পত্রিকা প্রতিবেদন ♦
লণ্ডন, ২৮ নভেম্বর: আধুনিক যুক্তরাজ্যের সমাজে পারিবারিক নির্যাতন এখনও বড় সমস্যা হয়ে রয়ে গেছে। এ বিষয়ে সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানানো হয়েছে ওয়েস্টমিন্সটার পার্লামেন্টের এক বিতর্কে।
পূর্ব লণ্ডনের পপলার অ্যাণ্ড লাইমহাউজ আসনের এমপি আফসানা বেগমের উদ্যোগে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ওয়েস্টমিন্সটার হলে গত ২২ নভেম্বর মঙ্গলবার এ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। ডোমেস্টিক এবিউজ অ্যাণ্ড পাবলিক লাইফ শীর্ষক এই বিতর্কে পারিবারিক নির্যাতনের জের ধরে বিচ্ছেদপরবর্তী প্রতিশোধমূলক আচরণের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়। বক্তারা বলেন, পারিবারিক নির্যাতনের যে সংজ্ঞা রয়েছে তা পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্য যথেষ্ট নয়। এখন বিচ্ছেদের পরও মানুষ নানাভাবে হয়রানি ও প্রতিশোধমূলক আচরণের শিকার হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব প্রতিশোধপরায়ন আচরণের ঘটনাগুলো ঘটছে পরোক্ষভাবে। ভুক্তভোগী ব্যক্তি নারী হলে কিংবা পাবলিক লাইফে বিচরণ করলে তাঁরা সহজেই প্রতিশোধমূলক আচরণের শিকার হতে পারেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি আফসানা বেগম নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তাঁর সাবেক স্বামীর দ্বারা তিনি পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিচ্ছেদের পরও তাঁকে নানাভাবে ভোগান্তি সইতে হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে হাউজিং জালিয়াতির মিথ্যা মামলায় তাঁর সাবেক স্বামীর সংশ্লিষ্টতার কথা তিনি তুলে ধরেন। এছাড়া, পপলার অ্যান্ড লাইমহাইজ আসনে ট্রিগার ব্যালট প্রক্রিয়ায় তাঁর সাবেক স্বামীর লোকজনের প্রভাব বিস্তারের কথাও তিনি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিচ্ছেদের পর ক্ষমতা আর প্রভাব মোকাবেলা কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়ায়। পারিবারিক নির্যাতনের প্রতিশোধপরায়ন এই আচরণ সম্পর্কে সকলকে সজাগ করতে তিনি কাজ করবেন বলে জানান। পারিবারিক নির্যাতনের ঘটনাগুলো বিবেচনায় আইন-আদালতকেও সামগ্রিক পরিস্থিতির বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া উচিত।
আফসানা বেগমের ডাকে অনুষ্ঠিত এই বিতর্ক সমর্থন করে ২৫ জন এমপি সাক্ষর করেছেন। লেবারের পাশাপাশি কনজারভেটিভ, লিবারেল ডেমোক্র্যাটসহ পার্লামেন্টের অন্যান্য দলের এমপিরাও আছেন এর মধ্যে। আধা ঘন্টার এই বিতর্কে এক ডজনের বেশি এমপি অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা বলেন, যুক্তরাজ্যে স্বামী-স্ত্রী বা সঙ্গীর ওপর নির্যাতন অহরহ ঘটছে। এ নির্যাতন যতটা না শারীরিক তার চাইতে বেশি মানসিক। সম্পর্কের টানাপোড়েনের জের ধরে পারিবারিক সহিংসতা কেবল বিচ্ছেদের মধ্যদিয়ে সমাধান হচ্ছে না। বিচ্ছেদের পরও নানাভাবে প্রতিশোধপরায়ন আচরণের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে নারীরা এমন আচরণের ভুক্তভোগী। আর যেমন নারী রাজনীতি কিংবা সমাজসেবার মত কাজে যুক্ত তারা প্রতিশোধপরায়ণ আচরণের সহজ শিকারে পরিণত হন।