লণ্ডন, ২৫ সেপ্টেম্বর: টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের বেশিরভাগ ‘লো ট্রাফিক নেইবারহুড’ (এলটিএন) ভুক্ত রাস্তাসমূহে আরোপিত ‘রোড ক্লোজার’ অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বারার নির্বাহী মেয়র। পাশাপাশি কাউন্সিল এলাকার বাতাসের গুণমান উন্নত করতে ৬ মিলিয়ন পাউণ্ড বিনিয়োগ করবে, যার মধ্যে থাকবে জনসমাগমের স্থানগুলোকে উন্নত করার জন্য আরও অবকাঠামো তৈরি করা এবং লোকজনকে হাঁটা এবং সাইকেল চালাতে উৎসাহিত করা এবং আরও গাছ লাগানো। গত ২০শে সেপ্টেম্বর বুধবার কাউন্সিলের কেবিনেট সভায় মেয়র লুৎফুর রহমান কলম্বিয়া রোড, আর্নল্ড সার্কাস এবং বেথনাল গ্রিন- এ ‘রোড ক্লোজার’গুলি (রাস্তা বন্ধ রাখার ব্যবস্থা) সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সমর্থনের কারণে ক্যান রবার্ট স্ট্রিটের রাস্তা বন্ধ রাখা হবে। এছাড়া বাসিন্দাদের সাথে কনসালটেশনে ব্যতিক্রমী সমর্থনের কারণে মেয়র ওয়াপিংয়ে বাস গেইট বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে বারার ৩৩টি স্কুল স্ট্রিটসহ প্রবেশযোগ্য হাঁটার পথ এবং পথচারী স্থানগুলিতে করা উন্নতিগুলিও বজায় রাখা হবে, যেগুলো মূলত স্কুলের শিশুদের নামিয়ে দেয়া এবং তুলে নেয়ার জন্য নির্ধারিত সময়ে রাস্তা বন্ধ রাখার সুবিধা দেবে।
বেথনাল গ্রীন, কলম্বিয়া রোড, আর্নল্ড সার্কাস এবং ব্রিক লেনের রোড ক্লোজারগুলো সরিয়ে ফেলা হবে
বহাল রাখা হয়েছে ওয়াপিং বাস গেইট
৩৩টি ‘স্কুল স্ট্রিট ক্লোজার’ এবং কিছু পায়ে হাঁটা পথ ও সাইকেল রুট বহাল থাকবে
পরিবেশ উন্নয়নে ৬ মিলিয়ন পাউণ্ড বিনিয়োগ করবে কাউন্সিল
উল্লেখ্য, লণ্ডনের অন্যান্য এলাকার মতো ‘লিভেবল স্ট্রিট’ হিসেবে পরিচিত ‘এলটিএন রোড ক্লোজার’-এর উদ্যোগ বিতর্কিত প্রমাণিত হয়েছে, যা বাসিন্দাদের একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে। সর্বশেষ জনগণের সাথে পরামর্শের ফলাফলে দেখা গেছে, এলটিএন-এর আওতাধীন এলাকার টাওয়ার হ্যামলেটসের বাসিন্দাদের প্রায় ৪১.৭% রোড ক্লোজার অপসারণের পক্ষে এবং ৫৭.৩% এগুলো বহাল রাখার পক্ষে। জানা গেছে, জরুরী এবং কিছু কাউন্সিল সার্ভিসগুলোর মধ্যেও এই রোড ক্লোজার সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক বিধিনিষেধগুলো সম্পর্কে বিভক্ত অভিমত রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, লণ্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসেস্ রাস্তা বন্ধের বিরোধিতা করে আসছে। টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, “এলটিএনগুলো লণ্ডনের সবচেয়ে বিতর্কিত ইস্যূগুলির মধ্যে একটি যা স্থানীয় কমিউনিটি এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোকেও বিভক্ত করেছে। একটি ইনার সিটি বারা হিসেবে টাওয়ার হ্যামলেটসে ঘুরে বেড়ানোর উপযোগী জায়গার স্বল্পতার কারণে এই রোড ক্লোজারগুলোর প্রভাব আরও গুরুতর রূপ ধারণ করেছে।”
মেয়র বলেন, এলটিএনগুলো এর আশেপাশে বায়ুর গুণমান উন্নত করলেও এর ফলে যানবাহনগুলোকে অর্থাৎ যানবাহন প্রবাহকে আশপাশের শাখা রোডগুলোতে ঠেলে দেয়, যেখানে সাধারণত কম অবস্থাপন্ন বাসিন্দারা বাস করেন। দেশের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এই বারায় পরিবারগুলোর ঘোরাঘুরির ক্ষেত্রেও এগুলো একটি বাধা।” তিনি বলেন, “ফলাফল হল বিভাজন। যদিও আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম এই স্কিমগুলো সরিয়ে ফেলব। আমি প্রভাবগুলি সম্পর্কে আরও ভাল করে বোঝার জন্য পরামর্শ করতে চেয়েছিলাম।” “আমরা দেখেছি যে উভয় পক্ষের লোকেরা আমাদের পরামর্শের ফলাফলকে ভিন্নভাবে দেখানো চেষ্টা করছেন। শেষ পর্যন্ত আমি মূলত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় টাওয়ার হ্যামলেটসের বাসিন্দাদের মতামত জানতে আগ্রহী।” লুৎফুর রহমান আরো বলেন, “আমাকে এখন মেয়র হিসাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে বিভাজন কোন সমাধান হতে পারে না। আমাদের বায়ুর গুণমান উন্নত করার জন্য আরও ভাল সমাধান খুঁজে বের করতে হবে যা আমাদের বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের একত্রিত করতে পারে।”
তিনি বলেন, “আমরা কিছু সার্বজনীন উপকারী বৈশিষ্ট্য বজায় রাখব, যেমন প্রবেশযোগ্য হাঁটার পথ এবং পথচারী স্থান, নির্ধারিত সময়ে ৩৩টি স্কুল স্ট্রিট বন্ধ রাখার ব্যবস্থা যথারীতি বহাল রাখা। আমরা আমাদের রাস্তাগুলোকে নিরাপদ করতে এবং আমাদের পাবলিক স্পেসগুলোকে উন্নত করতে নতুন পদক্ষেপসমূহে ৬ মিলিয়ন পাউণ্ড বিনিয়োগ করবো।
তিনি আরো বলেন, “আমি আমাদের বাসিন্দাদের এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সাথে নতুন প্রকল্পগুলো নিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যা পরিচ্ছন্ন বায়ু অর্জনের জন্য আরও বেশি লোকজনকে একত্রিত করবে।” রোড ক্লোজারগুলো (রাস্তা বন্ধ রাখার প্রতিবন্ধক ও বিধিব্যবস্থাগুলো) কবে অপসারণ করা হবে সেজন্য এখন কাউন্সিল সময়সূচি নির্ধারণে কাজ করবে।