গাজীউল হাসান খান ♦
অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড থেকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসলামি অবরোধ আন্দোলন হামাসের কতিপয় সদস্যের ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের অভ্যন্তরে এক ঝটিকা আক্রমণের পর থেকে তারা এ পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৬৫ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশুকে নির্বিচারে হত্যা করেছে। জাতিসংঘের একটি বিশেষ কমিটি ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আরো বেশ কিছু মানবাধিকার সংগঠন সেটাকে ইসরাইলের গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে।
শুধু তাই নয়, বিগত ২৩ মাসে ইহুদি দখলদাররা গাজার প্রায় আড়াই লাখ অবরুদ্ধ মানুষকে এক চরম দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ক্রমাগত স্থানান্তরিত করেছে গাজা ভূখণ্ডের উত্তর থেকে দক্ষিণে কিংবা এক স্থান থেকে অন্যত্র। তাদের নেই কোনো আশ্রয়কেন্দ্র, স্বাস্থ্যসেবা, কিংবা পানীয় জলের ব্যবস্থা।
দখলদার ইহুদিবাদীরা গাজাবাসীকে অবিলম্বে নিজ ভূখণ্ড ত্যাগ করে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এমন একটি অবস্থায় একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কিংবা শান্তিচুক্তিতে পৌঁছার জন্য মধ্যস্থতাকারী প্রতিবেশী আরব দেশ কাতারের ওপর আকাশপথে জঙ্গি বিমান থেকে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এমন একটি পরিস্থিতিতেও তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদে গর্জে ওঠেনি প্রতিবেশী অন্যান্য আরব রাষ্ট্রগুলো।
ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরাইলের প্রতিরক্ষাকারী ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্র তাদের যেসব মিথ্যা বয়ান দিচ্ছে, তাই মেনে নিচ্ছে জ্বালানি-সমৃদ্ধ আরব রাষ্ট্রগুলো কিংবা তুরস্ক ও মিসরের মতো সামরিক শক্তিতে বলীয়ান দেশগুলো।
বিধ্বস্ত গাজায় যখন উপর্যুপরি হামলা কিংবা মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারে জঙ্গি বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ চালানো হচ্ছিল, ঠিক তখনই যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক নগরীতে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে বসেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন। সেখানে কয়েক দিনের মধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে শুরু হবে বিভিন্ন রাষ্ট্র কিংবা সরকারপ্রধান অথবা তাদের মনোনীত প্রতিনিধিদের বক্তব্য প্রদান।
কিন্তু জাতিসংঘের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রে হওয়ায় বহিরাগত প্রতিনিধিদলকে সে দেশটির কাছ থেকে ভ্রমণ ভিসা নিতে হয়। কিন্তু এবার যুক্তরাষ্ট্র সরকার ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের অধিবেশনে যোগদানের জন্য ভিসা প্রদান করতে অস্বীকার করেছে। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ভিসা প্রত্যাবর্তনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আব্বাসসহ ফিলিস্তিন প্রতিনিধিদলের ৮০ জনের ভিসা জাতিসংঘের অধিবেশনের আগে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল ও তার প্রতিরক্ষাকারী যুক্তরাষ্ট্র হয়তো চায় না মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিরা এবার তাদের অধিকারের প্রশ্নে জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে কোনো কথা বলুক, কিংবা এ ব্যাপারে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি করুক।
ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের নেতা পরলোকগত ইয়াসির আরাফাতকেও ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে প্রয়োজনীয় ভিসা প্রদান করা হয়নি। তখন সেই অগ্নিপুরুষ আরাফাত ও অন্যান্য প্রতিবাদী কূটনীতিকরা জাতিসংঘের সেই নির্ধারিত অধিবেশন নিউইয়র্ক থেকে জেনেভায় স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছিলেন। ফিলিস্তিন জাতিসংঘের পূর্ণাঙ্গ সদস্য রাষ্ট্র না হলেও তাকে পর্যবেক্ষকের সব মর্যাদা নিশ্চিত করা হয়েছে।
চলতি বছরের গত মার্চ পর্যন্ত ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৫০টি রাষ্ট্র স্বীকৃতি প্রদান করেছে। যুক্তরাজ্য ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা এখন যেকোনো সুবিধাজনক সময়ে প্রদান করা হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিন সমস্যার একটি দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান খুঁজে পেতে সম্প্রতি একটি শক্তিশালী মতামত তৈরি হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জোর সমর্থক ছিলেন।
কিন্তু বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদীদের ‘পকেটের লোক’ হিসেবে পরিচিত। তিনি ইহুদিবাদী ইসরাইলের সমর্থন নিয়ে নির্ঝঞ্ঝাটে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চান। ট্রাম্প যেমন বর্ণবিদ্বেষী, তেমনি সাম্প্রদায়িক হিসেবেও তার ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালানি-সমৃদ্ধ শাসকদের অর্থবিত্ত ও অস্ত্র ব্যবসায়ের জন্যই ট্রাম্প মূলত তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে চান রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে নয়। সেক্ষেত্রে তিনি ইহুদিবাদীদের নির্ভরযোগ্য সহায়ক শক্তি।
ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল ও ট্রাম্পের দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক ফিলিস্তিন সমস্যা সমাধানের বিরোধিতাকে পাশ কাটিয়ে মধ্যপ্রাচ্য একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ খুঁজে পাওয়ার জন্য বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল, কানাডা, মাল্টা, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স এবার জাতিসংঘের ৮০তম অধিবেশন চলাকালে ফিলিস্তিনিকে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের প্রস্তুতি নিয়েছে। এদের মধ্যে কৌশলগত কারণে যুক্তরাজ্য পরে ঘোষণা দিলেও ফ্রান্স নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিলে সম্পূর্ণ পরিস্থিতিটি অতি দ্রুত পরিবর্তিত হবে বলে অনেকে মনে করেন।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যরা সম্মিলিতভাবে কোনো রাষ্ট্রের পূর্ণ সদস্যপদের জন্য একমত না হলে সে রাষ্ট্র তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না। ফিলিস্তিনের ব্যাপারে ভেটো দিতে পারে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্র। এ ব্যাপারে সবকিছু ঠিকঠাকমতো এগিয়ে গেলে অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি) এবং আরব লিগের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বসতে বাধ্য হবেন।
নতুবা সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, মিসর, এমনকি তুরস্কেরও ট্রাম্পের প্রভাব বলয় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাতে যুক্তরাষ্ট্র অর্থনীতি, বাণিজ্য ও সামরিক দিক থেকে যথেষ্ট কোণঠাসা হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কোনোমতেই সামাল দিতে পারবেন না। তাছাড়া ডলারের প্রভাব ও প্রচলন ধরে রাখতে হলে তেল বা জ্বালানিসমৃদ্ধ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত ও আরব রাষ্ট্রগুলোর এ মুহূর্তে কোনো বিকল্প নেই।
ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরাইল ক্রমে ক্রমে এখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অসহনীয় বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সে কারণেই সৌদি আরব প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে স্পষ্টভাবে সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিন সমস্যার দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক কোনো সমাধান না হলে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইসরাইলের সঙ্গে অর্থবহ কোনো চুক্তি বা সমঝোতা সম্ভব হবে না। ফিলিস্তিনে হত্যাযজ্ঞ, অবৈধ বসতি নির্মাণ, ভূমি দখল কিংবা অবরোধ সৃষ্টি করার অবৈধ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে ছয় থেকে সাত লাখ ইহুদি বাস করলেও ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প-কারখানা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় এবং কংগ্রেস পর্যায়ে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে। তারাই মূলত নিয়ন্ত্রণ করে মূলধারার গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রগুলো। সে কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সরকার কিংবা হোয়াইট হাউসেও তাদের যথেষ্ট প্রভাব-প্রতিপত্তি লক্ষ করা যায়।
এখন সর্বত্র একটি পরিবর্তনের ধারা লক্ষ করা যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ বিবেকবান মানুষের মধ্যে। তারা কট্টর ইহুদিবাদী ধ্যান-ধারণার বশবর্তী নয়। সেসব ধ্যান-ধারণা অনেকেই এখন লালন-পোষণ করে না। জর্ডান নদী থেকে ভূমধ্যসাগরের উপকূলব্যাপী ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলে বিস্তৃত হতে হবে সেটা অনেকেই এখন নীতিগতভাবে বিশ্বাস করে না। সবাই চায় সর্বত্র মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক।
জাতিসংঘের গৃহীত প্রস্তাব ১৮১ অনুযায়ী, ১৯৪৭ সালের ব্রিটিশ ম্যান্ডেটকে বিভক্ত করে ফিলিস্তিনকে আরব ও ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে দুটি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। প্রস্তাবিত আরব রাষ্ট্রকে মূল ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের ১১ হাজার ৫৯২ স্কয়ার কিলোমিটার অর্থাৎ ৪২ দশমিক ৮৮ শতাংশ আর ইহুদি রাষ্ট্রকে ১৫ হাজার ২৬৪ স্কয়ার কিলোমিটার, অর্থাৎ ৫৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের অধীনস্থ ভূমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। আরবরা সে বিভাজন প্রত্যাখ্যান করে।
অন্যদিকে ইহুদিরা ডেভিড বেনগুরিয়নের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালের ১৫ মে একতরফাভাবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করে এবং যুক্তরাষ্ট্র তাৎক্ষণিকভাবে সে রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি প্রদান করে। তখন থেকেই ফিলিস্তিনি অর্থাৎ স্থানীয় আরবদের সঙ্গে ইহুদিবাদীদের সংঘর্ষ শুরু হয় এবং পর্যায়ক্রমে তা পরিকল্পিত যুদ্ধে পরিণত হয়। সে ধারাবাহিকতায় ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর, জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকা দখল করে নেয়। কিন্তু তার আগেই অর্থাৎ ১৯৫০ সালের মধ্যেই সম্প্রসারণবাদী ইহুদিরা
ফিলিস্তিনের জন্য নির্ধারিত ৫০ শতাংশেরও বেশি জমি বিভিন্ন কৌশলে দখল করে নেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, ফিলিস্তিন নামক রাষ্ট্র গঠনের জন্য কোনো নিষ্কণ্টক ভূমি খুঁজে পাওয়া যাবে না। সে অবস্থার ধারাবাহিকতায় অর্থাৎ ১৯৮৮ সালে নবগঠিত প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগানাইজেশনের (পিএলও) নেতৃত্বে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। তার অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসির আরাফাত এবং তারই নেতৃত্বে পিএলও ১৯৯৩ সালে হোয়াইট হাউসের তৎকালীন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী আইজ্যাক রবিনের সঙ্গে অসলো চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
তাতে প্যালেস্টাইন অথরিটি বা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে পশ্চিম তীর ও গাজা ভূখণ্ডের সীমিত শাসনভার লাভ করে পিএলও। কিন্তু বিভিন্ন দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধের কারণে শেষ পর্যন্ত তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের ক্ষমতা থেকে বিদায়ের আগে ক্যাম্প ডেভিডে ইসরাইল সরকার ও পিএলও’র মধ্যে যে শীর্ষ আলোচনার ব্যবস্থা করেছিলেন, সেটি ফলপ্রসূ হয়নি। সে আলোচনায় ইসরাইলের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইহুদ বারাক ও পিএলও চেয়ারম্যান ইয়াসির আরাফাত প্রায় তিন-চার দিন একনাগাড়ে আলোচনা চালিয়ে যান। কিন্তু শরণার্থী প্রত্যাবাসন এবং বেশ কিছু ভূমি বিনিময়ের প্রশ্নে আরাফাত আলোচনা থেকে বিদায় নেন।
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। ইসরাইলের বর্তমান ইহুদিবাদী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন সমস্যার দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানে বিশ্বাসই করেন না। তিনি এক বৃহত্তর ইহুদিবাদী ইসরাইলের রাষ্ট্র গড়ে তুলতে নিবেদিতপ্রাণ। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ও ইহুদি ধনকুবেরদের মধ্যে তার প্রভাব অসামান্য। এ অবস্থায় জাতিসংঘের চলতি অধিবেশনকে কেন্দ্র করে বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ চিন্তাশীল রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের ফিলিস্তিন সমস্যার দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ করা না গেলে বর্তমানের এ অস্থির বিশ্ব দ্রুত এক বিস্তৃত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হতে পারে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রোসেনচেজ সম্প্রতি বলেছেন, ২৩ মাস স্থায়ী ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ কারো আত্মরক্ষার্থে পরিচালিত হয়নি। এ যুদ্ধ এক নিরস্ত্র ও অধিকারবঞ্চিত বিশাল জনগোষ্ঠীকে পরিকল্পিতভাবে নিশ্চিহ্ন করার যুদ্ধ। এ যুদ্ধ মানবতার বিরুদ্ধে সমস্ত আইনের লঙ্ঘন। বিশ্ব মানবসমাজ এ যুদ্ধ থামাতে দুঃখজনকভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। যেকোনোভাবেই হোক এ যুদ্ধ, এ গণহত্যা থামাতেই হবে। জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনকে কেন্দ্র করে সব কায়েমি স্বার্থ বাদ দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে।
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ‘প্যালেস্টাইন এক সংগ্রামের ইতিহাস’ গ্রন্থের প্রণেতা