গাজীউল হাসান খান ♦
ইহুদিবাদী ইসরায়েলের হাত থেকে নির্যাতিত ও অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনবাসীর মুক্তির প্রশ্নে গাজার হামাস বাহিনী যখন অনন্যোপায় হয়ে এক সশস্ত্র অভিযানের সূচনা করেছে, ঠিক তখনই সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্রের আসল চেহারা বিশ্ববাসীর সামনে আরেকবার দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে ধরা দিয়েছে। মুক্তবিশ্বের তথাকথিত অভিভাবক ও বিশ্বের অন্যতম প্রধান পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র তখন ফিলিস্তিনের মুক্তির পথ না খুঁজে অত্যন্ত একপেশেভাবে সম্প্রসারণবাদী ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, হামাস বাহিনীর বিস্ময়কর হামলার কারণে যুক্তরাষ্ট্র তার পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোকে বাধ্য করেছে আক্রমণকারীকে সম্মিলিতভাবে নিন্দা জানিয়ে ইসরায়েলের পক্ষ নিতে। হামাসের আক্রমণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার দুই সপ্তাহ পরও যুক্তরাষ্ট্র ও তার সহযোগীরা যুদ্ধবিরতি ঘোষণার ব্যাপারে কোনো সমর্থন দেয়নি।
তাতে অবরুদ্ধে গাজা উপত্যকার হাজার হাজার সাধারণ মানুষ, অর্থাৎ নারী-পুরুষ ও শিশুদের জঙ্গি বিমান থেকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে হত্যা করা হয়েছে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রের কিংবা তার ইউরোপীয় মিত্রদের শত্রু নয়। তবু হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার কারণে সমগ্র ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল সরকার। ধুলায় মিশিয়ে দিচ্ছে গাজাবাসীর ঘরবাড়ি কিংবা আশ্রয়স্থল।
তাদের ঠেলে দেওয়া হচ্ছে উপত্যকার এক অংশ থেকে অন্য অংশে। এবং সেখানেও জঙ্গি বিমান থেকে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী। তার বিরুদ্ধে কিছুই বলছে না যুক্তরাষ্ট্র কিংবা তার পশ্চিমা, অর্থাৎ ইউরোপীয় অন্য মিত্ররা। তারা বরং দখলদার ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে নানাভাবে যুদ্ধবিরতির বিপক্ষে কাজ করে যাচ্ছে।
গাজা উপত্যকাসহ ফিলিস্তিনের দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বিগত ৭৫ বছরের অত্যাচার, নির্যাতন ও অবরোধের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি তারা। যুক্তরাষ্ট্রের বয়োজ্যেষ্ঠ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মুখে এ সমস্যার দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের কথা বললেও বাস্তবে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের নিত্যনতুন বসতি নির্মাণ, ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল কিংবা নির্যাতন-নিষ্পেষণের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তারা বরং সব অবস্থায় ইহুদিবাদী ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন বিশ্বকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করছিল, তখন চীনের বেইজিংয়ে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামের’ অধীনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কর্তৃত্ব ও তত্ত্বাবধানে খণ্ডিত বিশ্বকে জল, স্থল ও আকাশপথে সংযুক্ত করার এক মহান প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছিল। বেইজিংয়ে আয়োজিত হয়েছিল ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের’ (বিআরআই) দশম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এক বিশ্ব সম্মেলন।
তাতে বিশ্বের ১৫০টি দেশের রাষ্ট্র, সরকার ও বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ এক হাজার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছিলেন। গত ১৭ অক্টোবর থেকে আয়োজিত এই বিশাল সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিগত ১০ বছরে বিশ্বব্যাপী গৃহীত বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের অভিজ্ঞতার আলোকে অর্থাৎ পুরনো বিআরআইকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানো। আরো সমন্বয় সাধন করে যুগোপযোগী, টেকসই ও ফলপ্রসূ করা। চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের আমন্ত্রণে সম্মেলনে যোগদানকারী রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাতে বলেছেন, বৈশ্বিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট শি বেল্ট অ্যান্ড রোড কর্মসূচির মাধ্যমে যে বহুমুখী উদ্যোগ নিয়েছেন তার সঙ্গে তিনি সম্পূর্ণ একমত। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষ সূচনার পর এটিই পুতিনের প্রথম বিদেশ সফর। তাতে তিনি আরো বলেছেন, এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার মধ্যে বিআরআই কর্মসূচির মাধ্যমে যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সংযুক্তির কর্মসূচি হাতে নেওয়া হচ্ছে, তা শুধু পারস্পরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রেই নয়, অর্থনীতি ও বাণিজ্যের পথও সুগম করবে। এবং পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আঞ্চলিকভাবে স্থানীয় উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।
চীনের নেতৃত্বে বেল্ট অ্যান্ড রোড কর্মসূচির অধীনে বিগত ১০ বছরে অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় এশিয়া ও আফ্রিকায় যেসব অসামঞ্জস্য ও জটিলতা দেখা গেছে, বর্তমানে নতুন পদক্ষেপে তা দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল মেগাপ্রকল্পের কথা বলা হয়েছে। যেমন-শ্রীলঙ্কার হাম্বামটোটা বন্দর ও কেনিয়ার রেলওয়ে প্রকল্পসহ বিভিন্ন মেগাপ্রকল্প, যার দীর্ঘসূত্রতার কিংবা দীর্ঘ মেয়াদের কারণে পূর্বপরিকল্পিত ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ব্যত্যয় দেখা দিয়েছিল। সে জন্য বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নির্মাণসামগ্রীর দু?্রাপ্যতা ও সরবরাহের ক্ষেত্রে বিলম্ব কিংবা করোনার মতো অতিমারিও বেশ কিছুটা দায়ী। এ ক্ষেত্রে স্বল্পোন্নত কিংবা উন্নয়নশীল দেশগুলো দীর্ঘমেয়াদি মেগাপ্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে স্থানীয়ভাবে যেসব প্রতিকূল অবস্থার সম্মুখীন হয় বেইজিং সম্মেলন তার আলোকে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে। পুরনো বিআরআই প্রকল্পগুলোকে বিগত ১০ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন করে বাস্তবসম্মত কিংবা যুগোপযোগীভাবে সংস্কার করা হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি মেগাপ্রকল্পের তুলনায় এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশে অধিক সংখ্যায় স্বল্পমেয়াদি জরুরি প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের কৌশলকে এবার অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এবারের সম্মেলনের সৌাগান ছিল ‘স্মল ইজ বিউটিফুল’, অর্থাৎ ছোট ছোট প্রকল্পই দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য অধিক উপযোগী, সাশ্রয়ী এবং সুন্দর। এর পাশাপাশি বিআরআই এবার তিনটি বৈশ্বিক উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। আর তা হলো : ১. গ্লোবাল সিভিলাইজেশন ইনিশিয়েটিভ (বৈশ্বিক সভ্যতা বিকাশের উদ্যোগ) ২. গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ) এবং ৩. গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ (বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগ)। যোগাযোগব্যবস্থার দ্রুত উন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এসব ক্ষেত্রে মূল লক্ষ্য হিসেবে কাজ করবে। তার পাশাপাশি রয়েছে বৈশ্বিক নিরাপত্তা বিধান করা। উন্নয়ন, উৎপাদন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও শিল্পোৎপাদনের ক্ষেত্রে স্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করাই হচ্ছে বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।
বিগত দু-তিন বছরের বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে চীনের সার্বিক উৎপাদন, বাণিজ্য এবং সর্বোপরি অর্থনীতি কিছুটা শ্লথ গতি বা নিম্নমুখী হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য শুধু চীন নয়, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্য বিভিন্ন সময়োচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এমন একটি বৈশ্বিক পরিস্থিতিতেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার অনুসারী ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ্ব পরিস্থিতিকে উন্নয়ন ও বাণিজ্যবান্ধব করার পরিবর্তে চীনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নিত্যনতুন করারোপ ও কর বৃদ্ধি করে তার অগ্রগতি কিংবা উত্তরোত্তর উন্নয়ন বা তার ধারাবাহিকতাকে ব্যাহত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। তারা চীনের বিরুদ্ধে এক জটিল বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাতেও থেমে যায়নি চীন ও তার বিআরআই প্রকল্প কিংবা বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন প্রচেষ্টা। চীন বিশ্ব দখল করতে চায় না; বরং তার উন্নয়ন, উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অংশীদার হতে চায়। সে কারণেই প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং এবারের বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামের সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা নতুন অভিজ্ঞতার আলোকে গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পে ৬০ বিলিয়ন ডলারের অধিক পুঁজি বিনিয়োগ করবেন। তা ছাড়া চীন তার পরিকল্পিত সিল্ক রোড (বাণিজ্য পথ) বিনির্মাণে আরো ৮০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। আগামী ৪০ বছর সময়ে চীন তার পরিকল্পিত সিল্ক রোড নির্মাণের কাজ সমাপ্ত করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। সে জন্য চীনকে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা তার সহযোগী দেশগুলোর মতো অর্থ ধার করতে হবে না। চীনের বিভিন্ন বিআরআই প্রকল্প বাস্তবায়ন কিংবা অসমাপ্ত সিল্ক রোড নির্মাণে তাকে কারো কাছ থেকে অর্থ ঋণ করতে হবে না। তার নিজস্ব রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকেই সেই অর্থ জোগান দেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য ছাড়াও চীন এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ‘আসিয়ান’ প্রতিবেশী দেশগুলোর বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদারে পরিণত হয়েছে এবং ২০২২ সালে তার বাণিজ্যের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭৫ বিলিয়ন ডলারে। রাশিয়ার সঙ্গে চীনের বর্তমান বাণিজ্যের পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। তা ছাড়া তুরস্ক, ইরান, সৌদি আরব ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে চীনের উত্তরোত্তর বাণিজ্য বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য আকার ধারণ করেছে। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে তার বাণিজ্য আয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা ওঠানামা কোনো উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে না। বর্তমানে আফ্রিকাব্যাপী চীনের একতরফা বাণিজ্য রয়েছে, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।
চীন তার বর্তমান উন্নত ডিজিটাল পদ্ধতিতে এক নতুন সিল্ক রোড গড়ে তুলতে চায়। তাতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে গ্রিন এনার্জি তৈরি এবং উৎপাদন ও বাণিজ্য ব্যবস্থাকে আরো উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যেতে চায়। সে কারণে বিআরআইসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চীন বেইজিং, সাংহাই ও চংকিং-এর মতো নতুন নগরীতে বহু ‘ওয়ান স্টপ শপ’ গড়ে তুলেছে, যেখানে এক ছাদের নিচে সব উন্নযন প্রকল্প যাচাই-বাছাই ও অনুমোদন দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এ অবস্থায় রাশিয়া তার ইউরোপীয় ও এশীয় অংশের সঙ্গে বিশ্বকে দ্রুত সংযুক্ত করতে অত্যন্ত আগ্রহী। প্রেসিডেন্ট পুতিন বিআরএফ সম্মেলনে বলেছেন, বর্তমান রাশিয়া ডিজিটাল ও প্রচলিত সিল্ক রোডের মাধ্যমে তার তেল, গ্যাস, রাসায়নিক পদার্থ, সার ও খাদ্যসামগ্রীকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে আগ্রহী। সে কারণেই সম্মেলনে তিনি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়েছেন। কারণ চীন থেকে মধ্য এশিয়ার উজবেকিস্তান ও কাজাখস্তানসহ বিভিন্ন অঞ্চল হয়ে রাশিয়াও পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে আফ্রিকার জিবুতি, ইথিওপিয়া এবং ইরিত্রিয়া পর্যন্ত বিস্তার ঘটেছে প্রস্তাবিত সিল্ক রোডের। চীনের চংকিং নগরী থেকে জার্মানিতে যাচ্ছে চীনের রেল রোড। তার পাশাপাশি জল ও আকাশপথেরও ক্রমে ক্রমে বিস্তার ঘটছে। এ অবস্থায় ফিলিস্তিনের মুক্তি বা স্বাধীনতাকে ঠেকিয়ে রেখে কিংবা বিশ্বকে বিভিন্নভাবে খণ্ডিত বা বিচ্ছিন্ন করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিজেরাই একঘরে হবে। তাতে তাদের প্রস্তাবিত ভারত-মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ পর্যস্ত বিস্তৃত বাণিজ্য করিডর গড়ে তোলার স্বপ্ন প্রায় অধরাই থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বেইজিংয়ে সদ্যঃসমাপ্ত বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামের সম্মেলন, যাতে বিশ্বের প্রায় ১৫০টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা যোগ দিয়েছে, তাতে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। বর্তমান অস্থির বিশ্বে কিছুটা হলেও নতুন আলোর আভা দৃশ্যমান হয়েছে। এ অবস্থায় চীন, রাশিয়াসহ উন্নয়নশীল বিশ্বের অগ্রগতিকে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা না করে বরং বৈশ্বিক মন্দা ও বিশ্ব বাণিজ্যের সংকট উত্তরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা উচিত। নতুবা পরাশক্তিগতভাবে নিজেদের আধিপত্য কিংবা কর্তৃত্ব বজায় রাখার প্রচেষ্টা বিফল মনোরথ হতে বাধ্য।
লেখক: বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক