পত্রিকা ডেস্ক ♦
লণ্ডন, ০১ মে: অভিবাসন আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে এবার ডেলিভারি ড্রাইভারদের টার্গেট করেছে হোম অফিস। পরিকল্পিত এক সপ্তাহের অভিযানে লণ্ডনের বিভিন্ন স্থান থেকে ৬০ জন ডেভিভারি ড্রাইভারকে আটক করা হয়েছে। অভিবাসনের শর্ত অমান্য করে অবৈধ উপায়ে ডেলিভারি ড্রাইভার হিসেবে কাজ করছিলেন তাঁরা। গত সপ্তাহে এসব তথ্য প্রকাশ করে হোম অফিস। ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার এবং অবৈধভাবে কাজ করার দায়ে তাদের আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা ব্রাজিলিয়ান, ভারতীয় এবং আলজেরিয়ান নাগরিক। হোম অফিস জানিয়েছে, গত ১৬ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ডেভিলারি ড্রাইভারদের টার্গেট করে অভিযান চালানো হয়। লণ্ডনের যেসব স্থান ডেলিভারি ড্রাইভার হট স্পট বা কেন্দ্র বলে বিবেচিত- সেসব স্থানে পরিকল্পনা করে অভিযান চালানো হয়। এ অভিযানের প্রস্তুতি হিসেবে হোম অফিস দীর্ঘদিন যাবত গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেছে বলে জানায়। অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় আটককৃতদের মধ্যে ৪৪ জনকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে হোম অফিস। বাকী ১৬ জনকে শর্ত সাপেক্ষে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়েছে। হোম অফিস জানিয়েছে, আটককৃতদের মধ্যে কারো কারো বাসায় তল্লাশি চালিয়ে নগদ অর্থ, নকল আগ্নেয়াস্ত্র ও অন্যান্য অস্ত্র পাওয়া গেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও জড়িত থাকতে পারেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। প্রসিডস অব ক্রাইম অ্যাক্টের আওতায় অভিযানে জব্দকৃত নগদ অর্থের পরিমাণ ৪ হাজার ৫শ পাউণ্ড।
আটককৃত ব্যক্তিরা জনপ্রিয় ডেলিভারি সেবা উবার ইটস, জাস্ট ইট ও ডেলিভারুসহ বিভিন্ন কোম্পানির খাবার ডেলিভারি দেয়ার কাজ করছিলেন। তারা বাইসাইকেল, ইলেকট্রনিক বাইট, মটর বাইক কিংবা মপেড দিয়ে খাবার সরবরাহের কাজ করতেন। হোম অফিসের মূখপাত্র বলেন, গিগ ইকোনোমি বা প্রযুক্তি নির্ভর ডেলিভারি সেবা চালু হওয়ার কারণে যুক্তরাজ্যে অবৈধ উপায়ে কাজের প্রবণতা বেড়ে গেছে। একজনের নামে নিবন্ধিত ডেলিভারি অ্যাপ দিয়ে অন্যজন অবৈধভাবে কাজ করছে। নগদ অর্থের বিনিময়ে কাজের প্রবণতাও বেড়েছে। প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যে পড়তে আসা বিদেশি শিক্ষার্থীরা আয়ের সহজ উপায় হিসেবে এখন ডেলিভারি ড্রাইভার হিসেবে কাজ করাকে বেছে নেন। তাদের সপ্তাহে মাত্র ২০ ঘন্টা কাজ করার অনুমতি আছে। অনেকেই নিয়ম অমান্য করে সপ্তাহে ২০ ঘন্টার বেশি কাজ করেন বাড়তি আয়ের আশায়। কেউ কেউ অন্যের অ্যাপ ভাড়া নিয়ে ডেলিভারি ড্রাইভার হিসেবে কাজ করেন- যা সম্পূর্ণ অবৈধ। একজনের অ্যাপ দিয়ে অন্যজন কাজ করার সুযোগ রাখেনি ডেলিভারি কোম্পানিগুলো। কিন্তু তা সত্তে¡ও নানা উপায়ে একজনের অ্যাপ দিয়ে অন্যজন কাজ করার ঘটনা ঘটছে। শুধু শিক্ষার্থীরা নন, বেনিফিটে আছেন এমন ব্যক্তিরাও অন্যোর অ্যাপ ভাড়া নিয়ে কাজ করছেন, যা কর্তৃপক্ষের কাছে অজানা থেকে যাচ্ছে। এতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সরকারের কাজ থেকে পুরো বেনিফিটও নিচ্ছেন আবার লুকিয়ে বাড়তি আয়ও করছেন। হোম অফিস আশা করছে, এইভাবে অভিযান চলবে।