☀ We are Hiring ☀

PROJECT COORDINATOR

Bengali Drama: Narratives of Time (1963–2013)
Location: East London
Salary: £36,996 pro rata
Hours: 17.5 per week; Duration:18 months

For an application pack:

Email: info@artswithoutborders.co.uk
Deadline: 8 December 2024, 11:59 pm
Only successful applicants will be contacted
Online Interviews to be conducted on 13 December 2024

বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪

সাময়িকী

মায়াবী রাত

নভেম্বর ১৬, ২০২৩ ২:৫৩ অপরাহ্ণ

|| অঞ্জন নন্দী ||

এখন মাঝরাত। আকাশে বিশাল রূপোর থালার মতো পূর্ণিমার চাঁদ থেকে মোম জোছনা গলে গলে পড়ছে। নিশাচর পাখি আর নেট জগতের মানুষ ছাড়া সবাই ঘুমের দেশে। কুয়াশা ভেদ করে শহরের পথে আয়েশি ভঙ্গিতে একটা বাঘ হেঁটে হেঁটে চলছে। যেনতেন বাঘ নয়, একেবারে রয়েল বেঙ্গল টাইগার। তাগড়া শরীর, জ্বলজ্বলে চোখ, ভ্রুক্ষেপহীন। তার পিঠে সওয়ার হয়ে আছে এক লিকলিকে বালক। ঘোর কৃষ্ণবর্ণের শরীরে পাঁজরের হাড়গুলো গোনা যাবে। তার পরনে কোন জামা নেই। ঋজু ভঙ্গিতে নিশ্চুপ বসে আছে, হাতে একটা বেত, ঠিক আগে যেমন স্কুলে টিচারদের হাতে দেখা যেতো যার এক ঘা পিঠে পড়লে সাতদিন দাগ থাকতো। বেতের ভয়ে ছাত্ররা কোনরকম হেরফের করতে সাহস পেত না।  রাস্তার মোড়ে গভীর রাতের যাত্রী পাবার আশায় দাঁড়িয়ে থাকা দু’চারখানা রিকশা আর অটোচালক এই দৃশ্য দেখে, যে যেখান দিয়ে পারলো ছুটে পালালো। ক’টা দোকানের পাল্লা এতোক্ষণ খোলা থাকলেও, দমাদম তাও বন্ধ হয়ে গেলো। শুধু আইল্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা উসকো-খুসকো চেহারার জটাধারী জলিল পাগল আকাশের দিকে হাত তুলে চিৎকার করে উঠলো, ‘হা…রে…রে…রে… দুনিয়ার চোর সাবধান। বাঘ এসেছে বাঘ… চোর ধরে খাবে গপ-গপ…  হা… হা… হা… সাবধান চোর, সাবধান।’ তার গগনবিদারী চিৎকার ছড়িয়ে পড়লো চারদিকে। মুহূর্তে ফেসবুকের টাইমলাইন ভরে উঠলো বাঘের খবরে। অতি উৎসাহীরা বারান্দা থেকে বাঘের ছবি তুলতে চেষ্টা করলো, কেউ ফোনে, কেউ ডিএসএলআর ক্যামেরায়, অনেকে বাঘের সাথে সেলফি তুলতে তৎপর হলো। এসব দেখে, বাঘ ঘাড় তুলে একটা ডাক দিলো, ‘হা-লু-ম’। সেই শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়ে মেঘগর্জনের মতো চারদিকে ছড়িয়ে পরলো। ভয়াল সেই ডাক শুনে, কারও হাতের ফোন গেলো পড়ে, কেউ জ্ঞান হারিয়ে ফেললো আচমকা। কিন্তু কারও ক্যামেরায় বাঘের ছবি আসলো না, সব কালো, অন্ধকার। কিছুক্ষণ পর জানা গেলো, বাঘ একটি নয়, শহরের বড় বড় সব রাস্তাতেই বাঘ আর তার পিঠে সওয়ার এক কৃশকায় বালককে দেখা যাচ্ছে। একইরকম এতোগুলো বাঘ, কিভাবে শহরে ঢুকে পরলো তা আশ্চর্য ঘটনা বটে। টেলিভিশনের স্ক্রলে লাল হরফে আপডেট খবর “গভীর রাতে জালালাবাদ শহরের পথে পথে বাঘ, তার সওয়ারি এক বালক, চোরদের সাবধান করেছে জলিল পাগল। শহরজুড়ে আতংক।” বিদেশি চ্যানেলগুলোতে নিউজ আসতেও দেরি হলো না। কিন্তু কোন সাংবাদিক সরাসরি সম্প্রচার করতে সাহস পাচ্ছে না। কে আর বাঘের পেটে যেতে চায় ! চাকরির চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। আর্মি নয়, রাজনৈতিক কর্মী নয়, সন্ত্রাসী নয় সারা শহর এখন বাঘের দখলে। তারা হেলে-দুলে চলছে আর সমস্বরে ‘হা-লু-ম’ করে ডেকে উঠছে। জলিল পাগলা চিৎকার করছে বারবার, ‘চোরেরা সাবধান…  সাবধান, বাঘ খাবে সব চোরকে…।’ শহরের মেয়র আতিকুল্লাহ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ঘরে কেবলমাত্র ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন, তখনই তার মোবাইল টুংটাং শব্দে বেজে উঠলো। চমৎকার স্বপ্ন ভেঙে গেলো,  একরাশ বিরক্তি নিয়ে দেখলেন, তার একান্ত সহকারী ফোন করেছে। রাগত স্বরে বলে উঠলেন, ‘এতো রাতে ফোন কেন, কেবল শুলাম।’ ওপাশ থেকে সহকারীর ভয়ার্ত কন্ঠ শুনলেন, ‘স্যার, বাঘ।’ ‘বাঘ? তো আমি কী করবো!’ ‘স্যার, শহরের পথে পথে বাঘ ঘুরছে। সবাই আতংকিত। টেলিভিশনে প্রচার করছে, কোন সংস্থা কিছু করছে না। যে কোন সময় রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী ফোন করতে পারেন। স্যার, কিছু একটা করুন।’ ‘যত্তসব বোগাস্ !’ ফোনের লাইন কেটে দিলেন মেয়র। আর ঠিক তখন একেবারে কানের কাছে আওয়াজ শুনলেন, ‘হা-লু-ম’। সেই আওয়াজ শুনে মেয়রের স্ত্রী ভয়ে খাট থেকে মাটিতে পড়ে চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘উফ্ বাবারে…।’ জানালার পর্দা সরিয়ে রাস্তায় চোখ রাখতেই  মেয়রের আক্কেলগুড়ুম হয়ে গেলো। ঠিক তার বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে একটা রয়েল বেঙ্গল টাইগার, পিঠে বসে আছে এক নির্বিকার বালক। টেলিভিশন চালিয়ে দেখলেন জরুরি সতর্ক বার্তা প্রচার হচ্ছে। মেয়র দ্রুত সেলফোন হাতে নিয়ে শহরের পুলিশ প্রধানকে ফোন করলেন,’ হ্যালো, আমি মেয়র বলছি, শহরের অবস্থা কিছু জানেন?’ ‘বাঘের কথা তো? জানি, আমাদের সোর্স আগেই  জানিয়েছে।’ ‘আপনাদের টহল পুলিশ কোথায়? তারা বাঘ ধরছে না কেন?’ ‘মেয়র সাহেব, পুলিশের কাজ সন্ত্রাসী ধরা, বাঘ নয়।’ ‘বাঘগুলোকে গুলি করে মারছেন না কেন, বাঘগুলো শহরে আতংক ছড়াচ্ছে।’ ‘সর্বনাশ, বাঘকে গুলি করে বন্যপ্রাণী হত্যার দায় কে নেবে? বাঘের সামনে কে যাবে বলেন? বাঘ তো কাউকে এখনো আক্রমণ করেনি যে শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে বলা যায়, তবে চোরদের সাবধান করছে জলিল পাগলা, কিন্তু পাগলের কথা ধর্তব্য না। আমার ফোর্স রেডি আছে, প্রয়োজনে একশনে যাবে। আপনি বরং চিড়িয়াখানায় ফোন করুন, এতো বাঘ খাঁচার বাইরে কেন?’ মেয়র আর কথা বাড়ালেন না, এবার ফোন করলেন চিড়িয়াখানার কিউরেটরকে, ‘এতো বাঘ চিড়িয়াখানা থেকে রাস্তায় এলো কীভাবে? আপনারা কী করছেন!’ ‘স্যার, এগুলো চিড়িয়াখানার বাঘ নয়, আমি খোঁজ নিয়েছি, আমাদের আছে মাত্র চারটি বাঘ, সবগুলো তাদের খাঁচায় ঘুমাচ্ছে। আর চিড়িয়াখানার বাঘ রোগা টাইপের। এমন নাদুস-নুদুস নয়।’ ‘রোগা কেন? আপনারা খেতে দেন না?’ ‘টেন্ডারে মাংসের যে দাম দেয়, তাতে হাড্ডিই পাওয়া যায়, মাংস থাকেনা। এই যেমন, রডের বদলে বাঁশ দিয়ে রাস্তা ঢালাই করে।’ ‘ওসব কথা থাক, আপনার লোকজন পাঠিয়ে রাস্তার বাঘগুলোকে ওষুধ দিয়ে অজ্ঞান করার ব্যবস্থা নিন। ‘মেয়র বিব্রতবোধ করেন। ‘সরি স্যার, এতো সরঞ্জাম আমাদের নেই, বাঘ অজ্ঞান করা বন বিভাগের কাজ। আপনার কর্পোরেশনে কুকুরকে অজ্ঞান করার ওষুধ আছে, সেটা ব্যবহার করতে পারেন।’ ফোন কেটে দেন মেয়র। সব ফাঁকিবাজ, কেউ দায়িত্ব নেবে না। তিনি ফোন করলেন কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের প্রধানকে, কিন্তু সে ফোন ধরলো না। মেয়রের মনে পড়লো এই ওষুধ দূরের কথা, অনেকদিন মশা মারার ওষুধই কেনা হয়নি, যদিও ঠিকাদার টাকা তুলে নিয়েছে ঠিক সময়েই। মনে মনে চিন্তা করলেন, ফায়ার ব্রিগ্রেডে ফোন করলে কেমন হয়। ফায়ার ব্রিগেডের প্রধান জানিয়ে দিলেন, ‘আমার কর্মীদের আগুন সামলানোর ট্রেনিং থাকলেও বাঘ সামলানোর ট্রেনিং নেই। বাঘের সামনে নিরীহ কর্মীদের পাঠানো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।’ সারাদেশের মানুষ মাঝরাতে টেলিভিশনের খবর শুনতে হামলে পড়ছে। সেখানে প্রচার হচ্ছে, বাঘের গর্জনে জালালাবাদ শহর প্রকম্পিত। বাঘের দেখা পেলেও তার ছবি কেউ তুলতে পারেনি। বাঘের উপর সওয়ার হয়ে আছে এক রহস্যময় বালক। জলিল নামের এক পাগল বাঘের ভয় উপেক্ষা করে কর্তৃপক্ষ উদাসীন, বাঘ ধরতে কোন সংস্থা রাস্তায় নামেনি। জালালাবাদ শহরের ছোট বড় চোরেরা ভয়ে অস্থির। বাঘ একদিক থেকে অন্যদিকে গেলে, ছিঁচকে চোররা তাদের চুরি করা জিনিসপত্র রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলতে শুরু করলো। পকেটমার ছুঁড়ে দিলো মানিব্যাগ, ছিনতাইকারীরা ফেললো শতশত সেলফোন। বাঘের চোখ এড়িয়ে শহরের রাস্তার আশপাশ চোরাই মালপত্রে ভরে উঠতে লাগলো। কিশোর গ্যাং-এর নেতারা তাদের ছোরা,পিস্তল ফেলে দিল ডাস্টবিনে, ঘুষখোর মানুষ রাস্তায় ফেলে দিলো টাকা, মজুদদার রাতের আঁধারে গুদাম থেকে তেল,চিনি, চালের বস্তা বের করে দিলো পথের পাশে। কয়েকজন খুনি, নিজ থেকেই থানায় এসে ধরা দিলো, বাঘের কামড় খাবার চেয়ে জেলখানার রুটি খাওয়া ভালো। সময় কেটে যাচ্ছে দ্রুত। বাঘের সওয়ারি এখন বেশ চঞ্চল হয়ে উঠেছে, বাতাসের বুকে সপাংসপাং করে বেত ঘুরাচ্ছে আর সেই বেতের আঘাত যেন গিয়ে পড়ছে চোরদের পিঠে। শহরে কে চোর নয়! কেউ ঘুষখোর, কেউ কালোবাজারি, কেউ মাদক ব্যাবসায়ী, কেউ ব্যাংকের টাকা লোপাটকারি। কেউ পুকুর – ডোবা – নর্দমা দখল করে তৈরি করেছে বাড়ি। ভয়ে সবার হাত-পা কাঁপছে। হে ঈশ্বর, এবারের মতো বাঘের হাত থেকে রক্ষা করো, আর কোনদিন এমন কাজ করবো না, সব চোরের একই আকুতি, ঠিক যেন নতুন ভাবে করোনা অতিমারি এসে হাজির হয়েছে শহরে। ‘বাবা, তুমি ভয় পাচ্ছো কেন ?’ মেয়রের হাত-পা কাঁপতে দেখে তার মেয়ে জিজ্ঞেস করে। শহরে মেয়র পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক নেতা হিসাবে সন্মানিত। ‘না, না আমি ভয় পাবো কেন?  তবে একটা কাজ করা জীবনে বাকি রয়ে গিয়েছে, সেটা করতেই হবে এবার। বাঘের হাত থেকে যদি বাঁচি!’ ‘কী কাজ বাবা?’ ‘তোর বাবা একটা মহাচোর।’ মেয়রের স্ত্রী চিৎকার করে ওঠেন, ‘এই জমি তোর বাবার না, এক বুড়ির জমি। ‘৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বুড়ি আর তার ছেলেকে ভারতে পাঠিয়ে জমিটা দখল করেছে। ওরা আর ফেরেনি। খোদা জানেন, তোর বাবা আসলে তাদের কী করেছিল।’ ‘বিশ্বাস কর, আমি এবার তাদের খুঁজে বের করবোই, এই জমির মূল্য বুঝিয়ে দেবো।’ মেয়রের গলার স্বর কান্নায় ভেঙে আসে। ‘তুমি একটা মিথ্যাবাদী’ মেয়রের স্ত্রী মৃদুস্বরে বলেন। ‘বাবা, তুমি কি রাজাকার ছিলে?’ মেয়ের প্রশ্নে মেয়রের পায়ের তলার মাটি সরে যায়। এতো বছরেও অতীত তার পিছু ছাড়ে নি। তিনি ডুকরে কেঁদে উঠলেন। বারবার হাত মোছেন তোয়ালে দিয়ে, যেন সেখানে এখনো ‘৭১-এর রক্ত লেগে আছে। রাত শেষে কুয়াশার চাদর আরও গাঢ় হয়ে চরাচর ঢেকে দেয়। কয়েক হাত দূরের বস্তুও এখন স্পষ্ট নয়। বাঘগুলো আবার সমস্বরে ডেকে ওঠে, হা-লু-ম…. তারপর কুয়াশায় মিলিয়ে যায়। জলিল পাগল চিৎকার করে ওঠে, ‘সকল চোর চলে আসো….  বাঘে খাবে গপাগপ…. হা হা হা।’ ঘূর্ণিঝড়ের পর আবহাওয়া যেমন থমকে থাকে, ভোরের আলো ফোটার পর জালালাবাদ শহর তেমন থমকে আছে। রাস্তায় বেরোবার কারে সাহস নেই, শুধু  কয়েকটা বেওয়ারিশ কুকুর ঘুরে বেড়াচ্ছে। শহরে কেউ আর বাঘের দেখা পায় না, কোথায় মিলিয়ে গেছে বাঘ আর তার সওয়ারি। অবশেষে টেলিভিশন সাংবাদিকরা শহরের আনাচকানাচে মানুষের ফেলে যাওয়া দ্রব্যের লাইভ টেলিকাস্ট শুরু করে। পুলিশ ট্রাকে করে সব মালামাল সরিয়ে নেয়। পড়ে থাকা জিনিসে হাত দিতেও কেউ সাহস পায়না। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জলিল পাগলকে খুঁজে পায় প্রেসক্লাবের ফুটপাতে, একটা কুকুরের কোলে মাথা রেখে সে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। সারারাত জনস্বার্থে কাজ করে মেয়র আতিকুল্লাহ অসুস্থ হয়ে শহরের নামীদামী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আপাতত তারসাথে কারও দেখা করা নিষেধ। মাসখানেকের মধ্যে করোনার ভয়ের মতো বাঘের ভয়ও কেটে যায়, মানুষ আবার জড়িয়ে পরে স্বভাবজাত দূর্নীতিতে। জলিল পাগল জেলখানায় আটক আছে, তার জামিনের জন্য কেউ নেই। মাঝেমধ্যে সে চিৎকার করে ওঠে, ‘সব চোর সাবধান…  সব চোর…।’ অন্য কয়েদিরা হাসে, পাগলের কথার আর মূল্য কী!

লেখক: শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক। চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন »

আহা ফিলিস্তিন দিলু নাসের ♦ গাজার আকাশে দানবের ছায়ামাটিতে শকুন-দৃষ্টিধূ ধূ প্রান্তরে তাইপ্রতিদিন শিশুর রক্তবৃষ্টি!  সাঁজোয়াযানে সুপ্রাচীন ভূমি করছে ছিন্নভিন্ন নারী পুরুষের বুকের উপরদানবীয় পদচিহ্ন! ধ্বংসস্তূপে আগুনের ধোঁয়া পথে-প্রান্তরে লাশ লাশের উপরে দানব...

ক্রীম

মূল: হারুকি মুরাকামি অনুবাদ: মিলটন রহমান আমার এক তরুণ বন্ধুকে অতীত জীবনে ঘটে যাওয়া একটি অদ্ভুদ ঘটনা সম্পর্কে বলছিলাম। তখন আমার বয়েস ছিলো আঠারো।  ঠিক মনে করতে পারছিনা কেনো তাকে সে ঘটনা বলতে শুরু করেছিলাম। কথা প্রসঙ্গেই ঘটনাটি উঠে এসেছিলো। অনেক আগের সেই ঘটনা। বলা...

হুমায়ুন আজাদ–রাঢ়ি খালের মুগ্ধকিশোর

আলমগীর শাহরিয়ার রাঢ়িখাল-তিন ভাগ পানি আর এক ভাগ মাটির ছোটবড়ো অনেক পুকুর আর ডোবাভরা এক গ্রাম। এক সময় বাংলার গ্রামগুলি এমন ছিল। নদীর পাড়ে পাড়ে গঞ্জ। খালের পাড়ে পাড়ে গ্রাম। বিলম্বিত বর্ষায় গ্রামের চারপাশে ফোটে থাকতো শাপলা ফুল। জারুল স্বাগত জানাতো গ্রীষ্ম ও...

স্মরিব ‘কাল নিরবধি’

সেলিম জাহান আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব তাঁর  শিক্ষার্থী ছিলেন। আমার অনেক অগ্রজেরও শিক্ষক ছিলেন তিনি। তবু পাঁচ বছর আগেও প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আমাকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করতেন। যু্ক্তি ছিল তাঁর একটাই - তাঁর কন্যার শিক্ষককে তিনি ‘তুমি’ বলতে পারেন না। আশির...

‘মধুমালা’ মিষ্টির দোকান

‘মধুমালা’ মিষ্টির দোকান

|| হামিদ মোহাম্মদ ||
‘মধুমালা’মিষ্টির দোকান যেদিন যাত্রা শুরু করলো, সেদিন মানুষের ভিড় দেখে বিজয়পাল চমকে যায়। এতোদিন এতো মানুষ কোথায় ছিল? এরা তো এই এলাকারই লোক! তাদের আলাইঘর বা মিষ্টির দোকান চল্লিশ বছরের পুরোনো, এভাবে তো মানুষ ভিড় করেনি, লাইন ধরেনি মিষ্টি কিনতে। বিজয়পালের মিষ্টির দোকানের নাম নেই, কোনো সাইনবোর্ডও নেই, কিন্তু লোকে ‘মহাজানের মিষ্টির দোকান’ নামেই চেনে। সারা সিলেট তথা পুরো তল্লাটে এই দোকান চেনে না, এমন মানুষ কম। রমজান মাস এলেই ইফতারের বিশেষ আইটেম জিলিপি কিংবা রসগোল্লার জন্য কাছের টাউন থেকেও লোকজন আসে। তাদের দোকানের বিখ্যাত মিষ্টির নামডাক কতকালের।

আরও পড়ুন »

 

আহা ফিলিস্তিন দিলু নাসের ♦ গাজার আকাশে দানবের ছায়ামাটিতে শকুন-দৃষ্টিধূ ধূ প্রান্তরে তাইপ্রতিদিন শিশুর রক্তবৃষ্টি!  সাঁজোয়াযানে সুপ্রাচীন ভূমি করছে ছিন্নভিন্ন নারী পুরুষের বুকের উপরদানবীয় পদচিহ্ন! ধ্বংসস্তূপে আগুনের ধোঁয়া পথে-প্রান্তরে লাশ লাশের উপরে দানব...

ক্রীম

মূল: হারুকি মুরাকামি অনুবাদ: মিলটন রহমান আমার এক তরুণ বন্ধুকে অতীত জীবনে ঘটে যাওয়া একটি অদ্ভুদ ঘটনা সম্পর্কে বলছিলাম। তখন আমার বয়েস ছিলো আঠারো।  ঠিক মনে করতে পারছিনা কেনো তাকে সে ঘটনা বলতে শুরু করেছিলাম। কথা প্রসঙ্গেই ঘটনাটি উঠে এসেছিলো। অনেক আগের সেই ঘটনা। বলা...

হুমায়ুন আজাদ–রাঢ়ি খালের মুগ্ধকিশোর

আলমগীর শাহরিয়ার রাঢ়িখাল-তিন ভাগ পানি আর এক ভাগ মাটির ছোটবড়ো অনেক পুকুর আর ডোবাভরা এক গ্রাম। এক সময় বাংলার গ্রামগুলি এমন ছিল। নদীর পাড়ে পাড়ে গঞ্জ। খালের পাড়ে পাড়ে গ্রাম। বিলম্বিত বর্ষায় গ্রামের চারপাশে ফোটে থাকতো শাপলা ফুল। জারুল স্বাগত জানাতো গ্রীষ্ম ও...

স্মরিব ‘কাল নিরবধি’

সেলিম জাহান আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব তাঁর  শিক্ষার্থী ছিলেন। আমার অনেক অগ্রজেরও শিক্ষক ছিলেন তিনি। তবু পাঁচ বছর আগেও প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আমাকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করতেন। যু্ক্তি ছিল তাঁর একটাই - তাঁর কন্যার শিক্ষককে তিনি ‘তুমি’ বলতে পারেন না। আশির...

‘মধুমালা’ মিষ্টির দোকান

|| হামিদ মোহাম্মদ || ‘মধুমালা’মিষ্টির দোকান যেদিন যাত্রা শুরু করলো, সেদিন মানুষের ভিড় দেখে বিজয়পাল চমকে যায়। এতোদিন এতো মানুষ কোথায় ছিল? এরা তো এই এলাকারই লোক! তাদের আলাইঘর বা মিষ্টির দোকান চল্লিশ বছরের পুরোনো, এভাবে তো মানুষ ভিড় করেনি, লাইন ধরেনি মিষ্টি কিনতে।...

চারাভাঙ্গার কান্না…

সৈয়দ মনসুর উদ্দিন  হাইলাইট চারাভাঙ্গা ও তার আশপাশের পুরো এলাকা আস্তে আস্তে দানব হয়ে জেগে উঠছে। শত শত একরের ধান ক্ষেতে অপরিকল্পিত কারখানার আলো জ্যোৎস্নাকে হত্যা করছে তিলে তিলে, বেলঘরের চূড়ায় এখন আর গোধূলি নামে না, বিদায় নিয়েছে জোনাকী পোকারা, সাইরেন আর গাড়ীর...