পত্রিকা ডেস্ক
লণ্ডন, ০৯ অক্টোবর: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ট্রান্সজেণ্ডারদের নিয়ে কথা বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মানুষ চাইলেই তার ইচ্ছেমতো লিঙ্গ পরিবর্তন করতে পারে না। তিনি বলেন, ‘একজন পুরুষ পুরুষই, আর একজন নারী, নারীই।’
গত বুধবার ২০২৩ সালের কনজারভেটিভ পার্টির সম্মেলনে দেওয়া সমাপনী বক্তব্যে ঋষি সুনাক এ মন্তব্য করেছেন। সম্মেলনে ঋষি সুনাক বলেন, ‘মানুষ চাইলেই যেকোনো লিঙ্গ বদল করে নিতে পারে, তা বিশ্বাস করা উচিত নয়-তারা তা করতে পারে না। এটা সাধারণ জ্ঞান।’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা এই দেশকে বদলে দিতে যাচ্ছি এবং এর অর্থ, জীবন মানে জীবন। এটা নিয়ে বিতর্কিত অবস্থানে যাওয়া উচিত নয়। কঠোর পরিশ্রমী মানুষ এর সঙ্গে একমত। মা-বাবার জানা উচিত, স্কুলে ছেলেমেয়েরা সম্পর্ক নিয়ে কী শিখছে। হাসপাতালগুলো পুরুষ বা নারীদের লিঙ্গান্তর নিয়ে কী ভাবছে, তা-ও রোগীদের জানা উচিত।’
অনেকেই ঋষি সুনাকের এই দৃষ্টিভঙ্গি সমর্থন করেছেন। ট্রান্সজেণ্ডারদের প্রতি ‘অসম্মানজনক’ বক্তব্য দেওয়ায় অনেকে ক্ষুব্ধও হয়েছেন। আবার কেউ কেউ তাঁর ‘সাধারণ জ্ঞান অনেক কম’ বলে উপহাস করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন বলেছেন, এটি কেবল ক্ষুদ্রতম নয়, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়ের ওপর ক্রমাগত জঘন্য আক্রমণ। আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘সুনাকের গণিতের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলায় আমি খুব হতাশ, কিন্তু জীববিজ্ঞানের জ্ঞানও খুব কম। জন্মগত লিঙ্গ অনেক জটিল ও আকর্ষণীয়, তা মোটেই “সাধারণ জ্ঞান” নয়।’ আরেকজন ব্যবহারকারী বলেছেন, ‘সুনাক যৌনতা ও লিঙ্গের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারেন বলে মনে হয় না। টোরি পার্টি আরও বেশি উগ্র হয়ে উঠছে, এটা ভীতিকর।’
গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্টিভ বার্কলে ইংল্যাণ্ডের নারী হাসপাতালের ওয়ার্ডে ট্রান্সজেণ্ডার নারীদের চিকিৎসা নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনার প্রস্তাব করেন। এরপরই ঋষি সুনাক এ মন্তব্য করেন। স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও নিশ্চিত করেছেন, নারীদের স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার সময় লিঙ্গ-নির্ধারিত ভাষা ব্যবহার করা হবে। প্রস্তাবটি মধ্যপন্থী টোরি এমপিদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। তাঁদের ধারণা, এলজিবিটিকিউপ্লাস মানুষদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। গত এপ্রিলে কনজারভেটিভ হোমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঋষি সুনাক ট্রান্সজেণ্ডার অধিকারের বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘নারীদের কোনো পুরুষাঙ্গ থাকে না।’