।। হামিদ মোহাম্মদ ।।
আজ ৭ মে লন্ডনে তুমুল রোদ, রৌদ্রকরোজ্জ্বল দিন
গতকাল ছিল ঝিরঝির বৃষ্টি রাজার অভিষেক, আজ নেই বৃষ্টি
এই দিনে লন্ডনে কিনুগোয়ালার গলিতে রবীন্ত্রনাথের বাঁশি কবিতার কানাকানি
জীবনানন্দের বনলতা সেন ঘুরে বেড়াচ্ছেন ট্রাফালগার স্কয়ার, হাইডপার্ক
অক্সফোর্ড স্ট্রিটের দোকানে দোকানে, পিকাডেলী সাকার্সের উন্মাতাল পরীর ডানায়।
সাথে আছেন সুনীলের নীরা
পাতাল রেলেও নাকি তাদের দেখা গেছে হই-হুল্লোড় মাতমাতি,কবিতাপাঠ করতে!
লাল লাল খোলা বাসে তারা ঘুরছেন লন্ডনের এ মাথা ওমাথা
কত না দৃশ্য–
পেছন থেকে কে যেন ডাক দিল, সেকি সুনীল! লুটোপটি শুরু হয় নীরার!
বনলতা আর নীরা এক সঙ্গে আঁচল উড়িয়ে লন্ডনের আকাশে ওড়াচ্ছেন ঘুড়ি
এসব দৃশ্য দেখে এসেছেন আমার প্রতিবেশী,
এখনো দৃশ্যমান বলে উচ্ছ্বসিত সহকর্মী
আমাকে টেনে নিয়ে এলেন বাইরে
লন্ডনে বনলতা সেন আর নীরা
নীরার শাড়ি
বনলতা সেনের জীবনানন্দ
মুখোমুখি বসিবার কাল এখানে নাকি উদাম!
এসব আমি দেখেছিলাম ঘুমের ভেতর। লিখছিলাম কবিতা।
হ্যা, ঘুম ভাঙার পর যতটুকু পারি মনে করে লিখলাম সেই কবিতাখানি।
অথচ, বন্ধুরা সাক্ষী দেয়
সাক্ষ্য দিচ্ছিলো শত শত লোক, শত শত তরুণ তরুণী
ঘটনা নাকি সত্যি ঘটেছিল এই লন্ডনে, দিনটি ৭ মে রোববার দু’হাজার তেইশ
আমি এতোসব কিচ্ছাকাহিনি শুনে সবান্ধব
বিমূঢ় চেয়ে আছি টেমসের জলে চোখ পাতি
তাকিয়ে আছি স্টার্টফোর্ডের ওয়েস্টফিল্ডের উঁচু শপিংমলের ঝিলমিল
সাইনবোর্ডে
উথালি-পাথালি এই আসে এই যায়
চোখ ধাঁধানো নানা পণ্যের ফিরিস্তি।
ঘুম থেকে উঠে নীরা আর বনলতা সেনকে পুনরায় খুঁজতে বেরোয়ই লন্ডনের
কিনুগোয়ালার গলির মোড়ে, ট্রাফালগার স্কোয়ার, পিকাডেলী ও পাতাল রেলে।
ঘুরি আর ফিরি—
এখনো ঘুমঘোর আমি প্রেমে-পড়া যুবক
স্বপ্ন কি এতোই বৈরাগী স্বভাবের, উত্তর খুঁজিতে বার বার বৈরাগী হই।
হায়—
নীরা আর বনলতা সেন লন্ডনে এলে আমাকে খালি
দোষে পায়।