পত্রিকা প্রতিবেদন ♦
লণ্ডন, ২৫ মার্চ: স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটির প্রবল প্রতিবাদের মুখে রচডেল কাউন্সিল কার্যালয়ের স্বাগতবার্তায় অবশেষে বাংলা যুক্ত করা হয়েছে। অন্যান্য ভাষার সাথে বাংলায় ‘স্বাগতম’ লেখাটিও এখন সেখানে শোভা পাচ্ছে।
জানা গেছে, টাউন হলটিতে স্বাগত বার্তায় আগে বাংলা ছিলো। সম্প্রতি প্রায় ১৬ মিলিয়ন পাউণ্ড ব্যয়ে টাউন হলটি সংস্কার করা হয়। সংস্কারকৃত কার্যালয়ের নতুন বোর্ডে বাংলা বাদ পড়ার বিষয়টি উঠে আসে আইকে টিভির অনুসন্ধানে।
সাংবাদিক ইব্রাহিম খলিল গত বুধবার এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে কমিউনিটিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটির অনেক বাসিন্দা কাউন্সিলে লিখিত প্রতিবাদ, ইমেইল বার্তা এবং ফোন করে তাদের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরপর কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ দ্রুত বোর্ডটি অপসারণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে। কাউন্সিলের ‘চীফ এক্সিকিউটিভ’ স্টিভ রামবিলো লিখিতভাবে দুঃখ প্রকাশ করে বাংলা সংযুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন।
ঘটনা নিয়ে ইব্রাহিম খলিলের প্রতিবেদন প্রকাশের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে ৩ দিনের মধ্যে টাউন হলের স্বাগতবার্তায় বাংলায় ‘স্বাগতম’ সংযুক্ত করায় কাউন্সিলের লিডার নেইল এমুট, চীফ এক্সিকিউটিভ স্টিভ রামবিলো এবং সাবেক মেয়র কাউন্সিলার সৈয়দ আলী আহমদকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশী বাসিন্দারা। তবে তারা বলছেন, এটি আপতকালীন ব্যবস্থা হিশেবে মেনে নেওয়া যায়। এখন বাংলাকে যথাস্থানের মর্যাদা দিয়ে ভালোভাবে এটি সম্পূর্ণ নতুন করে স্থাপন করা দরকার। পাশপাশি তারা চান, বাংলা উধাও হলো কীভাবে অথবা বাদ পড়লো কেনো সেটি তদন্তের জন্য কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিক।
জানা যায়, ১৮৭১ সালে নির্মিত হয়েছিলো রচডেলের নজরকাড়া টাউন হল। তখনকার সময়ে ইংল্যাণ্ডের সবচেয়ে অত্যাধুনিক স্থাপত্যশৈলির মধ্যে অন্যতম ছিলো এটি। এর নির্মাণ ব্যয় হয়েছিলো তৎকালীন সময়ে ১’শ ৫৫ হাজার পাউণ্ড। প্রায় দেড়’শ বছরের পুরনো এই টাউন হলটি সম্প্রতি সংস্কার করা হয়েছে ১৬ মিলিয়ন পাউণ্ডে। সংস্কার শেষে জনসাধারণের জন্য ভবনটি উম্মুক্ত করা হয়েছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ এসে ভবনটি পরিদর্শন করছেন।
উল্লেখ্য, এই টাউন হলটি ব্যাপকভাবে আলোচিত ও পরিচিত ব্রিটেনে এ জন্য যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বের সময় টাউন হলটি দখল করতে চেয়েছিলেন এডলফ হিটলার। কথিত আছে, তিনি এখান থেকে ব্রিটেন শাসন করতে চেয়েছিলেন। গ্রেটার ম্যানচেস্টারের ছোট একটি শহর রচডেল। ৬৫ বছর আগে কটন মিলে কাজের সুবাদে রচডেলে স্থায়ী হয়েছিলেন বাংলাদেশীরা। বর্তমানে প্রায় ১৫ হাজার বাংলাদেশীদের বসবাস এই শহরে। সংখ্যালঘু কমিউনিটি হিশেবে রচডেলে পাকিস্তানীদের পরেই অবস্থান বাংলাদেশীদের। রচডেল কাউন্সিলে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত একমাত্র নির্বাচিত প্রতিনিধি হলেন কাউন্সিলার সৈয়দ আলী আহমদ। তিনি গত মেয়াদে রচডেলের সিভিক মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগেও লেবার পার্টি থেকে কাউন্সিলার নির্বাচিত হয়েছিলেন ফারুক আহমেদ এবং শেফালী আহমেদ।