☀ We are Hiring ☀

PROJECT COORDINATOR

Bengali Drama: Narratives of Time (1963–2013)
Location: East London
Salary: £36,996 pro rata
Hours: 17.5 per week; Duration:18 months

For an application pack:

Email: info@artswithoutborders.co.uk
Deadline: 8 December 2024, 11:59 pm
Only successful applicants will be contacted
Online Interviews to be conducted on 13 December 2024

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

সাময়িকী

লণ্ডনের চিঠি শেক্সপীয়ারের বাগানে আমাদের রবীঠাকুর

অক্টোবর ১৪, ২০২২ ৫:০৫ অপরাহ্ণ

সাগর রহমান

উইলিয়াম শেক্সপীয়ারের জন্মস্থান ইংল্যাণ্ডের স্ট্রাটফোর্ড-আপন-এভনে। শহরটি ওয়ারউইকশায়ারে, লণ্ডন থেকে এক দেড় ঘন্টার রাস্তা। বাসে, ট্রেনে, ব্যক্তিগত গাড়িতে খুব সহজেই চলে যাওয়া যায়। লণ্ডন শহর থেকে বেরুতেই ইংল্যাণ্ডের গ্রামীণ প্রকৃতির শোভা মন আচ্ছন্ন করে ফেলে, আর সে শোভায় মন রাঙতে না রাঙতেই পৌঁছে যাওয়া যায় স্ট্রাটফোর্ডে। এঁকে বেঁকে চলা এভন নদীর গতিধারার সাথে তালমিলিয়ে গড়ে ওঠা শহর এই স্ট্রাটফোর্ড। পুরো শহরটির বেশিরভাগ অবকাঠামো, দোকানপাট, রাস্তাঘাট- মোটামুটি সবকিছুতেই শেক্সপীয়ারের কবিতা কিংবা নাটক কিংবা চরিত্রদের ছোঁয়া আছে, শহরটি যে শেক্সপীয়ার নামক একজন পৃথিবী বিখ্যাত কবি ও নাট্যকারের, সেটা মনে করিয়ে দেবার সচেতন প্রয়াস লক্ষ্যণীয়। শহরের এক পাশে শেক্সপীয়ারের জন্ম-বাড়ি। ধারণা করা হয়, এই বাড়িতেই ১৫৬৪ সালে শেক্সপীয়ার জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এবং ছোটবেলা কাটিয়েছেন। অর্ধেক কাঠ ও অর্ধেক ইটের তৈরি এই বাড়িটি বর্তমান পৃথিবীর বাড়ি নির্মানের বিচারে বেশ সাদামাটাই। কিন্তু সেই ষোলো শতকের বিচারে এটাকে বেশ উল্লেখযোগ্য বাসস্থান হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। শেক্সপীয়ারের বাবা জন শেক্সপীয়ার পেশায় ছিলেন ব্যবসায়ী। হাতে পরার দস্তানা বানাতেন, উল বিক্রি করতেন। বাড়িটিকে তিনি এমনভাবে বানিয়েছিলেন যাতে এই বাড়িতে বসেই তার ব্যবসা পরিচালনা করা যায়। বর্তমানে সেই বাড়িটিই একটি জাদুঘর হিসেবে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। সারা পৃথিবী থেকে ব্রিটেনে বেড়াতে আসা অধিকাংশ ভ্রমণকারীই সুযোগ করে একবারের জন্য
হলেও এই বাড়ি পরিদর্শন করে যান। ইতিহাস বলে, নানান হাত ঘুরে এই বাড়িটি যখন ১৮৪৬ সালে বিক্রি কথা ওঠে, তখন পি.টি বারনাম নামক একজন আমেরিকান বাড়িটি কিনে ‘ব্রিক-বাই-ব্রিক’ জাহাজে করে নিজ দেশে নিয়ে যাবার প্রস্তাব করেন। শেক্সপীয়ারের বাড়ি আমেরিকায় পাচার হয়ে যাওয়া ঠেকাতেই মূলত অনেকটা তড়িঘড়ি করে গঠিত হয় শেক্সপীয়ার বার্থডে কমিটি। এই কমিটির দাতাদের সহায়তায়, যাদের মধ্যে ছিলেন স্বয়ং চার্লস ডিকেন্স, প্রায় তিনহাজার পাউণ্ড অর্থমূল্যে বাড়িটি কেনা হয় ১৮৪৭ সালে। সেই বার্থডে কমিটিই পরবর্তীতে নাম নেয় শেক্সপীয়ার বার্থপ্লেস ট্রাস্ট, যারা সেই থেকে এই বাড়িটিকে ঘিরে সব কর্মযজ্ঞের পরিচালনা করে আসছে। এভন নামেই নদী, তবে আমাদের নদী প্রধান দেশের মানুষের চোখে বড়সড় খাল মনে হতে পারে। প্রস্থে একশ ফুটের মতো। এ তীর হতে ও তীরে দিব্যি কথোপকথন চালানো যায়। টলটলে জল, নানারঙা পানকৌড়ি, গ্রীবা-উদ্ধত রাজহাঁস, জলজ ফুল ভাসা স্রোত, অতি যতেœ বাঁধানো দুই তীর, সারি সারি গাছের তলায় এত সুন্দর বসার ব্যবস্থা, ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকলেও এক ঘেঁয়ে লাগে না। চাইলে টিকেট কেটে নদীতে জলবিহারের সুবিধা নেওয়া যায়। নদী পাড়ের ছেলে হিসেবে শেক্সপীয়ার নিশ্চয়ই এই নদীতেই সাঁতার কাটতেন, নৌকা বাইতেন, মাছও ধরতেন হয়তো। এসব ভাবনা ভাবতে ভাবতে মাইলের পর মাইল হাঁটা যায় এভন নদীর তীর ধরে বাঁধিয়ে রাখা প্রশস্ত পথ ধরে। তীরে কোথাও কোথাও ফলকের মধ্যে শেক্সপীয়ারের লেখা সনেটের লাইন। দুয়েকটা ঐতিহাসিক তথ্য। চলতে চলতে সেসব দেখা। হাঁটতে হাঁটতে জিরিয়ে নেওয়া খানিকক্ষণের জন্য। এভন থেকে ঢিল ছোঁড়ার দূরত্বে শেক্সপীয়ারের বাড়ি। বাড়িতে ঢোকার শুরুতেই
পুরো বাড়ির কোথায় কী আছে – সেটার ছবি ও দিক নির্দেশনাসহ ছাপা লিফলেট রাখা, গেইটের অভ্যর্থনাকারীরাও দিক নির্দেশনা দেবার জন্য সদাপ্রস্তুত। ঢোকার মুখেই একটা অন্ধকার ঘরে ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে শেক্সপীয়ারের সংক্ষিপ্ত জীবনী, চারশো বছর আগের এ জায়গাটির পরিবেশ-পরিস্থিতি ইত্যাদির তথ্য জানানোর সুন্দর ব্যবস্থা আছে। যে কেউ এই ভিডিও চিত্র দেখে নিলে পরবর্তী ঘরগুলোতে যা যা দেখবেন, সেসবের একটা সুস্পষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন। অবশ্য প্রতিটি ঘরেই গাইড আছেন, দর্শনার্থীদেরকে অনবরত নানান তথ্য ও প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যান ক্লান্তিহীন ভাবে। শেক্সপীয়ারের জন্ম নেওয়া আঁতুড়ঘর, তার শোবার ঘর, খাবার ঘর, বসার ঘর, লেখার ঘর – একে একে ঘরগুলো দেখা হতে হতে হঠাৎ নিজেকে ষোল
শতকে চলে যাওয়া একজন পরিব্রাজক হিসেবে মনে হতে থাকে। প্রতিটি ছবি ও প্রতিটি জিনিসের পাশে খুঁটিনাটি তথ্য লেখা। শেক্সপীয়ারের বাবার উলের ব্যবসা করার সরঞ্জাম, পদ্ধতি ইত্যাদিও বেশ ভালো করে সাজানো। একে একে এ ঘরগুলো দেখতে দেখতে বাড়ির পেছনের প্রশস্ত আঙিনায় বের হয়ে আসলে দেখা যাবে হয়তো শেক্সপীয়ারের কোন নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। কোন মঞ্চ কিংবা লাইট কিংবা থিয়েটারের অত্যাবশ্যকীয় কোন সাজ-সরঞ্জামের বালাই নেই, স্রেফ খোলা মাঠে গমগমে গলায় শেক্সপীয়ারের লাইন আবৃত্তি করতে করতে চারদিক সরগরম করে ফেলছেন অভিনয়শিল্পীরা। অসংখ্য দর্শনার্থী চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসে দাঁড়িয়ে সেটা দেখছেন, উপভোগ করছেন। আঙিনার পরেই বেশ বড়সড় বাগান। নানান রঙা ফুলের
কেয়ারি করা বাগানে ইতস্তত বেড়াতে বেড়াতেই আমার মতো বাঙালি দর্শনার্থীদের জন্য?যেন অপেক্ষা করে থাকে একটি বিস্ময়। শেক্সপীয়ারের বাড়ির বাগানের এক কোণায়, কয়েকটি গাছের ছায়ায় মাথা উঁচু করে বসে আছেন স্বয়ং আমাদের রবী ঠাকুর। চেহারায় ঋষির প্রাজ্ঞতা, উদাসীন দৃষ্টি সামনে বিছিয়ে রাখা বাগানের মাথা ছাড়িয়ে বহুদূরে বিস্তৃত। ইংরেজি সাহিত্যের বরপুত্র শেক্সপীয়ারকে দেখতে এসে, তার জীবনালেখ্যের নানান পর্দা উন্মোচন করতে করতে হঠাৎ এই যে বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথের আবক্ষ মূর্তি আবিষ্কার করা, তার বিস্ময়বোধ বহুক্ষণ জেগে থাকে প্রাণে, বাঙালি হিসেবে বুকে গর্ব অনুভব হয়, মূর্তির পাদদেশে ইংরেজি অনুবাদের পাশাপাশি বাংলা অক্ষরে বাংলা কবিতা পড়তে পেরে আবেগাক্রান্ত না হয়ে পারা যায় না।
তার ওপর আর কোথাও যখন আর কোন কবি কিংবা সাহিত্যিকের কোন ভাস্কর্য কিংবা ছবিও দেখতে পাবেন না এই তীর্থস্থানে, সেখানে রবীন্দ্রনাথকে আবক্ষ দেখতে পাওয়া- সত্যিই প্রকৃত বিস্ময়বোধের জন্ম দেয়। উইলিয়াম শেক্সপীয়ার মারা গিয়েছিলেন ২৩ এপ্রিল, ১৬১৬ সালে। এর তিনশত বছর পরে, শেক্সপীয়ারের তিনশত বছর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে, ২৮ নভেম্বর ১৯১৫ সালে শিলাইদহে বসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেন: “যেদিন উদিলে তুমি, বিশ্বকবি, দূর সিন্ধুপারে/ ইংল্যাণ্ডের দিকপ্রান্ত সেদিন তোমারে/ আপন বক্ষের কাছে, ভেবেছিল বুঝি তারি তুমি/ কেবল আপন ধন; উজ্জ্বল ললাট তব চুমি/ রেখেছিল কিছুকাল কুয়াশা-অঞ্চল-অন্তরালে/ বনপু?-বিকশিত তৃণঘন শিশির-উজ্জ্বল/ পরীদের খেলার প্রাঙ্গণে। দ্বীপের নিকুঞ্জতল/ তখনো
ওঠেনি জেগে কবিসূর্য-বন্দনা সংগীতে।/ তারপরে ধীরে ধীরে অনন্তের নিঃশব্দ ইঙ্গিতে/ দিগন্তের কোল ছাড়ি শতাব্দীর প্রহরে প্রহরে/ উঠিয়াছ দীপ্তজ্যোতি মধ্যা?ের গগনের পরে;/ নিয়েছ আসন তব সকল দিকের কেন্দ্রদেশে/ বিশ্বচিত্ত উদ্ভাসিয়া; তাই হেরো যুগান্তর-শেষে’ ভারতসমুদ্রতীরে কম্পমান শাখাপুঞ্জে আজি/ নারিকেলকুঞ্জবনে জয়ধ্বনি উঠিতেছে বাজি (বলাকা -৩৩)”। ১৯৬৪ সালে শেক্সপীয়ারের জন্মের পৌণে চারশো বছর উদযাপনের সময়, ক্যালকাটা আর্ট সোসাইটির উদ্যোগে শেক্সপীয়ার সেন্টারে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথের ঐ লাইনগুলো একটি হাঁতির দাঁতের ফলকে খোদাই করে সেন্টারকে উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়। ফলকটি সেই থেকে শেক্সপীয়ার সেন্টারের লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত ছিল। এর ত্রিশ বছর পরে, লণ্ডনে নিযুক্ত তৎকালীন ভারতীয় হাইকমিশনার ড. এলএম সিংভি শেক্সপীয়ার সেন্টারের
লাইব্রেরীটি পরিদর্শনের সময় এই কবিতা-ফলকটি দেখতে পান। প্রসংগত, ড. সিংভির কথায়, ১৯৫০-এর দশকে তিনি যখন এলাহাবাদে স্নাতক পড়তেন, সেই সময়ে মূলত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই কবিতাটি পড়েছিলের তিনি, এবং এই কবিতার প্রেরণাতেই তিনি শেক্সপীয়ারকে আরো গভীর করে পড়ার জন্য উৎসাহিত হয়েছিলেন। এতদিন বাদে ঐ কবিতাটি দেখতে পেয়ে তার মনে হলো, আচ্ছা, খোদ শেক্সপীয়ারের বাড়িতেই যদি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি ভাস্কর্য গড়ে তার সাথে এই কবিতাটা জুড়ে দেয়া যায়, তাহলে কেমন দারুণ ব্যাপারই না হয়! ভাবনাটা তিনি প্রস্তাব আকারে শেক্সপীয়ার বার্থপ্লেসের পরিচালক ও ট্রাস্টিদের সামনে পেশ করেন, এবং তাদের সাথে কথা বলে যোগাযোগ করেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালিন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সাথে। জ্যোতি বসু এই প্রস্তাবটি শুনে অত্যন্ত খুশি হন এবং বিশেষ উদ্যোগী হয়ে কলকাতার ভাস্কর দেবব্রত চক্রবর্তীকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি আবক্ষ ব্রোঞ্জ মূর্তি গড়ার দায়িত্ব দেন। ১৯৯৫ সালের ৫ জুলাই সেই মূর্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয় শেক্সপীয়ার বার্থপ্লেসের চেয়ারম্যান প্রফেসর স্ট্যানলি ওয়েলস ও ট্রাস্টের পরিচালক রজার প্রিঙ্গলের কাছে। তারপর শেক্সপীয়ারের বাড়ির পেছনের বাগানে এক কোণায়, নানান গাছ-গাছালি মাঝে একটি উপযুক্ত স্থান বেছে নেওয়া হয় এই আবক্ষ মূর্তিটিকে স্থাপন করার জন্য। যে স্তম্ভমূলের উপর ভাস্কর্যটিকে স্থাপন করা হয়, তার ডিজাইন করেন স্থপতি উইলিয়াম হকস। স্তম্ভের গায়ে রবীন্দ্রনাথের পরিচিতি হিসেবে লেখা: ৗটঠধভঢরটভর্টদ কটথমরণ মের্ণ, টেধর্ভণর, ফেটহষরধথর্দ, কদধভপণর, কণটডদণর কদণ গমধডণ মত অভঢধট. ফরাসি ভাস্কর ক্যাথারিন রিটালিউ এ স্তম্ভের উপর শেক্সপীয়ারকে নিয়ে লেখা রবীন্দ্রনাথের কবিতাটি উৎকীর্ণ করেন, বাংলায়, এবং ইংরেজিতে ( কবিতাটি ইংরেজি অনুবাদও করেছেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ)। ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬-এ একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাগানে স্থাপিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আবক্ষ মূর্তিটির উদ্বোধন করা হয়। স্তম্ভের গোড়ায় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (পশ্চিমবঙ্গের তৎকালিন তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী), ড. এলএম সিংভি এবং প্রফেসর স্ট্যানলি ওয়েলস। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান (বাংলা ও হিন্দীতে) পরিবেশনার মাধ্যমে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি ও নাট্যকার শেক্সপীয়ারের জন্মবাড়ির পেছনের বাগানে স্থায়ী জায়গা হয়
আমাদের রবীকবির আবক্ষ মূর্তির। শেক্সপীয়ারের বাড়ি দেখা শেষ করে, পৃথিবীর একজন শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিকের জীবনকে এত কাছ থেকে দেখার নানান স্মৃতি নিয়ে বাইরে বেরিয়ে যাবার আগে এই যে ছোট্ট বিস্ময়, একজন বাঙালির কাছে এ এক অন্যরকম অনুভূতির বিষয়, ভীষণ মন ভাল করার উৎস। দ্বিতীয় বার তাই যখন কোনো বাঙালির যাওয়া হয় ঐ বাড়িতে, তখন সেটা কেবল শেক্সপীয়ারকে দেখতে যাওয়া নয়, একই সংগে রবীঠাকুরকে দেখতে যাওয়ার উৎসাহে উদ্বেলিত হয়ে থাকে প্রাণ।

আরও পড়ুন »

আহা ফিলিস্তিন দিলু নাসের ♦ গাজার আকাশে দানবের ছায়ামাটিতে শকুন-দৃষ্টিধূ ধূ প্রান্তরে তাইপ্রতিদিন শিশুর রক্তবৃষ্টি!  সাঁজোয়াযানে সুপ্রাচীন ভূমি করছে ছিন্নভিন্ন নারী পুরুষের বুকের উপরদানবীয় পদচিহ্ন! ধ্বংসস্তূপে আগুনের ধোঁয়া পথে-প্রান্তরে লাশ লাশের উপরে দানব...

মায়াবী রাত

মায়াবী রাত

|| অঞ্জন নন্দী ||
এখন মাঝরাত। আকাশে বিশাল রূপোর থালার মতো পূর্ণিমার চাঁদ থেকে মোম জোছনা গলে গলে পড়ছে। নিশাচর পাখি আর নেট জগতের মানুষ ছাড়া সবাই ঘুমের দেশে। কুয়াশা ভেদ করে শহরের পথে আয়েশি ভঙ্গিতে একটা বাঘ হেঁটে হেঁটে চলছে। যেনতেন বাঘ নয়, একেবারে রয়েল বেঙ্গল টাইগার। তাগড়া শরীর, জ্বলজ্বলে চোখ, ভ্রুক্ষেপহীন। তার পিঠে সওয়ার হয়ে আছে এক লিকলিকে বালক। ঘোর কৃষ্ণবর্ণের শরীরে পাঁজরের হাড়গুলো গোনা যাবে। তার পরনে কোন জামা নেই। ঋজু ভঙ্গিতে নিশ্চুপ বসে আছে, হাতে একটা বেত, ঠিক আগে যেমন স্কুলে টিচারদের হাতে দেখা যেতো যার এক ঘা পিঠে পড়লে সাতদিন দাগ থাকতো। বেতের ভয়ে ছাত্ররা …

ক্রীম

মূল: হারুকি মুরাকামি অনুবাদ: মিলটন রহমান আমার এক তরুণ বন্ধুকে অতীত জীবনে ঘটে যাওয়া একটি অদ্ভুদ ঘটনা সম্পর্কে বলছিলাম। তখন আমার বয়েস ছিলো আঠারো।  ঠিক মনে করতে পারছিনা কেনো তাকে সে ঘটনা বলতে শুরু করেছিলাম। কথা প্রসঙ্গেই ঘটনাটি উঠে এসেছিলো। অনেক আগের সেই ঘটনা। বলা...

হুমায়ুন আজাদ–রাঢ়ি খালের মুগ্ধকিশোর

আলমগীর শাহরিয়ার রাঢ়িখাল-তিন ভাগ পানি আর এক ভাগ মাটির ছোটবড়ো অনেক পুকুর আর ডোবাভরা এক গ্রাম। এক সময় বাংলার গ্রামগুলি এমন ছিল। নদীর পাড়ে পাড়ে গঞ্জ। খালের পাড়ে পাড়ে গ্রাম। বিলম্বিত বর্ষায় গ্রামের চারপাশে ফোটে থাকতো শাপলা ফুল। জারুল স্বাগত জানাতো গ্রীষ্ম ও...

স্মরিব ‘কাল নিরবধি’

সেলিম জাহান আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব তাঁর  শিক্ষার্থী ছিলেন। আমার অনেক অগ্রজেরও শিক্ষক ছিলেন তিনি। তবু পাঁচ বছর আগেও প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আমাকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করতেন। যু্ক্তি ছিল তাঁর একটাই - তাঁর কন্যার শিক্ষককে তিনি ‘তুমি’ বলতে পারেন না। আশির...

আরও পড়ুন »

 

আহা ফিলিস্তিন দিলু নাসের ♦ গাজার আকাশে দানবের ছায়ামাটিতে শকুন-দৃষ্টিধূ ধূ প্রান্তরে তাইপ্রতিদিন শিশুর রক্তবৃষ্টি!  সাঁজোয়াযানে সুপ্রাচীন ভূমি করছে ছিন্নভিন্ন নারী পুরুষের বুকের উপরদানবীয় পদচিহ্ন! ধ্বংসস্তূপে আগুনের ধোঁয়া পথে-প্রান্তরে লাশ লাশের উপরে দানব...

মায়াবী রাত

|| অঞ্জন নন্দী || এখন মাঝরাত। আকাশে বিশাল রূপোর থালার মতো পূর্ণিমার চাঁদ থেকে মোম জোছনা গলে গলে পড়ছে। নিশাচর পাখি আর নেট জগতের মানুষ ছাড়া সবাই ঘুমের দেশে। কুয়াশা ভেদ করে শহরের পথে আয়েশি ভঙ্গিতে একটা বাঘ হেঁটে হেঁটে চলছে। যেনতেন বাঘ নয়, একেবারে রয়েল বেঙ্গল...

ক্রীম

মূল: হারুকি মুরাকামি অনুবাদ: মিলটন রহমান আমার এক তরুণ বন্ধুকে অতীত জীবনে ঘটে যাওয়া একটি অদ্ভুদ ঘটনা সম্পর্কে বলছিলাম। তখন আমার বয়েস ছিলো আঠারো।  ঠিক মনে করতে পারছিনা কেনো তাকে সে ঘটনা বলতে শুরু করেছিলাম। কথা প্রসঙ্গেই ঘটনাটি উঠে এসেছিলো। অনেক আগের সেই ঘটনা। বলা...

হুমায়ুন আজাদ–রাঢ়ি খালের মুগ্ধকিশোর

আলমগীর শাহরিয়ার রাঢ়িখাল-তিন ভাগ পানি আর এক ভাগ মাটির ছোটবড়ো অনেক পুকুর আর ডোবাভরা এক গ্রাম। এক সময় বাংলার গ্রামগুলি এমন ছিল। নদীর পাড়ে পাড়ে গঞ্জ। খালের পাড়ে পাড়ে গ্রাম। বিলম্বিত বর্ষায় গ্রামের চারপাশে ফোটে থাকতো শাপলা ফুল। জারুল স্বাগত জানাতো গ্রীষ্ম ও...

স্মরিব ‘কাল নিরবধি’

সেলিম জাহান আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব তাঁর  শিক্ষার্থী ছিলেন। আমার অনেক অগ্রজেরও শিক্ষক ছিলেন তিনি। তবু পাঁচ বছর আগেও প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আমাকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করতেন। যু্ক্তি ছিল তাঁর একটাই - তাঁর কন্যার শিক্ষককে তিনি ‘তুমি’ বলতে পারেন না। আশির...

‘মধুমালা’ মিষ্টির দোকান

|| হামিদ মোহাম্মদ || ‘মধুমালা’মিষ্টির দোকান যেদিন যাত্রা শুরু করলো, সেদিন মানুষের ভিড় দেখে বিজয়পাল চমকে যায়। এতোদিন এতো মানুষ কোথায় ছিল? এরা তো এই এলাকারই লোক! তাদের আলাইঘর বা মিষ্টির দোকান চল্লিশ বছরের পুরোনো, এভাবে তো মানুষ ভিড় করেনি, লাইন ধরেনি মিষ্টি কিনতে।...