দীর্ঘ এক মাস রমজানের সংযম সাধনার পর পবিত্র ঈদুল ফিতর সমাগত। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী শুক্র কিংবা শনিবার ব্রিটেনের মুসলমানরা পালন করবেন এই মহাআনন্দের উৎসব। আত্মশুদ্ধির মাস রমজান ছিলো মুসলমানদের জন্য ছিলো রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস। মহিমান্বিত এ মাসে আল্লাহর সস্তুষ্টির জন্য তাঁরা সংযম সাধনা করেছেন। শারীরিক এই সংযমের পাশাপাশি নানা ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে মহান আল্লাহর দরবারে পাপমুক্তির সাধনাই ছিলো এ মাসের মূল লক্ষ্য। আর পবিত্র রামাদ্বানে মনোদৈহিক এই সাধনার মধ্যদিয়েই মুসলিম নর-নারী মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করেন। আর মহান আল্লাহ তার সেই সকল প্রিয় বান্দাদের সিয়ামের প্রতিদান হিশেবে উপহার দিয়েছেন পবিত্র ঈদুল ফিতরÐ মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় আনন্দ উৎসব। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা এই প্রভ‚ত আনন্দের দিনে নিজেদের কতোখানি অন্যের প্রতি নিবেদিত করতে পারি। এবারও এমন এক সময়ে আমরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করছি, পৃথিবীর অনেক দেশ যখন চরম অস্থিতিশীল। নিরাপদ জীবন আর নিশ্চিত জীবিকার খোঁজে বেরিয়ে শত শত মানুষের জীবন শেষ হচ্ছে সাগরে। যুদ্ধ-বিগ্রহবিধ্বস্ত দেশগুলোর মিলিয়ন মিলিয়ন স্বজনহারা, গৃহহারা। মানুষের উদ্বাস্তু শিবিরে কাটছে মানবেতর জীবন। স্বজন হারিয়ে তাদের জীবনে ঈদের খুশি কেমন হবে আমরা জানি না। তবে আমরা সবাই জানি সেখানে আছে মানুষের গগনবিদারী কান্না। তাই আমরা মনে করি, অন্যের এই দুঃসময়েও আমরা যারা অপেক্ষাকৃত ভালো পরিস্থিতিতে রয়েছি তাদের এবার একটু বেশি করেই বিপর্যস্ত মানুষের পাশে সাধ্যানুযায়ী দাঁড়ানো উচিৎ। এমনিতেই রমজানে ফিতরা ও জাকাত আদায়ের যে বিধান রয়েছে তার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে অপেক্ষাকৃত দরিদ্রদের সহায়তা দিয়ে তাদেরকে ঈদের আনন্দে শরীক করা। এই দায়িত্ব যথাযথভাবে আদায় না হলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদত্ত শিক্ষা তা-ই বলে। বিত্তবানরা তাদের নিজেদের সম্পদ দিয়ে নিজেদের জন্য আনন্দ উপভোগের ব্যবস্থার পাশাপাশি সমাজের বঞ্চিতরা যাতে এমন উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পারেন সেজন্য তাদেরকে অর্থনৈতিকভাবে প্রয়োজন পূরণের মত সুবিধা করে দিতে মহান আল্লাহতায়ালা সামর্থবানদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন। দরিদ্র মানুষের সুখ-সুবিধার যেন কমতি না হয় সেদিকটি নিশ্চিত করতে ঈদের দিনের সকাল বা তার আগে সামর্থবানদের অর্থসম্পদের নির্দিষ্ট অংশ দান করার বিধানই হচ্ছে সদকায়ে ফিতর। মানবতার কল্যাণে আমাদের উদার হস্ত প্রসারিত হলেই সংযম সাধনার শিক্ষা কাজে লাগবে। আর এবারের ঈদে সেই সৌভ্রাতৃত্ববোধের চর্চা আরো বেশি জরুরী। মানুষের প্রতি মানুষের প্রেম ও ভালোবাসার বিকল্প নেই। পবিত্র ঈদুল ফিতর আমাদেরকে সেই শিক্ষায় আরো বেশি উজ্জীবিত করুক। আসুন, বিপন্ন এই সময়ে আমরা হাত বাড়িয়ে অন্যের কাছে পৌঁছে দেই একমুঠো ঈদ-আনন্দ। এর মাধ্যমে দূরে থেকেও যেনো আমরা সহায়তা নিয়ে আন্তরিকভাবে পৌঁছে যাই মানুষের অন্তরে। রমজান মাসের আত্মশুদ্ধির চর্চা আমাদের আরো বেশী মানবিক করে তুলুক, কল্যাণময় বৃহত্তর সমাজ গড়ায় আরো বেশী উজ্জীবিত ও সফল করে তুলুক। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। সবাইকে ঈদ মোবারক।
বর্ণবাদী ইডিএলকে রুখতে হবে
ব্রিটেনজুড়ে বর্ণবাদী ইডিএল-এর চলমান তাণ্ডব রুখতে লণ্ডনের শান্তিপ্রিয় মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গত সপ্তাহে সাউথপোর্টে তিন শিশু মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুসলমানদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং রাস্তায় পথচারীদের...