জকিগঞ্জবাসীর সংবর্ধনায় কমর উদ্দিন চৌধুরী পাপলু
খালেদ মাসুদ রনি
লণ্ডন, ১৯ ফেব্রুয়ারী: বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত এবছরের সিআইপি (কমার্শিয়ালী ইম্পর্টেন্ট পার্সন) মর্যাদাপ্রাপ্ত বিলেতের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কমর উদ্দিন চৌধুরী পাপলু এই স্বীকৃতি উৎসর্গ করেছেন তাঁর দীর্ঘদিনের সহযোগী ও সমর্থকদের। লণ্ডনে জকিগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে দেওয়া এক সংবর্ধনায় তিনি তাঁর এই সরকারী স্বীকৃতি প্রাপ্তির পেছনে যাদের অবদান রয়েছে তাদেরকে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এধরনের স্বীকৃতি ব্রিটেনের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের সাথে ব্যবসা সম্প্রসারিত করতে উৎসাহিত করবে।
জকিগঞ্জের কৃতি সন্তান কমর উদ্দিন চৌধুরী পাপলু বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সিআইপি নির্বাচিত হওয়া উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট মুরব্বি মোঃ হারুনুর রশীদ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পীকার কাউন্সিলার জাহেদ বকত চৌধুরী বলেন, আমাদের টাওয়ার হ্যামলেটসের ব্যবসায়ী পাপলু ভাই বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সিআইপি নির্বাচিত হওয়ায় আমি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। তিনি হচ্ছেন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, এই কাউন্সিলের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি এলাকার মানুষের জন্য চাকুরীর প্লাটফর্ম তৈরি করে তিনি যে অবদান রেখেছেন এজন্য আমরা গর্ববোধ করি। গত ১১ ফেব্রুয়ারি রোববার রাতে পূর্ব লণ্ডনের লণ্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমীর হলে আয়োজিত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মাওলানা মোঃ আব্দুল কুদ্দুছ। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ আলবাব হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কমিটির সদস্য সচিব শামীম শাহান। বিবিসিসিআই-এর সভাপতি সাইদুর রহমান রেনু বলেন, কমর উদ্দিন পাপুল বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন, এটা ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের জন্য গৌরবের। এটা তাঁর প্রাপ্য ছিলো। সরকার যেভাবে তাঁর কাজের মূল্যায়ন করেছে, আমাদেরকে একইভাবে তাঁর মূল্যায়ন করতে হবে। পাপুল ভাই শুধু ব্যবসায়ী নন, তিনি একজন দানবীর ও সমাজসেবী। তিনি ব্যবসার পাশাপাশি সাধারণ কৃষকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছেন।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক স্পীকার আয়াছ মিয়া বলেন, পাপলু ভাই একজন প্রচারবিমুখ মানুষ। তার এই অর্জনে আমরা গর্ববোধ করি। তিনি সিআইপি নিতে চাননি, বন্ধু-বান্ধবের কথায় তিনি এটা গ্রহণ করতে রাজি হয়েছেন। তিনি শুধু রেমিটেন্স যোদ্ধা নন, বাংলাদেশে কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছেন। তিনি আমাদের জন্য মডেল। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সিআইপি নির্বাচিত হওয়া কমর উদ্দিন পাপলু বলেন, আমি এ পর্যায়ে আসতে আমার সময় লেগেছে বিশ বছর। আমার এই দীর্ঘ পথচলা এবং এই সরকারী স্বীকৃতি প্রাপ্তির পেছনে যাদের অবদান রয়েছে আমি আজকের এই বিশেষ দিনে তাদেরকে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি এবং ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি তাদেরকে আমার এই সিআইপি সম্মাননা উৎসর্গ করছি। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, আমার সিআইপি অর্জনের পেছনে সকলের সহযোগিতা রয়েছে। আমি আশা করি, আমার এই প্রাপ্তি দেখে ব্রিটেনের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের সাথে আরো ব্যবসা সম্প্রসারিত করতে উৎসাহিত হবেন, যার ফলে বাংলাদেশ ও ব্রিটেন প্রবাসীরা লাভবান হবেন। অনুষ্ঠানের আয়োজক জকিগঞ্জবাসীসহ উপস্থিত সকলের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিবিসিসিআই ইউকের সাবেক সভাপতি বশির আহমদ, লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ জুবায়ের, জিএসির ইউকের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আতাউর রহমান, দারুল হাদিস লতিফিয়া লণ্ডনের প্রিন্সিপাল মাওলানা মুহাম্মদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী, সিলেট সীমান্তিক বি এড কলেজের প্রিন্সিপাল মোঃ আব্দুর রউফ তাপাদার, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ গোলাম জিলানী, চ্যানেল এস-এর সিইও তাজ চৌধুরী, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ডেপুটি স্পীকার কাউন্সিলার ব্যারিস্টার সাইফ উদ্দিন খালেদ, কাউন্সিলার কবির আহমদ, কাউন্সিলার সাইদ আহমদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সিরাজ হক, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক স্পীকার মোঃ আহবাব হোসেন, মকবুল হোসেন, বাংলাদেশ ইম্পোর্টার্স এসোসিয়েশন ইউকের প্রেসিডেন্ট রফিক হায়দার, ব্যারিস্টার কালাম চৌধুরী, কৃষিবিদ নিজাম উদ্দিন, লণ্ডন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সৈয়দ এহছানুল হক, ডাঃ এনায়েত হোসেন চৌধুরী পিন্টু, আব্দুল মোহাইমিন উনু, কবি মিজানুর রহমান মিরু। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কমিটির সদস্য আতিকুর রহমান চৌধুরী, একে এম মাছুম, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ইমন, মাওলানা মোছলেহ উদ্দিন, হাসনাত চৌধুরী, মোঃ রুহুল আমিন প্রমুখ।
সভায় জকিগঞ্জ দারুল হাদিস লতিফিয়া ও জগন্নাথপুরবাসীর পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে সংবর্ধিত ব্যক্তিকে বরণ করা হয় এবং সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, কমিউনিটি ব্যক্তিবর্গ, রাজনীতিবিদ, সংবর্ধিত ব্যক্তির পরিবারবর্গ, আত্মীয়স্বজন, কমিটির সদস্যবৃন্দসহ জকিগঞ্জের বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে সংবর্ধিত অতিথির মা-বাবাসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করা হয়।