ব্রিটেনে ন্যূনতম দুই বছরের কাজ অথবা লেখাপড়ার প্রমাণ লাগবে মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের জন্য নতুন শর্ত ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্যও ‘লাইফ ইন দ্য ইউকে’
পত্রিকা ডেস্ক
লণ্ডন, ১২ জুন: অভিবাসী নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থী ভিসায় পরিবার বা ডিপেনডেন্ট আনার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপের পর এবার স্থায়ী অভিবাসন আরো কঠোর করার পরিকল্পনা নিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, ব্রিটেনে স্থায়ী হওয়ার আবেদন অর্থাৎ ‘ইণ্ডিফিনিট লিভ টু রিমেইন’ (আইএলআর)-এর আবেদন করতে ন্যূনতম ৮ বছর এদেশে বসবাসের শর্তারোপ করতে যাচ্ছে হোম অফিস। বর্তমান নিয়মে আয়ের সুনির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করা সাপেক্ষে ৫ বছর ব্রিটেনে বসবাসের পর ‘আইএলআর’ বা স্থায়ী বসবাসের আবেদন করা যায়। বিশেষ করে ওয়ার্কপারমিট ভিসায় যারা আছেন তারা এ সুযোগটা নিয়ে থাকেন। সরকারের নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ৫ বছর পর যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ আর থাকবে না।
তখন ৫ বছরের স্থলে আইএএলআর-এর আবেদন করতে হলে প্রার্থীকে ন্যুনতম ৮ বছর অপেক্ষা করতে হবে। আইএলআর আবেদনের জন্য ব্রিটেনে বসবাসের ন্যূনতম সময়সীমা ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৮ বছর করার পরিকল্পনার পক্ষে সরকারের যুক্তি হচ্ছে- স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমোদন পাওয়ার আগে অভিবাসীদের যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে আরও বাড়তি সময় ধরে অবদান রাখাটা যৌক্তিক। এছাড়া, সরকারের পরিকল্পনায় আইএলআর আবেদনের ক্ষেত্রে আরও কিছু পরিবর্তনের কথা ভাবা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে আছে- আবেদনকারীকে ব্রিটেনে ন্য‚নতম দুই বছরের কাজ অথবা লেখাপড়ার প্রমাণ দিতে হবে। একই সঙ্গে আবেদনকারী আবেদনের আগের দশ বছর কোনও মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলে তিনি স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদনের যোগ্যতা হারাবেন।
এছাড়া বর্তমান নিয়মে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের স্থায়ীভাবে বসবাসের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের জীবনধারার ওপর পরীক্ষা (লাইন ইন দ্য ইউকে) প্রয়োজন হতো না। কিন্তু নতুন প্রস্তাবে তাদের জন্যও ‘লাইফ ইন দ্য ইউকে’ পরীক্ষার বিধান রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেছিলেন, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ করা তার মূল লক্ষ্যগুলোর একটি। এরপর এই কড়াকড়ি আরোপের প্রস্তাবের বিষয়টি মূলধারার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম উঠে এসেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী বছর অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনকে সামেেন রেখে অভিবাসন-বিরোধী ব্রিটিশ ভোটারদের মন জয় করতে চায় ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভরা। যে কারণে দীর্ঘ প্রায় ১৩ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটি অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে বার বার ব্যর্থ হওয়ার পরও নতুন নতুন কঠোরতা আনার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। যুক্তরাজ্য সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, অন্য দেশ থেকে এসে যুক্তরাজ্যের নাগরিক হওয়া একটি বিশেষ সুবিধা। এটি কোনো অধিকার নয়। যারা এই বিশেষ সুবিধা নিতে চাইবেন তাদের অবশ্যই যুক্তরাজ্যের জন্য যথেষ্ট অবদান রাখা আবশ্যক।