অভিযুক্ত ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই
নজিরবিহীন যাত্রী হয়রানীর অভিযোগের জের ধরে অবশেষে সংশ্লিষ্ট ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাকে সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে এই বিমান বন্দরে বিভিন্ন বিভাগের কর্মরতদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও সম্প্রতি তা চরমে উঠেছিলো। বাংলাদেশ থেকে বাইরে আসতে বিদেশগামীদের কত রকমের হয়রানীর মুখে যে পড়তে হয় তা একমাত্র ভূক্তভোগীরাই জানেন। কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাজ্যগামী যাত্রীদের বৈধ ভিসা থাকার পরও দাবীকৃত ‘ঘুষ না পাওয়ায়’ ভ্রমণ আটকে দেয়া এবং ভিসা বাতিল করে দেয়ার মত গুরুতর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নির্বিচারে চালিয়ে আসার ঘটনা সত্যিকার অর্থেই নজীরবিহীন। ওসমানী বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশনে কর্মরত পুলিশের ওই সাব ইন্সপেক্টরকে সিলেট থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে এল আমরা জেনেছি।
নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, একাধিক গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহের সোমবার এসআই হাসানকে জরুরীভিত্তিতে সিলেটে থেকে ঢাকায় স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদর দফতরে ডেকে নিয়ে কয়েক ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরদিনই তাকে বিমানবন্দরের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অধীনে ওসমানী বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনে কর্মরত সাব ইন্সপেক্টর হাসান নামের ওই কর্মকর্তা গত তিন মাসে অন্তত ১০ জন বৈধ বিদেশযাত্রীকে আটকে দিয়েছেন। যাত্রীদের অভিযোগ, ঘুষ না দেয়ার কারণে ওই কর্মকর্তা চরম অমানবিক আচরণ করেছেন। তাদের বিদেশ যাওয়া আটকে দিয়েছেন।
একজন দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তার কারণে এভাবেই শেষ হয়ে যায় এদের যুক্তরাজ্য আসার স্বপ্ন। কতটুকু বেপরোয়া এবং নিষ্ঠুর হলে এমন কাণ্ড জনগণের অর্থে পালিত একজন দায়িত্বশীল করতে পারেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সিলেট ইমিগ্রেশন থেকে যাত্রীদের ভিসার ব্যাপারে আপত্তিটি ইমেইলে ইউকেবিএ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ফলে লণ্ডন এসেও বিমানবন্দরে আটক থাকতে হয়েছে একজন যাত্রীকে এবং দুদিন পর তাকে ফিরে যেতে হয়েছে বাংলাদেশে।
এর মধ্যদিয়ে যাত্রীদের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি আর মানসিক যন্ত্রণা পোহানোই শুধু নয়, বিদেশের একাধিক কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশের সরকারী কর্মকর্তাদের অসততাও একেবারে আনুষ্ঠানিকভাবে দলিল হয়ে রইলো। এখন ভূক্তভোগীরা এসব ঘটনা চ্যালেঞ্জ করলে আসল ঘটনা বেরিয়ে এলে বাংলাদেশের ‘ভাবমূর্তি’ কোথায় দাঁড়াবে সবচেয়ে, হাস্যকর বিষয়টি হচ্ছে- দূর্নীতিবাজরা যখন সাধারণ মানুষকে জালিয়অতির জন্য অভিযুক্ত করে।
আমরা দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তার শুধু প্রত্যাহারে মোটেও সন্তুষ্ট নই। তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হোক। সিলেটসহ সকল বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানী বন্ধ করতে হলে এর বিকল্প নেই।