনের প্রথম বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল- বাংলা টিভিতে সংবাদ পাঠক হিসেবে কাজ শুরু করেন। সে সময় সংবাদ পাঠে তাঁর স্বকীয়তা সুধীমহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে তিনি চ্যানেল এসে সংবাদ পাঠক হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং মৃ্ত্যুর আগ পর্যন্ত চ্যানেলটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নিজ পেশার প্রতি এতটা নিষ্ঠাবান ছিলেন যে ক্যান্সারের চিকিৎসাধীন অবস্থায়ও বিভিন্ন সময়ে তাঁকে টেলিভিশনে সংবাদ পাঠ করতে দেখা যায়। সংবাদ পাঠে তাঁর উচ্চারণ, বাচনভঙ্গি ও উপস্থাপনা সুধী মহলের ব্যাপক প্রশংসা লাভ করে।
বিলেতে বাংলাদেশী-ব্রিটিশ কমিউনিটিতে, বিশেষ করে বাংলা গণমাধ্যমে বাংলা ভাষার সঠিক চর্চা ও বিকাশে সৈয়দ আফসার উদ্দিন সক্রিয় ছিলেন। বাংলা ভাষা ও বিভিন্ন সামাজিক বিষয় নিয়ে সাপ্তাহিক পত্রিকায় প্রকাশিত তাঁর কলামসমূহ পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করে। এছাড়া তিনি বিলেতের অন্যান্য বাংলা সংবাদপত্র এবং ৫২বাংলা অনলাইন পোর্টালে লেখালেখি করতেন। ব্রিটেনের মূলধারার স্কুল ও কলেজের কারিক্যুলামে বাংলা ভাষা শিক্ষা বহাল রাখার জন্যে ১৯৯৩ সাল থেকে বিভিন্ন আন্দোলনে তিনি তৎপর ছিলেন।
দীর্ঘ সাতাশ বছর সৈয়দ আফসার উদ্দিন লণ্ডনের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে বাংলা ভাষা শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। কমিউনিটিতে তাঁর এই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২০ সালে তিনি ব্রিটিশ রাণী কর্তৃক প্রদত্ত মেম্বার অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এমপায়ার- এমবিই উপাধি লাভ করেন।
এছাড়া কমিউনিটিতে বাংলা ভাষা শিক্ষা এবং ব্রিটেনের বাংলা গণমাধ্যমে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২২ সালে তিনি ‘ফ্রীম্যান অব দ্য সিটি অব লণ্ডন’ সম্মাননা, একই বছর বাংলাদেশী-ব্রিটিশ হুজ হু পদক এবং ২০২৪ সালে লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের দেয়া আজীবন সম্মাননা পদক লাভ করেন।
তিনি ২০১৭ সালে সেরা পুরুষ সংবাদ উপস্থাপক হিশেবে “ইস্টউড” পুরস্কার পান। ২০১৯ সালে ব্রিটেনের অনলাইন সংবাদ পোর্টাল ৫২ বাংলা টিভি সৈয়দ আফসারকে ব্রিটেনে শিক্ষা, সাংবাদিকতা, ও কমিউনিটি সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য “৫২ বাংলা টিভি বিশেষ সম্মাননা অ্যাওয়ার্ড ২০১৯” প্রদান করে। একই বছর সানরাইজ টুডে অনলাইন টিভি সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য তাকে বিশেষ সম্মাননা অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে।
সৈয়দ আফসার উদ্দীনের জন্ম ১৯৬৫ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর ঢাকায়। ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভের পর সৈয়দ আফসার উদ্দিন দৈনিক ইত্তেফাকে ক্রীড়া সাংবাদিক হিশেবে এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করেন।
সদালাপী, বন্ধুবৎসল ও স্নিগ্ধ রুচির অধিকারী, কমিউনিটির প্রিয়মুখ সৈয়দ আফসার উদ্দিনের মৃত্যুতে ব্রিটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটিতে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও বন্ধুরা ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণের মাধ্যমে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছেন।
লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সদস্য সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই’র মৃত্যুতে ক্লাব নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোক বার্তায় ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ জুবায়ের, সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ ও কোষাধ্যক্ষ সালেহ আহমেদ মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি তাঁর স্বজনদের ধৈর্য্য ধারণের শক্তি দানের জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করেন। নেতৃবৃন্দ মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সহানুভূতি ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন ।
এছাড়া সৈয়দ আফসার উদ্দিনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন ইউকে-বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আনসার আহমেদ উল্লাহ্, সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমদ ও কোষাধ্যক্ষ কে এস এম আশরাফুল হুদা। এক শোকবার্তায় রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতৃবৃন্দ মরহুমের রূহের শান্তি কামনা করে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
সৈয়দ আফসার উদ্দিনের বাংলাদেশে পৈতৃক নিবাস ছিলো চট্টগ্রামের মিরশ্বরাই উপজেলার চিনকি আস্তানা “তাকিয়া বাড়ি” (সৈয়দ বাড়ি)। জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। সৈয়দ আফসার উদ্দিন স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে লণ্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন।
সহকর্মীদের স্মৃতিচারণ
সৈয়দ আফসার উদ্দিনকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাপ্তাহিক জনমতের সাবেক সম্পাদক নবাব উদ্দিন বলেন, আফসার ভাই ছিলেন প্রকৃত অর্থেই একজন বিদ্বান ও ভদ্রলোক। ক্যান্সারে আক্রান্ত হলেও তাঁর আকস্মিক মৃত্যুর খবরে আমি গভীরভাবে বেদনাহত হয়েছি। আজ মনে পড়ছে সেসব দিনের কথা যখন তিনি জনমত পত্রিকায় ক্রীড়া বিষয়ক কলাম লিখতেন। সর্বশেষ তাঁর সঙ্গে যখন কথা হয় তিনি বিলেতে বাংলা ভাষার চর্চা ও বিকাশে তাঁর ভাবনা ও স্বপ্নের কথা বলেছিলেন। আমি ভাবতেই পারিনি আফসার ভাই আমাদেরকে ছেড়ে এত দ্রুত চলে যাবেন। আমি পরম করুণাময়ের কাছে তাঁর আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।
লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সদ্যবিদায়ী সভাপতি ও সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, তাঁর সাথে আমার বন্ধুত্ব তিন দশকের। অসাধারণ সৌজন্যেবোধের অধিকারী ছিলেন তিনি। সাপ্তাহিক সুরমায় এক সময় লিখতেন। সাপ্তাহিক পত্রিকায়ও তিনি বেশ কিছু দিন কলাম-প্রবন্ধ নিয়মিত লিখেছেন। শিক্ষকতা কিংবা লেখালেখি যা-ই করতেন পরম নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা নিয়ে করতেন। যে কাজে হাত দিতেন তাতে নিজের সর্বোচ্চ ঢেলে দিতেন। আমার মনে হয়, উৎকর্ষের জন্য সাধনা ছিলো তাঁর জীবনের একটি ব্রত। এটি ছিলো তাঁর বিশেষ একটি গুণ। নয় বছর ক্যান্সার নিয়ে বেঁচে থাকা সহজ নয়। কিন্তু ইতিবাচক চিন্তা আর প্রচণ্ড মনোবলের অধিকারী আফসার উদ্দিন মহান আল্লাহর ওপর সম্পূর্ণ ভরসা রেখেই মরণঘাতি রোগের বিরুদ্ধে প্রায় এক দশক সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। আমি তাঁর রূহের মাগফেরাত কামনা করি এবং তাঁর পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
চ্যানেল এস-এ সৈয়দ আফসার উদ্দিনের সহকর্মী ও লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ জুবায়ের ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, আফসার ভাই ব্যক্তি মানুষ হিসেবে ও পেশাদার হিসেবে আমার কাছে থাকবেন অনন্য উচ্চতায়। ১২ দিন আগে তাঁর সাথে শেষ দেখা। একান্তে সময় কাটালাম প্রায় ২০/২৫ মিনিট। তারপর আলাপ ছিল মৃত্যুর ২/৩দিন আগেও। মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়েও সাহসী ছিলেন তিনি। হাসি ছিল তার মুখ জুড়ে। নিউজ প্রেজেণ্টার হিসেবে তিনি ছিলেন অনন্য। পোশাক–আশাক, সঠিক ও দৃপ্ত উচ্চারণ, কণ্ঠস্বরের ওঠানামা নিয়ন্ত্রণ এবং প্রাণখোলা হাসিমাখা মন নিয়ে তিনি ছিলেন সেরা। এই যোগ্যতা নিয়ে তিনি কখনোই বড়াই করতেন না। সরল মন নিয়ে সবার সাথে মিশতে পারতেন তিনি।
চ্যানেল এস-এ সৈয়দ আফসার উদ্দিনের সহকর্মী, বিশিষ্ট টেলিভিশন সংবাদ পাঠক ও কবি তৌহিদ শাকিল বলেন, দীর্ঘদিনের বন্ধু, আফসার ভাই একজন দৃঢ়চিত্তের মানুষ, স্পষ্টভাষী সহকর্মী এবং সমাজ-হিতৈষী বন্ধু, যিনি তার কমিউনিটি এবং দেশের জন্য নিজের সর্বোত্তম প্রয়াস দিয়ে কাজ করে গেছেন। চ্যানেল এস টেলিভিশনের এই সিনিয়র সংবাদ উপস্থাপকের অনন্য গুণ হল ফোকাস, সহযোগিতা আর শ্রদ্ধাবোধ। সমমনা মানুষ পেলে তিনি আরো বেশী বিকশিত হয়ে যেতেন। এমন মানুষের মানসিক যত্নে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। স্বতন্ত্র ও কেতাদুরস্ত সংবাদ উপস্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশী-ব্রিটিশদের হৃদয় জয় করেছেন। নিজের সংবাদ উপস্থাপনকে আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয় করে তুলেছেন তাঁর চলনে-বলনে নিখুঁত, সুশৃঙ্খল, পরিপাটি ও রুচিসম্মত ভাব-মূর্তির সুনিশ্চিত ছাপ রেখে। কর্মজীবনে হাজার হাজার লাইভ নিউজ প্রোগ্রামের অভিজ্ঞতা হয়েছে। তার উপস্থাপন শৈলী পঁয়ত্রিশ বছর আগের মতোই জনপ্রিয় এবং এর জন্য তিনি ‘মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমীন’ আর নিজের দর্শকদের কাছে কৃতজ্ঞ।
চ্যানেল এস-এর ফাউণ্ডার নিউজ এডিটর ও সিনিয়র নিউজ কাস্টার শহীদুল ইসলাম সাগর বলেন, বয়সে বড় হলেও আফসার ভাই ছিলেন আমার প্রিয় বন্ধু। চ্যানেল এস-এ দীর্ঘ ১৮ বছর এবং ওকল্যাণ্ড সেকেণ্ডারী স্কুলে ৭ বছরেরও বেশী একসাথে কাজ করেছি। অসংখ্য স্মৃতি কোনটা শেয়ার করবো বুঝতে পারছিনা। আজ শুধু শেষ দিনের কথা-ই বলি। তাঁর সাথে শেষ কথা হয় গত বুধবার ঈদের দিন সকাল ১১টায়। আমাকে ঈদ মোবারক জানিয়ে ফোনে খুব ক্ষীণ কণ্ঠে বললেন, সাগর ভাই, ডাক্তার আমাকে বলেছেন আমার সময় আর নেই, আমি যেন বাসায় চলে যাই। দোয়া করবেন, বলে ফোন রেখে দিলেন। পরিবারিক ব্যস্ততার কারণে ঈদের দিন হাসপাতালে যেতে পারিনি। পরেরদিন চ্যানেল এস এর সাবেক নিউজ এডিটর ও বর্তমান সিনিয়র নিউজ কাস্টার তৌহিদ শাকিল ভাইয়ের সাথে লণ্ডনের গাইস হসপিটালে গিয়ে দেখি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন প্রিয় আফসার ভাই। তাঁর এই ঘুম আর ভাঙ্গল না। আফসার ভাই আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন বুঝেছিলাম কিন্তু এত তাড়াতাড়ি যাবেন ভাবিনি।
প্রিয় বন্ধুকে হারানোর এই বেদনা সত্যি অসহনীয়। আফসার ভাইয়ের ইচ্ছে ছিল জুম্মাবারে মৃত্যুবরণ করার। আল্লাহ তাঁর চাওয়া পূরণ করেছেন ।