লণ্ডন, ১৫ জানুয়ারি: সিলেট সরকারি অগ্রগামী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুন আরা যুক্তরাজ্যে ইন্তেকাল করেছেন। গত ৭ জানুয়ারি বার্মিংহামের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
গত শুক্রবার কভেন্ট্রি রোড মসজিদে জুমার নামাজের পর জানাজা শেষে তাকে বার্মিংহামের স্থানীয় মুসলিম কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর হঠাৎ বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে শামসুন আরাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। ওই সময় তাঁর হৃদরোগজনিত সমস্যা ধরা পড়লে, সফলভাবে শরীরে দুটি স্টেন্ট ও পেসমেইকার লাগানো হয়। পরবর্তীতে তিনি সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসেন। গত ৭ জানুয়ারী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তখন পানিশূন্যতার কারণে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে পড়ে।
মৃত্যুকালে শামসুন আরা ৬ ছেলে, ৩ মেয়ে এবং নাতি নাতনি সহ বিপুল সংখ্যক গুনাগ্রাহী রেখে গেছেন।। তাঁর প্রয়াত স্বামী প্রকৌশলী আবদুস শহীদ ছিলেন টিএণ্ডটির ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার সিলামের ডালিপাড়া গ্রামে। ইন্তেকালের খবর পেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মরহুমার বড় ছেলে মুশতাক বকুল হোসেইন যুক্তরাজ্যে এসে মায়ের জানাজা ও দাফনকার্যে শরীক হন।
শামসুন আরা দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবন শেষে তিনি যুক্তরাজ্যে এসে স্থায়ী হন। বসবাস করতেন বার্মিংহামে ছোট ছেলে আতিফ টুটুল হোসেইনের সাথে।
১৯৭২ সালে সিলেট সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিশু স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে তিনি তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে ৭৯ সালে বিএড পাশ করে সুনামগঞ্জ গার্লস স্কুলে তিনি শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। এরপর ১৯৮৬ সালে বালিকা বিদ্যালয়ে যোগ দিয়ে প্রায় দেড় দশকের বেশি সময় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন।
চাকুরি থেকে অবসরে যাবার আগে তিনি কিছুদিন সিলেট সদর থানার শিক্ষা কর্মকর্তা হিসাবে্ও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সালে অবসর গ্রহণের পর তিনি বিলাতে ছোট ছেলের কাছে চলে আসেন।
দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে তিনি শিক্ষার আলো বিতরণ করে গেছেন। এদের অনেকেই জীবনে প্রতিষ্ঠিত, ছড়িয়ে আছেন দেশ-বিদেশে। পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুমার ছোট ছেলে আতিফ টুটুল তাঁর মায়ের মাগফেরাতের জন্য সকলের দোয়া কামনা করেছেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি