মুহম্মদ ইমদাদ
প্রেমের কবিতা
প্রেমের কবিতা পারি না!
আমি গাই আগুন-লাগা নারী,
তারে জাপটে ধরি, বলি,
আমি গাঙে ভাসা ছেলে,
আমার সারা অঙ্গে পানি!
আমারে জড়াও তোমাতে
আর দহন করো দান,
বিনিময়ে আমি তোমার
ফেলা দেওয়া সন্তান!
মাটির খাদ্য
মানুষ একটা ফলের নাম। মাটির খাদ্য।
ঝরে পড়লে মাটির মুখে তুলে দিতে হয়।
কাউকে রান্না করে আর কাউকে কাঁচা।
বিষ
সাপের বিষ আছে।
মানুষের বিষ নাই।
সাপের কামড়ে সাপ মরে না।
মানুষের কামড়ে মানুষ মরে।
মানুষ তার শৈশবের কঙ্কাল
আমি আমার শৈশবের কঙ্কাল
অচেনা সময়ের কাঁটাতারে ঝুলে আছি
যে মাটিতে গোলাপ ফোটাতে চেয়েছিলাম
সে আমার কবর হওয়ার জন্য দম ধরে বসে আছে।
মানুষের ভূমিকা পালন
বিষয়ের ভূমিকা
নদী দাঁড়াতে পারে না। শুয়ে থাকে।
মাঝে মাঝে তার দাঁড়াতে ইচ্ছা করে
এই ইচ্ছার নাম ঢেউ।
ঢেউ খুব বড় হলে পাড় ভেঙে
নদী চলে যায় নদীর বাইরে।
বাইরে গিয়ে শুয়ে থাকতে হয়।
এইভাবে দেখা গেছে শুধু নদী না
পানির শরীর যার যার
তারা সকলেই জন্ম থেকেই শায়িত
দাঁড়াতে গিয়ে অঘটন ঘটায়।
অন্যদিকে মানুষ হাঁটতে পারে। শুতে পারে
ঘুমানোর সময় মূলত শুতে হয়
দাঁড়িয়ে বা হেঁটে মানুষ ঘুমাতে পারে না।
এই জন্য মানুষের বিছানার দরকার হয়।
নদীর বিছানা মাটি। নদীরে নদীর মতো
করে রাখে যে-পার দুইটি
তারাও মাটির তৈরি।
মাটি কিছু পানি চুষে নেয়
নিয়ে গাছগাছালিরে ফুল-ফল দেয়
নদী তাতে রাজিই থাকে।
খুব ঠাণ্ডা পড়লে নদীর বরফ হয়ে
থেমে যেতে হয়। তাই সূর্য তারে সাহায্য করে
বিনিময়ে কিছু পানি সূর্যও নিয়ে যায়
নিয়ে মেঘ বানায়।
মেঘ ঝরলে বৃষ্টি হয়
গাছগাছালির ওপর পড়ে।
ফুল-ফল ভালো হয়।
মানুষ তা খায়। পশু-পাখিও খায়
মাটি, নদী বা সূর্য কিছু খায় না
নদীতে আবার মাছ ইত্যাদি থাকে
মানুষ জাল ইত্যাদি দিয়ে মাছ ধরে খায়
কিন্তু মানুষের নদীর বা সূর্যের বা মাটির মতো
কোনো ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় না।
কেন দেখা যায় না তা তারাই ভালো জানে।