পত্রিকা প্রতিবেদন ♦
লন্ডন, ১৬ জানুয়ারি: সাংবাদিক অজয় পালকে আলতাব আলী পার্ক শহীদ মিনারে কমিউনিটি ও সাংবাদিক মহল শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ১৬ জানুয়ারি অপরাহ্নে নাগরিক কমিটির ব্যানারে আয়োজিত এই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন সাংবাদিক, লেখক, সংস্কৃতিকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বাঙালি কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরা। বাংলাদেশ হাইকমিশন ও টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের প্রতিনিধিরাও এতে উপস্থিত হন।
শ্রী অজয় পালের মরদেহ শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আনা হয় বেলা ১টায়। সংক্ষিপ্ত এক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান উপস্থিত নেতৃবৃন্দ। এ সময় শোকবিধুর পরিবেশে অনেকেরই চোখ ছিল ছল ছল। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাংবাদিক আহাদ চৌধুরী বাবু। প্রথমে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন সঙ্গীতশিল্পী শ্রী হিমাংশু গোস্বামী ও গৌরী চৌধুরী। এরপর সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করে শোনান কবি দিলু নাসের। শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষে প্রেস মিনিস্টার সাংবাদিক আশিকুন নবী চৌধুরী, ইসমাইল হেসেন, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের পক্ষে কাউন্সিলার ইকবাল আহমদ, কাউন্সিলের পলিটিক্যাল এডভাইজার মুহম্মদ জুবায়ের, লেবার পার্টির নেতা আবদাল উল্লাহ, কমনওয়েথ সাংবাদিক এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাহাস পাশা, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের পক্ষে সহসভাপতি রহমত আলী, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি সৈয়দ আনাস পাশা, প্রেসক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট নবাব উদ্দিন, ইউকে বাংলা রিপোটার্স ফোরামের সভাপতি মতিয়ার চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আহাদ চৌধুরী, শহীদ মিনার কমিটির পক্ষে আলতাফুর রহমান মোজাহিদ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য জাসদ, সিপিবির নেতৃবৃন্দ এবং উদীচীর সভাপতি হারুন অর রশীদ, সাবেক সেক্রেটারি আমিনা আলী, কবি হামিদ মোহাম্মদ, সাংবাদিক আনসার আহমদ উল্লাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক আবু মুসা হাসান, শিক্ষাবিদ মুহম্মদ আবদুর রাকীব, যুবনেতা জামাল আহমদ খানসহ প্রমুখ। এরপর মরদেহে উপস্থিত সকলে ফুল দিয়ে শ্রী অজয় পালকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। বক্তব্য রাখেন শ্রী অজয় পাল তনয় শ্রী দীপায়ন দীপ। তিনি তার পিতার প্রতি কমিউনিটির এমন ভালোবাসা প্রদর্শনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এর আগে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের এই কলম সৈনিককে সম্মান জানানো হয় এবং জাতীয় পতাকা দিয়ে তার মরদেহ আচ্ছাদিত করা হয়। লন্ডনস্থ বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনীমের লিখিত শোকবাণী তার পুত্রের কাছে হস্তান্তর করেন প্রেস মিনিস্টার আশিকুন নবী চৌধুরী।
শ্রদ্ধাতর্পণ অনুষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণে ভরপুর ছিল কীর্তিমান সাংবাদিক অজয় পালের বর্ণাঢ্য সাংবাদিক ও লেখক জীবন সম্পর্কে নানা স্মৃতি। আলোচনায় উঠে আসে তার হাস্যোজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব, বন্ধুসুলভ আচরণ ও সৃষ্টিশীল লেখনি, প্রতিবাদী ব্যক্তিত্ব ও আপসহীন দেশপ্রেমিকের নানা কথকতা।
উল্লেখ্য, গত ৪ জানুয়ারি শ্রী অজয় পাল স্ট্রোকে আক্রান্ত হন এবং রয়েল লন্ডন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ১৯৫৩ সালে হবিগঞ্জের আদ্য পাশা গ্রামে শ্রী অজয় পালের জন্ম। সিলেট নগরীর দাড়িয়াপাড়ার বাসিন্দা অজয় পাল বিলেত এসে আবাস গড়েন বাঙালী পাড়া টাওয়ার হ্যামলেটসে।