কেউ কি শুভাকাঙক্ষী নেই এই বড় সংগঠনের?
প্রায় তিন দশক আগে গড়ে ওঠা ব্রিটেনে বাংলাদেশী কমিউনিটির অন্যতম বৃহৎ সংগঠন গ্রেটার সিলেট কাউন্সিল বড় এক সঙ্কটকাল অতিক্রম করছে। সংশ্লিষ্টদের দাবী অনুযায়ী, প্রায় দশ হাজার সদস্যসমৃদ্ধ এই সংগঠনের নেতৃত্বের বিরোধিতা এখন এদেশের মূলধারার আইন-আদালতের দুয়ার পর্যন্ত পৌছে যেতে চলেছে।
দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক অনিয়ম, সংবিধান লঙ্ঘন, আর্থিক হিসাবে নানা গুরুতর অসঙ্গতি আর অন্যায্য নির্বাচনী প্রক্রিয়া অনুসরণ নিয়ে অভিযোগের নানা কাহিনী এখন কমিউনিটিতে ডালপালা মেলছে।
সংগঠনের আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সেসব অসঙ্গতি আর অভিযোগ উঠেছে সেসবের সমাধান না করে দায়িত্বশীলদের এক তরফা সিদ্ধান্ত সংগঠনের জন্য কল্যাণ নিয়ে আসবে না। এই বোধটুকু অন্তত দায়িত্বশীলদের কাছে আমরা আশা করতে পারি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, নিজের এনইসির নিয়োগকৃত আর্বিট্রেটারদের পরামর্শ অগ্রাহ্য করে সঙ্কটকে আরো ঘনীভূত করা হচ্ছে।
অথচ আমরা জানি, সংগঠন কর্তৃক নিয়োজিত প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ দুইজন কমিশনার ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য সংগঠনের দুইজন এনইসি কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যাট্রন বিভিন্ন সাংগঠনিক ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখে সবকিছু ঠিকঠাক করে নির্বাচন আয়োজনের সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন ইতোমধ্যে কমিটিসহ সংশ্লিষ্টদের দিয়েছেন। সেটিও বর্তমান দায়িত্বশীলরা অগ্রাহ্য করে চলেছেন। কেনো?
কোনো নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার যখন পদত্যাগ করেন তখনই সাধারণ বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ সেই নির্বাচন সম্পর্কে একটি স্পষ্ট বার্তা পায়। এখন দেখা যাচ্ছে, বর্তমান দায়িত্বশীলদের কাছে সবই তুচ্ছ। নিজের সংগঠনের একাংশের এতেদিনের অভিযোগ তো তারা উড়িয়ে দিয়েছেন। পদত্যাগী নির্বাচন কমিশনারবৃন্দের উদ্বেগও তারা ধর্তব্যে নিলেন না। এখন নিজের সংগঠনের পেট্রনদের তদন্তে প্রাপ্ত নানা অসঙ্গতিও মানতে নারাজ। উল্টো তাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলছেন। তাহলে তারা কাদের নিয়ে সংগঠন করতে চান, আর কোন কমিউনিটির সেবা করতে চান?
আমরা মনে করি, এ পর্যন্ত যা হবার হয়েছে। পেট্রনরা এই সংগঠনের অভিভাবক। তারা সংগঠনের ক্ষতি হোক তা নিশ্চয়ই চাইবেন না। তাই বর্তমান দায়িত্বশীলদের কাছে আমাদের আহবান, পেট্রনদের কথাকে গুরুত্ব দিয়ে সুন্দর ও সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ নিয়ে ঐতিহ্যবাহী সংগঠনকে চরম বিশৃঙ্খলতা থেকে রক্ষা করুন। বিষয়টি আইনি চ্যালেঞ্জে গেলে এই লড়াইয়ের পরিণতি জিএসসির জন্য শুভ হবে না, দায়িত্বশীলদের জন্যও হবে না। আর আদালতে যখন পরস্পরের কাদা ছোড়াছুড়িতে সবাই কাদামাখা হবেন তখন তা কমিউনিটির জন্য লজ্জাই বয়ে আনবে। মূলধারায় আমাদের সম্মান ক্ষুণ্ণ হবে।
আমরা মনে করি, যারা স্বনামধন্য এই সংগঠনের নেতৃত্ব দিতে চান, তাদের উচিত হবে না কোনো প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করা। এই বড় সংগঠনের এবং বড় দায়িত্বশীলদের নিশ্চয় কোনো না কোনো শুভাকাঙক্ষী আছেন। আমরা আহবান জানাই, কোনো শুভাকাঙক্ষী যেনো একটু দায়িত্ব নিয়ে এই বিষয়টি সংগঠনের দায়িত্বশীলদের বোঝান যাতে তারা এই সংগঠনকে সমূহ ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় শেষ মূহূর্তে হলেও এগিয়ে আসেন।