আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

“শুরুর দিকে কোনো সিভিডির লক্ষণ সবসময় না-ও থাকতে পারে। আর বয়স বাড়ার সাথে সাথে সিভিডি-আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় এবং জাতিগতভাবে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে এটি বেশি হতে পারে। তাই আমাদের ঝুঁকি কমানোর জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা করা উচিত ।”

আখতার নাসিম
কনসালট্যান্ট ভাসকুলার সার্জন ও ক্লিনিক্যাল ডিরেক্টর, শেফিল্ড

আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

“আপনি যদি কৃষ্ণাঙ্গ বা এশীয় জাতিগত সম্প্রদায়ের সদস্য হন তবে আপনার উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেশি এবং এটি তুলনামূলক কম বয়সে হতে পারে। জিপি সার্জারি ও বেশিরভাগ ফার্মেসিতে গিয়ে রক্তচাপ জেনে নিতে পারেন অথবা ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মেশিন কিনে নিজেই রক্তচাপ পরীক্ষা করতে পারেন।”

ডা. ক্রিস অলুকান্নি
জিপি এবং কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, এসেক্স

আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

“আপনি যদি কৃষ্ণাঙ্গ বা এশীয় জাতিগত সম্প্রদায়ের সদস্য হন তবে আপনার উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেশি এবং এটি তুলনামূলক কম বয়সে হতে পারে। জিপি সার্জারি ও বেশিরভাগ ফার্মেসিতে গিয়ে রক্তচাপ জেনে নিতে পারেন অথবা ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মেশিন কিনে নিজেই রক্তচাপ পরীক্ষা করতে পারেন।”

রণজিৎ সিং
‘ট্রিপল বাইপাস সার্জারি’র পর এখন সুস্থ জীবনযাপন করছেন
শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

স্মরণ

‘আমড়া গাছে তিন উকিলের বাসা’

১২ জানুয়ারি ২০২৩ ৩:৫১ অপরাহ্ণ | স্মরণ

হামিদ মোহাম্মদ ♦

লণ্ডন, ১২ জানুয়ারী ২০২৩:

‘আমড়া গাছে তিন উকিলের বাসা’ অজয় পালের একটি সংবাদ শিরোনাম। প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭৮ সালে ‘সিলেট সমাচার’ পত্রিকায়। সংবাদটির শিরোনাম দেখেই যে কোন পাঠক বুঝতে পারবেন, অজয় পাল কতটুকু রসবোধসম্পন্ন সাংবাদিক ছিলেন।

সিলেট প্রেসক্লাবের পাশের গলির মুখে একটি আমড়া গাছ। সেই আমড়া গাছে পেরেক ঠুকে তিনটি সাইনবোর্ড। তিন উকিল তাদের বৃত্তান্ত দিয়ে সাইনবোর্ড টাঙিয়েছেন। এই সাইনবোর্ড অজয় পালের দৃষ্টি এড়ায়নি। সঙ্গে সঙ্গে পত্রিকায় নিউজ। এ নিয়ে ঐ উকিলদের সাথে সংবাদ প্রকাশের পর বাকবিতণ্ডা হয়। স্বভাবসুলভ কৌতুকপূর্ণ হাস্যরসে তাদের ক্ষোভ তিনি তখন উড়িয়ে দেন। আরেকটি সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘বিড়াল কি আগে জানতো?’। ঈদগাহ এলাকায় এক বাসার পাকঘরে বিড়াল ঢুকে পাতিল উল্টে রান্নাকরা মাছ খেয়ে ফেলে। এই বিড়ালটি আবার পাশের বাসায় বেশি আনাগোনা করতো। ভুক্তভোগী ব্যক্তি দায়ী করলেন বিড়ালটি পাশের বাসার পালিত। সুতরাং, আর যায় কই? যেই ভাবা সেই ঝগড়া শুরু, পরে মারামারি। বিষয়টি থানা হাজত আদালত পর্যন্ত গড়ায়। কাহিনিটি শুনে অজয়দা ‘বিড়াল কি আগে জানতো’ শিরোনামে নিউজ করলেন রসিয়ে রসিয়ে বর্ণনা দিয়ে। পাঠকরা পড়ে মজা পায়।

অজয় দা সিরিয়াস কোন ঘটনা বা জটিল বিষয় নিয়ে যেভাবে নিউজ করতেন, যা রুদ্ধশ্বাসে পড়তে হতো পাঠককে। এমনি প্রাঞ্জল ভাষায় সংবাদ লেখার একটি ফর্ম দাঁড় করিয়েছিলেন সিলেটে তিনি। সংবাদ লেখায় আমাদের হাতে খড়ি হয়েছে অজয়দার ছায়ায়ই। 

১৯৭৬ সালের জানুয়ারি মাসে আমি যখন যুগভেরীতে কাজ শুরু করি তখন অজয়দা যুগভেরী ছেড়ে দিয়েছেন। তবে দৈনিক সংবাদ-এর জেলা প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। এখনকার মত জাতীয় দৈনিকের প্রতিনিধিদের সে সময় অফিস ছিল না। ঘরে বসে বা প্রেসক্লাব অফিসে কিংবা জরুরী নিউজ টেলিফোন অফিসে গিয়ে ট্রাংককলে বা ফোনে প্রেরণ করা হতো। অজয় পাল ঘটে যাওয়া কোন ঘটনার কোন নিউজ কোনদিন মিস করতেন না, সকালে ঢাকা থেকে দৈনিক পত্রিকা এলেই সংবাদ পত্রিকার পাতা খুলে প্রতিদিন অজয় দার লেখা নিউজ বা প্রতিবেদন পাঠক আলাদা স্বাদে পেতেনই। আমরাও মুখিয়ে থাকতাম, অজয়দার ভিন্ন ধারার প্রতিবেদন পড়ার জন্য।   

অজয় পাল যুগভেরী ছেড়ে কিছুদিন ‘সাপ্তাহিক দেশবার্তা’র কাষ্টঘর অফিসে কাজ করেছেন, এর পর সাপ্তাহিক সমাচার প্রকাশিত হলে যোগ দেন নতুন এই পত্রিকাটিতে। স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে কখনো সহকারি সম্পাদক, কখনো বার্তা সম্পাদক পদেই তিনি কাজ করেছেন। সিলেট শহরে সাংবাদিক হিসাবে অজয় পাল সুধীমহলে আদৃত ছিলেন তার সততা ও নিষ্ঠার জন্য। হলুদ সাংবাদিকতার স্থান ছিল না তার কাজের মধ্যে। আমরা দেখেছি, যেখানে প্রশাসনের তাবেদার হিসাবে অনেকেই নানা সুবিধা নিয়েছেন, অজয় পাল সেখানে ভিন্ন। বরং প্রশসানের রোষানলে পড়ে কারাবরণ করেছেন। সমাজে ব্যক্তিগত অবস্থান, সামাজিক মর্যাদা, সাংবাদিকতার পেশাদারিত্ব সব কিছুই তিনি নিয়েছিলেন চ্যালেঞ্জ হিসাবে।

যুগভেরীতে ‘শাপলার মেলা’ নামে শিশুপাতাটি চালু করেছিলেন অজয়পাল। ছিলেন যুগভেরীর সহকারি সম্পাদক। তাকে ঘিরেই গড়ে ওঠেছিল ‘শাপলারমেলা’ শিশুকিশোর সংগঠন। প্রতিমাসে বসতো তরুণ লেখকদের লেখাপাঠের আসর। পঠিত ভাল লেখাগুলো পত্রিকায় প্রকাশ করা হতো।  নতুনদের জন্য ছিল তা উত্তেজনাপূর্ণ। অজয় পাল যুগভেরী ছাড়ার পর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান তা অব্যাহত রাখেন। যুগভেরীতে আমি যোগ দিয়ে শাপলারমেলার দায়িত্ব নিই। দীর্ঘ দিন শাপলারমেলা চালু ছিল। অজয়পাল সৃষ্ট শাপলার মেলা সিলেটে অনেক প্রতিশ্রুতিশীল কবি ও লেখকের জন্ম দিয়েছে। লেখালেখি, সাংবাদিকতা, সাংস্কৃতিক কাজে সিলেটে একটি বলয় সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন অজয় পাল। দুহাতে গান ও সৃজনশীল ছড়া লিখেছেন, রেডিওতে সংবাদ পাঠ করেছেন, নাটক করেছেন। কী-ই না করেছেন অজয় পাল। কিন্তু স্ট্যান্টবাজির সাংবাদিকতা বা রাজধানি কেন্দ্রিক সাংবাদিকতায় ঝাঁপ দেননি তিনি। লন্ডনে এসেও সাংবাদিকতায় যুক্ত থাকেন। এখানেও নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলেন অজয় পাল।   সিলেটের উজ্জ্বল সেই দিনগুলোতে তার গুণমুগ্ধ ছিলাম আমরা এক ঝাঁক তরুণ। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা কখনো কমতি হয়নি। বিলাতের বাঙালি সমাজেও অকুণ্ঠ ভালোবাসা কুড়িয়েছেন তিনি। মধুর সম্পর্ক ছিল সকলের সাথে। সেই অকৃত্রিম ভালোবাসার মানুষটি ভালোবাসার সম্পর্ক ছিন্ন করে সহসা পরপারে পাড়ি দিলেন। অমোঘ মরণ ছাড়লো না তাকে। অজয়দা, তুমি যেখানেই থাকো, ভালোবাসা ছিন্ন হবে না কোনদিন। যদি পুর্নজন্ম সত্য হয়, সাংবাদিক হয়ে এসো। স্মিত হাসি মুখের অজয় পালকে সাংবাদিক হিসাবেই পুনরায় দেখতে চাই আমাদের দুঃখদিনের সাথী, হে সারথি বন্ধু। 

লেখক: কবি, সাংবাদিক  

সবচেয়ে বেশি পঠিত

ড. ইউনূসের আরো স্থায়িত্বের প্রশ্নে কিছু কথা

ড. ইউনূসের আরো স্থায়িত্বের প্রশ্নে কিছু কথা

গাজীউল হাসান খান ♦ আজকাল কোনো রাজনৈতিক কথা বলা কিংবা লেখার ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে বলে মনে হয়। কোনো ব্যাপারে বক্তা কিংবা লেখকের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গেই একটি পক্ষ নির্ধারণের প্রবৃত্তি দেখা দিয়েছে। অর্থাৎ বক্তা বা লেখক রাজনীতিগতভাবে কোন পক্ষের...

দেশ কারো একার নয়, দেশ সবার

গাজীউল হাসান খান ♦ বাংলাদেশের স্বাধীনতা আমাদের পূর্বপুরুষদের অর্থাৎ এই অঞ্চলের মানুষের হাজার বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় পর্যায়ক্রমে অবিভক্ত বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলিম হিসেবে আবির্ভূত হলেও এই ভূখণ্ডে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যে...

আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

আমাদের হৃদযন্ত্রের কাজ হলো শরীরে রক্ত সঞ্চালন (পাম্প) করা। কার্ডিওভাসকুলার রোগ (সিভিডি) হৃদযন্ত্রের বা রক্তনালীগুলোর উপর প্রভাব ফেলে এবং এই রোগ বিশ্বব্যাপী অকাল মৃত্যু ও মানুষের অসক্ষম (ডিসএবল) হয়ে পড়ার প্রধান কারণ। তাই আমাদের বোঝা প্রয়োজন- কীভাবে আমাদের...

বাংলাদেশ-চীন সুদৃঢ় বন্ধনে জড়ানো আবশ্যক

গাজীউল হাসান খান ♦ চীনের একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতা সম্প্রতি বলেছেন, বাংলাদেশের উচিত তার নিজ জাতীয় স্বার্থে কাজ করা, কোনো তৃতীয় পক্ষের জন্য নয়। কিন্তু পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব কাজ দেশের স্বার্থে করেননি,...

শীতকালীন সর্দি-জ্বর নয় – রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) থেকে নিজেকে সুরক্ষিত করুন

শীতকালীন সর্দি-জ্বর নয় – রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) থেকে নিজেকে সুরক্ষিত করুন

রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস সংক্ষেপে আরএসভি দ্বারা সৃষ্ট ফুসফুসের গুরুতর সংক্রমণ নিয়ে প্রতি বছর আমাদের হাজার হাজার বয়স্ক মানুষ এবং শিশু হাসপাতালে ভর্তি হন। এক্ষেত্রে আপনার কী জানা দরকার সে বিষয়ে জিপি ডাঃ মোহিত মন্দিরাদত্তা এবং ডা. ওজি ইলোজু ব্যাখ্যা করছেন। ডাঃ...

আরও পড়ুন »

 

ড. ইউনূসের আরো স্থায়িত্বের প্রশ্নে কিছু কথা

ড. ইউনূসের আরো স্থায়িত্বের প্রশ্নে কিছু কথা

গাজীউল হাসান খান ♦ আজকাল কোনো রাজনৈতিক কথা বলা কিংবা লেখার ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে বলে মনে হয়। কোনো ব্যাপারে বক্তা কিংবা লেখকের নিজস্ব মতামত প্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গেই একটি পক্ষ নির্ধারণের প্রবৃত্তি দেখা দিয়েছে। অর্থাৎ বক্তা বা লেখক রাজনীতিগতভাবে কোন পক্ষের...

দেশ কারো একার নয়, দেশ সবার

গাজীউল হাসান খান ♦ বাংলাদেশের স্বাধীনতা আমাদের পূর্বপুরুষদের অর্থাৎ এই অঞ্চলের মানুষের হাজার বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় পর্যায়ক্রমে অবিভক্ত বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলিম হিসেবে আবির্ভূত হলেও এই ভূখণ্ডে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যে...

আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখুন

আমাদের হৃদযন্ত্রের কাজ হলো শরীরে রক্ত সঞ্চালন (পাম্প) করা। কার্ডিওভাসকুলার রোগ (সিভিডি) হৃদযন্ত্রের বা রক্তনালীগুলোর উপর প্রভাব ফেলে এবং এই রোগ বিশ্বব্যাপী অকাল মৃত্যু ও মানুষের অসক্ষম (ডিসএবল) হয়ে পড়ার প্রধান কারণ। তাই আমাদের বোঝা প্রয়োজন- কীভাবে আমাদের...

বাংলাদেশ-চীন সুদৃঢ় বন্ধনে জড়ানো আবশ্যক

গাজীউল হাসান খান ♦ চীনের একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতা সম্প্রতি বলেছেন, বাংলাদেশের উচিত তার নিজ জাতীয় স্বার্থে কাজ করা, কোনো তৃতীয় পক্ষের জন্য নয়। কিন্তু পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব কাজ দেশের স্বার্থে করেননি,...