লণ্ডন, ০৯ অক্টোবর: ঢাকাদক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ দত্তরাইল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন ইউকের উদ্যোগে গত ১লা অক্টোবর রোববার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ঐতিহ্য ও গৌরব ১২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান লণ্ডনের ইমপ্রেশন হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে অ্যালামনাই এসোসিয়েশন ইউকের সভাপতি তছউর আলীর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান শানুর ও মহিলা সম্পাদিকা নাজিয়া আক্তার রেবিনের যৌথ সঞ্চালনায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন এতোয়ার হোসেন মুজিব।
সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি তছউর আলী। পরে সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম নুরু কার্যকরি কমিটির সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেন। পাশাপাশি নিজের কিছু স্মৃতি জাগানিয়া কথা রোমন্থন করেন। অনুষ্ঠানে অ্যালামনাই এসোসিয়েশন ইউকে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন শামীম আহমেদ এবং পুনর্মিলনী সম্পর্কে ডাক্তার মাসুক উদ্দিন বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন। দুই পর্বে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল আলোচনা সভা। দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, একটি জাতিকে বিচার করা হয় শিক্ষা দিয়ে। যে জাতি শিক্ষায় যত এগিয়ে, সভ্যতা বিনির্মাণে তাঁরা ততবেশী স্বয়ংসম্পূর্ণ।
ঢাকা দক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ দত্তরাইলের শিক্ষার্থীরা দেশ বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলছেন তারা। এটাই আমাদের জন্য ঐতিহ্য ও গৌরবের ধারক ও বাহক। আমাদের শিক্ষার্থীরা সমাজ ও দেশের বিভিন্ন জনকল্যাণমুলককাজে অংশগ্রহণ করেছেন। বক্তারা আরো বলেন, বিদেশের মাটিতে আমাদের একখণ্ড ঢাকা দক্ষিণ অ্যালামনাই এসোসিয়েশন ইউকের নাম উজ্জ্বল করেছে। জ্ঞানই শক্তি জ্ঞানই আলো। শিক্ষাই গতি, শিক্ষাই করবে দূর জগতের সকল কালো অধ্যায়। শিক্ষাই পারে তথ্য প্রযুক্তির সঠিক প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে জীবনধারাকে উন্নত থেকে উন্নততর করতে। ঢাকা দক্ষিণ পরগনার মধ্যে প্রথম শিক্ষার জন্য, শিক্ষিত জাতি গঠনের জন্য, এলাকার শিক্ষানুরাগী ও জ্ঞান পিপাসুরা ১৮৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন দত্তরাইল মিডল ইংলিশ স্কুল। প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে রায় বাহাদুর প্রকাশ চন্দ্র দেব চৌধুরী, বাহা উদ্দিন চৌধুরী ও কালী কৃষ্ণ দত্ত চৌধুরী অন্যতম। প্রথম দিন থেকে আজ অবধি ঢাকা দক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কৃষ্টি, সভ্যতা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও গৌরবের ধারক ও বাহক হয়ে নিরলসভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউ হ্যাম কাউন্সিলের কাউন্সিলার মেয়র রহিমা রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বেথনাল গ্রীন এণ্ড বো আসনের সাংসদ রুশনারা আলী এমপি। টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পীকার জাহেদ চৌধুরী, এনফিল্ড কাউন্সিলের কাউন্সিলার ডেপুটি মেয়র আমিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অ্যালামনাই এসোসিয়েশন ইউকে সহ সভাপতি আব্দুল কাদির, আজন উদ্দিন, দেওয়ান নজরুল ইসলাম, কমিউনিটি একটিভিস্ট নুরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার আতাউর রহমান, কবি মুজিবুল হক মনি, সৈয়দ এনামুল হক, আইন বিষয়ক সম্পাদক সলিসিটর কাওসার হোসেন কোরেশি, ব্যারিস্টার তাজ উদ্দিন শাহ, আমিনুল হক জিলু। অনুষ্ঠানে “স্মৃতির আঙিনা” নামক ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করেন বিশিষ্ট ব্যাংকার ও চার্টার একাউন্ট ঢাকা দক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মুহম্মদ আব্দুর রাকিব।
বক্তব্য রাখেন উপকমিটির আহবায়ক ময়নুল ইসলাম ও সহসম্পাদক মাহবুব হোসেন, অর্থ উপকমিটির আহবায়ক ফরিদ আহমদ, অভ্যর্থনা উপকমিটির আহবায়ক সেলিম উদ্দিন চাকলাদার ও রহিম উদ্দিন মুক্তা। অনুষ্ঠানে হাওয়া টিভি ও ডানটন গ্রীল ও স্পাইস এর পক্ষ থেকে যৌথভাবে ক্রেস্ট উপহার দেয়া হয়। ক্রেস্ট গ্রহণ করেন ঢাকা দক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুহম্মদ আব্দুর রাকিব, ডাক্তার মাসুক উদ্দিন, সলিসিটর কাওসার হোসেন কোরেশি, ব্যারিস্টার তাজ উদ্দিন শাহ, শাহীন সামাদের পক্ষে ক্রেস্ট গ্রহণ করেন তার পিতা তছউর আলী, তাহের হামজা’র পক্ষে তার পিতা শফিক হামজা, মতিন হোসেনের পক্ষে তার বড় ভাই আতিকুর রহমান, ডাক্তার ইশরাত হোসেনের পক্ষে তার পিতা আবিদ হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মারুফ আহমেদ। শেষ পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাজিয়া আক্তার রেবিনের নেতৃত্বে ঢাকা দক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মিলে একটি জারী গান পরিবেশন করেন। ব্রিটিশ বাংলাদেশী ক্ষুদে শিল্পী আদিয়ান একটি বাংলা গান পরিবেশন করে।
তারপর পরিবেশিত হয় নৃত্য। গান পরিবেশন করেন শতাব্দী রায়, রানা খান, শংকরী ও বীথি। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বিশেষ করে ম্যানচেস্টার, বার্মিংহাম, লুটন, বর্মমাউথ, ক্যান্ট, সারে শহর থেকে শতাধিক প্রাাক্তন শিক্ষার্থী উপস্থিত হন। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে অনেক সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক, রাজনীতিবিদ ও কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
